নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ির বৈশ্যপাড়ার জোড়া মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার চারদিন পর শুক্রবার অকুস্থলে এল ফরেন্সিক টিম। ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু তথ্য সংগ্রহ করেন টিমের সদস্যরা। একঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাঁরা ওই বাড়ির ঘর, শৌচাগার সহ একাধিক জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। বিছানার চাদর, সাদা রঙের একটি টি-শার্ট সহ আরও কিছু জিনিসপত্র তদন্তকারী টিম সঙ্গে নিয়ে যায়। একটি কুড়ুলও নিয়ে যান তাঁরা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ির রিজিওনাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে টিমটি এসেছিল। উল্লেখ্য, সোমবার বৈশ্যপাড়ায় বিজয়কুমার বৈশ্য নামে এক বৃদ্ধের মৃতদেহ তাঁর বাড়ির আলমারিতে কম্বল দিয়ে জড়ানো অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল। পুলিস তদন্তে এসে ওই বাড়িরই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মৃত বৃদ্ধের ভাগ্নে প্রৌঢ় গোপাল রায়ের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। গোপালবাবু ওই বাড়িতেই থাকতেন। গ্রামবাসীদের কথায় দেড় মাস ধরে ওই প্রৌঢ় নিখোঁজ ছিলেন। ঘটনার পর থেকেই বিজয়বাবুর ছেলে প্রণবের খোঁজ নেই। এই বাড়িতেই গত তিনমাসের মধ্যে বিজয়বাবুর স্ত্রী ও বোন অর্থাৎ প্রণবের মা ও পিসিরও মৃত্যু হয়েছিল। এদিকে, প্রণবের খোঁজ এখনও মেলেনি। পুলিস তার সন্ধান পাচ্ছে না। তার মোবাইল ফোনটিও স্যুইচ অফ। পুলিস ওই যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের উপর নজর রাখছে।
এদিকে, এলাকায় জোড়া দেহ উদ্ধারের ঘটনার পর থেকেই চাপা আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। একই বাড়ি থেকে দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় তাঁরাও স্তম্ভিত। ওই বাড়ির ছেলের খোঁজ নেই। অভিশপ্ত বাড়িটি ফাঁকা পড়ে আছে এখন। বাড়ির গোরুগুলি অন্য একজনের বাড়িতে রেখে দেওয়া হয়েছে। এদিন ঘটনাস্থলে এল ফরেন্সিক টিম। বাড়ির ঘরগুলি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন তাঁরা। সেখান থেকে বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করেন নিয়ে যায় টিম।
ওই টিমে থাকা রিজিওনাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির পক্ষে মৌসুমি রক্ষিত বলেন, আমরা কিছু বায়োলজিক্যাল স্যাম্পল পেয়েছি। সেগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে। এখানে দু’টি খুন হয়েছে। তারই তদন্ত চলছে। আমরা যে প্রমাণগুলি পেয়েছি সেটা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর রিপোর্ট দেওয়া হবে।
ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক টিমের সদস্যরা। - নিজস্ব চিত্র