কর্মপ্রার্থীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। নিকটস্থানীয় কারও প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। পুরোনো কোনও বন্ধুর ... বিশদ
পুরোহিত সুবীর চক্রবর্তীর কথাই ধরা যাক। শ্মশানে দাহকাজ শুরুর আগে তিনি একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দিকে। পাটকাঠি, ঘি, তুলসীপাতা, সাদা কাপড়, ধূপকাঠি, মাটির পাত্র ইত্যাদি রয়েছে কিনা। সব কিছু গুছিয়ে রাখার পর পকেট থেকে বের করলেন ছোট্ট একটা শিশি। যাতে রয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। হাতের তালুতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ভালো করে মেখে নিয়ে মৃতের পরিজনদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি তৈরি। কাজটা তাহলে শুরু করা যাক।’ জানা গেল, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা শুরু করেছেন পুরোহিতরা। ৪৬ বছরের সুবীর জানালেন, ‘শ্মশানে আমার রোজ ছ’টা থেকে আটটা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল লাগে। এমন অনেক মৃতদেহ আসে, যেগুলির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির চোখের উপর তুলসীপাতা দিতে হয়। সংক্রমণের শঙ্কা থেকেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হয়।’ কিন্তু, চাহিদা বাড়তেই স্থানীয় বাজার থেকে উধাও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। তাহলে উপায়? সুবীর জানালেন, ‘ইন্টারনেট ঘেঁটে বাড়িতে বসেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানোর পদ্ধতি শিখে নিয়েছি। সুবীর চক্রবর্তী ছাড়াও এই শ্মশানে আরও দু’জন পুরোহিত রয়েছেন। তাঁরাও একইভাবে ঘরে তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব সম্প্রতি স্বীকার করে নিয়েছেন, বাজারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের অভাব রয়েছে। তাই তিনি পরামর্শ দিয়েছেন গামছায় মুখ ঢেকে চলাফেরা করতে। মঙ্গলবার ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশনের অফিসার গৌতম চক্রবর্তীর বাবা মারা যান। তিনি জানালেন, ‘বাবার মৃত্যু সংবাদ দেওয়ার পর আত্মীয়, বন্ধুদের অনুরোধ করেছিলাম শ্মশানে না আসতে। তারপরও ১৩ জন শ্মশানে এসেছিলেন।’ তবে শুধু হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা মাস্কই নয়, দেশজুড়ে লকডাউনের জেরে শেষকৃত্যের জন্য প্রয়োজন ঘি, চন্দনকাঠের ভাঁড়ারেও টান পড়েছে। শ্মশানে এই সামগ্রীগুলির বিক্রেতা কমল দাস জানালেন, ‘যা স্টক রয়েছে, তাতে বড়জোড় এক বা দু’দিন চলবে। তারপর কী হবে, তা জানি না।’