দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
আজ অর্থমন্ত্রক থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কোর সেক্টরের বৃদ্ধিহার মাইনাস ৫.৮ শতাংশ। অর্থাৎ তা প্রায় মাইনাস ৬ শতাংশ স্পর্শ করতে চলেছে। যেখান থেকে ফিরে আসা নিঃসন্দেহে দুঃসাধ্য। অর্থনীতির ইঞ্জিন হিসেবে বিবেচিত উৎপাদন, নির্মাণ এবং বিদ্যুৎ, এই তিনটি ক্ষেত্রই কার্যত ডুবতে বসেছে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সব থেকে উদ্বেগজনক হল, বিদ্যুৎক্ষেত্রের বৃদ্ধিহার কমে হয়েছে ৩.৬ শতাংশ। অর্থাৎ শিল্পোৎপাদনের চিত্রটি এতই হতাশাজনক যে, দেশে শিল্পক্ষেত্রে বিদ্যুতের চাহিদা বিপুলভাবে কমে গিয়েছে। কারণ, উৎপাদন ক্ষেত্রের বৃদ্ধিহার মাইনাস ১ শতাংশ। একদিকে পেঁয়াজ, টমেটো সহ তাবৎ সব্জির বাজার দরে সাধারণ মানুষের খাদ্যপণ্যের বাজেটে আগুন লেগেছে। আর অন্যদিকে কর্মসংস্থানের সঙ্কট ক্রমবর্ধমান। বিগত ৪৫ বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার এখন সর্বাধিক। অসময়ের বৃষ্টি সম্প্রতি কৃষকদের সঙ্কটকে চরমে তুলেছে।
আর এসবের মধ্যেই আজ জিডিপি বৃদ্ধিহারের এই অপ্রত্যাশিত পরিসংখ্যান মোদি সরকারকে বড়সড় সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারণ, এটা প্রমাণিত হচ্ছে সরকার যতই নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা করুক, কোনও লাভই হচ্ছে না। অর্থনীতির নিম্নগতিকে রোধ করা যাচ্ছে না। এই তথ্য প্রকাশের পরই আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং বলেছেন, এই জিডিপির হার অবিশ্বাস্য! তিনি সতর্ক করে বলেছেন, বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির আবহে ভারতের মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধি হারকে এক কথায় বলা যায়, বিপর্যয়েরই হাতছানি। দেশের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক এক বার্তা নিয়ে আসছে এই হার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছেন। আজ মনমোহন সিং বলেছেন, আর্থিক হাল নিয়ে যে ভয়ঙ্কর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেই প্রবণতা চলতে থাকলে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি নিছক স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে।
কার্যত রাজনীতি থেকে অর্থনীতি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় মোদি সরকার কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। অর্থনীতির সঙ্কট কাটাতে প্রধানত কর্পোরেট মহল তথা দেশি বিদেশি শিল্পসংস্থাকে লগ্নিতে আগ্রহী করতে মোদি সরকার অসংখ্য ছাড় ও সুসংবাদ দিয়েই চলেছে। কিন্তু অর্থনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ হল, গ্রাম ও শহরের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এবং ক্রয়ের প্রবণতা দুই উদ্বেগজনক ভাবে কমে গিয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতির ক্রয় প্রবণতা তলানিতে। এই কারণে ধুঁকছে তাবৎ শিল্প। বস্তুত এতদিন মনে করা হচ্ছিল অর্থনীতি গুরুতর অসুস্থ। আর আজ সাড়ে ৪ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধিহার রেড অ্যালার্ট দিয়ে জানিয়েছে, অর্থনীতি আইসিউতে! ছবি: পিটিআই