পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা। প্রতিকার: একটি ... বিশদ
লোকসভা ভোটে বিহারের বেগুসরাইয়ে সিপিআই প্রার্থী ছিলেন কানহাইয়া। ‘ক্রাউড ফান্ডিং’-এর মাধ্যমে ৩১ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। সময় লেগেছিল মাত্র দু’দিন। দেশের ২ হাজার ৪০০ জন নাগরিক এই অর্থ দিয়েছিলেন তাঁকে। এক সময় কৌটো নাড়িয়ে অর্থসংগ্রহ করতেন সর্বহারা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা-কর্মীরা। দীর্ঘ ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকে সেই ট্র্যাডিশন ভুলতে বসেছিলেন তাঁরা। এখন দিনকাল বদলেছে। খরচ বেড়েছে নির্বাচনী প্রচারের। কৌটোর টাকায় সেই ব্যয় সামলানো বড্ড কঠিন। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের অর্থসঙ্কটও উত্তরোত্তর বেড়েছে। ফলে তৃণমূল-বিজেপির সঙ্গে প্রচারে এঁটে উঠতে গিয়ে হিমসিম অবস্থা বাম নেতৃত্বের। পরিস্থিতি সামলাতে ‘ক্রাউড ফান্ডিং’য়ে নেমেছেন মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়, ঐশী ঘোষে, দীপ্সিতা ধরের মতো তরুণ প্রজন্ম। সাহায্য চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানিয়েছেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ নেতাও।
রাজ্যে এবার সবচেয়ে হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে প্রার্থী মীনাক্ষি। ‘অভাবের সংসার’-এ খুব হিসেব কষে চলছেন তিনি। নিতান্ত সাদামাটা প্রচার। মানুষের মাঝে মধ্যাহ্নভোজ। হেঁটেই নন্দীগ্রামের পাড়া-পথ ভাঙছেন। দলের সাবেক কায়দায় নির্বাচনী তহবিল কিছুটা হলেও জোগাড় করছেন। সেই সঙ্গে ১৮ মার্চ ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর সহ একটি পোস্টকার্ড স্যোশাল দুনিয়ায় পোস্ট করা হয়। টাকা ট্রান্সফার নিয়ে অনেকের সমস্যা হচ্ছিল। তাই ফোন-পে বা গুগল-পে সহ নতুন পোস্টকার্ড প্রকাশ করা হয়। শুরুর দিন থেকে বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছেন মীনাক্ষি। কেউ দিচ্ছেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। কেউ আবার হাজার টাকা। বালির সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা বলছিলেন, ‘কর্পোরেটের ফান্ড চাইছি না। কারণ আমরা কর্পোরেটের স্বার্থরক্ষা করতে যাব না!’ যাঁরা বিশ্বাস করেন, মানুষের কাজ করার জন্য একটা সরকার হওয়া উচিত, তাঁদের কাছে আবেদন করছি।’
আর কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়? একদা রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী ছিলেন তিনি। তাতে অবশ্য দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে তাঁর সমস্যা হয়নি। কাকদ্বীপ হোক কিংবা সাগর-পাথরপ্রতিমা—সুন্দরবনের সব সমস্যায় হাজির সবার ‘কান্তিদা’। উমপুনের পূর্বাভাস পেয়ে কলকাতা থেকে লরি বোঝাই করে চাল, ডাল, ত্রিপল, কেরোসিন, তেল নিয়ে গিয়ে রায়দিঘির কুমড়োপাড়ার বাড়িতে মজুত করেছিলেন। পরে সেগুলি নিজের খরচে বণ্টন করেন প্রত্যন্ত দ্বীপগুলিতে। রায়দিঘি কেন্দ্রে আবারও তাঁকেই প্রার্থী করেছে দল। কান্তিবাবু বলছিলেন, ‘জীবনে কোনওদিন লড়াই থেকে পিছিয়ে আসিনি। রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস আমার। কিন্তু এবারের লড়াইটা শুধু রাজনীতির নয়। টাকার থলির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে।’
করোনা...লকডাউনের পর উমপুনের ধাক্কা। সুন্দরবনের মানুষের পাশে দাঁড়াতে সর্বস্ব খরচ করেছেন। এখন ভোটের খরচ সামলাতে সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন কান্তিবাবু। ফেসবুকে সেই আবেদন পোস্টও করেছেন। ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ই তাঁর ভরসা। সব মিলিয়ে ভোটের রণভূমিতে এ বার নানা নয়া আধুনিক নতুন কৌশল আমদানি করেছে বঙ্গ সিপিএম। সেই কৌশলের অন্যতম অবশ্যই বুদ্ধিদীপ্ত ‘তরুণ ব্রিগেড’। যাঁদের হাতে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন প্রবীণ বামেরা।