পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা। প্রতিকার: একটি ... বিশদ
ভোটপ্রার্থীর নাম সুজন চক্রবর্তী। যাদবপুর কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা তথা সিপিএমের হয়ে এবারেও দাঁড়িয়েছেন সুজন। আর ‘বিরোধী’ শিবিরের লোক বলে পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি হলেন হালতুর পূর্বাচল তল্লাটের মোহনের ব্রিজ এলাকার সেন্টু বারুই। মঙ্গলবার সকালে সুজনের প্রচার পর্বেই ধরা পড়ল এই বিরল দৃশ্য। একদা সিপিএম কর্মী সেন্টু তৃণমূল ঘুরে বর্তমানে বিজেপি শিবিরের পরিচিত মুখ। স্বয়ং দিলীপ ঘোষের হাত থেকে পতাকা নিয়ে পদ্মশিবিরে যোগ দিয়েছিলেন বছরখানেক আগে। এহেন ‘দলবদলু’ সেন্টুর আপন ভাগ্নে তরতাজা তরুণ সুরজিৎ দাস কিন্তু মামার মতো শিবির বদল করেননি। পেশাদার কোরিওগ্রাফার সুরজিৎ এদিনও তাই সুজনের সঙ্গেই লালঝাণ্ডা ধরে এলাকা ঘুরেছেন। মামার তরফে প্রস্তাব এলেও লালপার্টি ছেড়ে যাওয়ার পথে হাঁটেনি সুরজিৎ। সুজন-সেন্টুর মুখোমুখির দৃশ্য তাকেও বেশ চমকে দিয়েছে এদিন। মামার ‘শরীরী ভাষা’ পড়ে খানিকটা অবাক হওয়ার সঙ্গে উৎসাহিতও হয়েছে বছর পঁচিশের এই যুবক।
প্রার্থী হিসেবে ভোটার ভগবানদের দরজায় যাওয়া ইদানীং একপ্রকার দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই ফর্মুলা মেনে হালতু তল্লাটে বেরিয়েছিলেন সুজন এদিন। লোকসভা ভোটের নিরিখে ১৪ হাজার ভোটে পিছিয়ে থেকে এবারের লড়াই আরম্ভ করেছেন। তাই এবার দারুণ গরম উপেক্ষা করে বাড়তি পরিশ্রম করতে হচ্ছে তাঁকে। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ পাগলির মাঠে প্রথম জমায়েত। তারপর শুরু পরিক্রমা। তল্লাটের বাসিন্দা উচ্চ মধ্যবিত্তদের পাশাপাশি নিম্নবিত্ত—সব ধরনের মানুষের সঙ্গে তাঁর পূর্ব জনসংযোগ বজায় রাখার ফল পাওয়ার নমুনাও বারবার ধরা পড়ল এদিনের প্রচার পর্বে। অশীতিপর বঙ্কু ভৌমিক যেমন আবেগ সামলাতে না পেরে হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন প্রার্থীকে জড়িয়ে ধরে। এই প্রবীণ মানুষটির চাহিদা একটাই—মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে তিনি দেখতে চান তাঁর এই প্রিয় নেতাকে। আবার পূর্বাচল দক্ষিণে গিয়েও দেখা গেল ব্যতিক্রমী ছবি। সদ্য স্নাতক হয়েছেন বছর বাইশের দেবরাজ। চুলের ছাঁটে আধুনিকতার ছাপ স্পষ্ট। কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এদিন সুজনকে দেখে দেবরাজও আবেগ সামলাতে পারেননি। এবার আর ভুল করবেন না বলে মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কথা দিলেন ‘দাদা’কে। হালতুর লালবাহাদুর শাস্ত্রী রোড ও পূর্বাচল রোডের দু’ধার জুড়ে এদিন অন্তত হাজারখানেক পরিবারের কাছে পৌঁছে যান সুজন। কোথাও তাঁকে এলাকার নিকাশি সমস্যার অনুযোগ শুনতে হয়েছে। কোথাও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি বা উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাস না-পাওয়ার জন্য প্রতিকারের আশ্বাস দিতে হয়েছে তাঁকে গরিব বিধবাকে। এমনকী, আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ’কে জোটসঙ্গী করার পাশাপাশি ত্রিশঙ্কু ফলের পর তাঁদের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে গুচ্ছ প্রশ্নের উত্তরও দিতে হয়েছে এদিন তাঁকে। তবে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদের অভিজ্ঞতায় সুজন সবকিছুই সামলেছেন সাবলীলভাবে।