পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা। প্রতিকার: একটি ... বিশদ
দিনভর ম্যারাথন প্রচারে মাইলের পর মাইল হাঁটছেন তৃণমূল প্রার্থী। রাতেও ক্লান্তিহীন ষাটোর্ধ্ব ‘যুবক’। ডিনার সেরেই পায়ে চটি গলিয়ে বেরিয়ে পড়লেন পাড়ায়। তবে এত পরিশ্রম শুধু ভোটের প্রচারের জন্য নয়। সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে বেরিয়েছেন বলেই দাবি করেন তিনি। পতাকা ও প্রচারের ফ্লেক্স ছাড়াই দু’-একজন সহকর্মীকে নিয়ে হাঁটা দিলেন। ভোটের সময় যাতে বাইরের কেউ গণ্ডগোল না করে, সে ব্যাপারে পাহারাদারের মতোই সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন। পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন। মন্ত্রীর আশ্বাসে
আপ্লুত বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা তপন ধাড়া বলেন, করোনার সময়ও উনি রাতের বেলায় এভাবে আসতেন। আমাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলি শুনতেন। নিজের শরীরের পরোয়া না করেই আমাদের কথা ভাবেন। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না!
তবে, জনসংযোগের নতুন এই অভ্যাসে নিজেকে বেশ মানিয়ে নিয়েছেন সাতবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করা এই প্রবীণ নেতা। গভীর রাতে পাড়ায় টহল দেওয়ার সময় বাড়ির কর্তাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে তাঁর। তাঁদের বলছেন, আপনারা কাজের মানুষ। দিনেরবেলায় ব্যস্ত থাকেন। আমি যখন প্রচারে আসি, সবসময় তো দেখা হয় না। এলাকায় বাইরের কোনও লোক ঢুকছে কি না নজর রাখুন। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে রাত সাড়ে ১২টা হয়ে গেল। ফিরে এলেন মন্ত্রী। তবে বাড়িতে নয়, হেমাতপুর মোড়ে দলের পার্টিঅফিসে। জানা গেল, সেখানেই বেশিরভাগ দিন রাত্রিবাস করেন তিনি।
পূর্বস্থলীর ছোট্ট গ্রাম হেমাতপুর। পাশেই চকরাহাতপুর। সেখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে বাঁশদহ বিল। সূর্যোদয়ের সময় বিশালাকার বিলের শোভা দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। বিলের পাড়ে ঝাঁ চকচকে কংক্রিটের রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় যতদূর চোখ যায়, শুধুই সব্জির খেত। ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়ায় হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ল তুলসীডাঙার চায়ের দোকানে বেশ ভিড়। কিছুটা এগিয়ে যেতেই দেখা গেল সকালের গল্প ও আড্ডায় আসর জমিয়েছেন মন্ত্রী। মাটির ভাঁড়ে চায়ে চুমুক দিয়ে গীতা, কোরান ও বাইবেল নিয়ে আধ্যাত্মিক আলোচনায় মত্ত তিনি। চা খাওয়া শেষ করেই সাইকেলের সামনে ও পিছনে দলীয় পতাকা বেঁধে প্রচারে বেরলেন স্বপনবাবু। তুলসীডাঙার শীতলপাড়ায় সাইকেলে সওয়ার মন্ত্রীকে দেখেই বাসিন্দারা বেরিয়ে এলেন। একটি বড় গাছের নীচে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প ও ইস্তাহারে থাকা সুবিধাগুলি তাঁদের বোঝানো শুরু করলেন প্রার্থী। মাঝেমধ্যে ওই পাড়ারই বাসিন্দা প্রফুল্ল, বাপি, পরিমলের নাম ধরে ডেকে তাঁদের সঙ্গে মজার ছলে হাসি-ঠাট্টায় মাতলেন। পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে প্রত্যেককে হেলথ টিপসও দিলেন। সেখান থেকে পৌঁছলেন সমুদ্রগড়ের নিচুচাপাহাটিতে। ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে চলল বৈঠক। পথেই মধ্যাহ্নভোজ সেরে রাত পর্যন্ত অবিরাম প্রচার আর জনসংযোগ।