পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা। প্রতিকার: একটি ... বিশদ
উত্তরবঙ্গ তো বটেই, রাজ্যের মধ্যে নজরকাড়া বিধানসভা কেন্দ্রগুলি মধ্যে শিলিগুড়ি অন্যতম। মাঝে একবার বাদ দিলে এই কেন্দ্র বরাবরই বামফ্রন্টের দখলে। বর্তমানে এখানকার বিধায়ক সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য। বয়স হলেও বামফ্রন্ট এবারও তাঁকে প্রার্থী করেছে। কয়েকদিন আগে তাঁর ‘শিষ্য’ শঙ্কর ঘোষ পদ্ম শিবিরে যোগ দিয়েছেন এবং প্রার্থীও হয়েছেন। এ নিয়েই রাজনীতির ময়দানে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
শিলিগুড়ি শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলির মধ্যে জংশন অন্যতম। চৈত্রের ভরদুপুরে জংশন এলাকায় এসজেডিএ ভবনের পাশে রাস্তায় টোটো দাঁড় করিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন কয়েকজন টোটোচালক। তাঁদের মধ্যে একজন মোবাইলে খবর দেখছিলেন। তাঁর নাম শম্ভু পাসওয়ান।
ভোটের হাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, অশোকবাবু ভালো মানুষ। ওজনদার প্রার্থী। কিন্তু তাঁর ছায়াসঙ্গী শঙ্কর ঘোষ এবার পদ্ম শিবিরে। তাই ভোটে কী হবে বোঝা যাচ্ছে না। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শ্যামল সরকার নামে আরএক টোটোচালক বলেন, তৃণমূলের প্রার্থী ওমপ্রকাশ মিশ্রও হেভিওয়েট। তিনি অধ্যাপক। তাই এবার লড়াই হাড্ডাহাডি হবে।
ইতিমধ্যে ভোটের ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন বামপ্রার্থী। বেলুন উড়িয়ে, বাজনা বাজিয়ে পদযাত্রা করার পাশাপাশি ঝাণ্ডা কাঁধে নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। অশোকবাবু অবশ্য বলেন, ওই প্রার্থীকে নিয়ে ভাবছি না। তৃণমূল ও বিজেপিকে ঠেকানোর আবেদন নিয়ে ময়দানে নেমে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কাজেই এই কেন্দ্র বামফ্রন্টের দখলে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এদিকে প্রার্থী ইস্যুতে ঘাসফুল শিবিরেও ক্ষোভ রয়েছে। ইতিমধ্যে দলত্যাগ করে নির্দল হিসেবে ভোটে লড়াই করার কথা ঘোষণা করেছেন এসজেডিএ’র প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান নান্টু পাল।
পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা মহিলা নেত্রী জ্যোৎস্না আগরওয়াল ও দীপক শীল তৃণমূল ছেড়েছেন। ভোটের ময়দানে ঘাসফুল শিবিরের এমন অবস্থা নিয়ে আমজনতা থেকে রাজনৈতিক মহল সর্বত্র জোর আলোচনা চলছে।
শহরের ব্যস্ততম মোড় হাসমিচকে একটি সংবাদপত্রের স্টলে খবরের কাগজে চোখ বোলাচ্ছিলেন কয়েকজন মাঝবয়সি। ভোটের হাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলক সরকার নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, এবারের খেলা কিছুটা অন্যরকম। সিপিএমের মতো ভাঙাভাঙির খেলায় তৃণমূল জেরবার। বিজেপিরও প্রচার নেই। কাজেই শেষপর্যন্ত কার মুখে জয়ের হাসি ফোটে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। শহরের পাতিকলোনির মিষ্টির দোকানদার সন্তোষ বর্মনেরও একই বক্তব্য। কোর্টমোড়, সুভাষপল্লি, মহাকালপল্লি, আশ্রমপাড়া, দেশবন্ধুপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের কথায় এবার এখানে ত্রিমুখী লড়াই দেখা যাবে।
দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে কখনও পদযাত্রা, আবার কখনও বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, কর্মী বৈঠক করছেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) রঞ্জন সরকার। তিনি অবশ্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের জোয়ারেই এই কেন্দ্র এবার তৃণমূলের দখলে আসবে। সিপিএম, বিজেপি কিছুই করতে পারবে না। পাল্টা বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। তিনি বলেন, আমরা ময়দানে ঝাঁপিয়েছি। জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।