ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
মহকুমার উদ্যানপালন আধিকারিক দীপঙ্কর দাস জানিয়েছেন, বারুইপুর ব্লকের ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত সহ জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েত এলাকায় ১৬০০ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়। এর মধ্যে উম-পুনে ১০ শতাংশ গাছ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আরও ১০ শতাংশ গাছের ক্ষতি হয়েছে কম-বেশি। যেসব গাছে পেয়ারা ছিল ঘূর্ণিঝড়ে বেশিরভাগটাই পড়ে গিয়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত গাছের ডালপালা ছেঁটে গোড়ায় সার-মাটি দিয়ে নতুন করে গাছ তৈরির চেষ্টা করছেন। করোনা পরিস্থিতির আগে বারুইপুরের কাছারি বাজার থেকে রোজ প্রায় ৬০ টন পেয়ারা দেশের নানা প্রান্তে যেত। বছরে বিদেশে রপ্তানি হতো প্রায় ২০ কোটি টাকার পেয়ারা। চাষিরা পাল্লা পিছু ৩০০ টাকা দাম পেতেন। কিন্তু সেই ব্যবসা এখন আর নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফলের মাছির আক্রমণ থেকে পেয়ারা বাঁচাতে ২০ মাইক্রনের পলিথিন দিয়ে প্রতিটি ফল মুড়ে দিতে হবে। এই মাছি সাধারণত দিনের বেলায় আক্রমণ করে না। রাতে এরা গাছের গোড়ায় ঝাঁক বেঁধে থাকে। সেকারণে পেয়ারা গাছের গোড়ায় সেচ দিয়ে ২ ইঞ্চির মতো জল জমিয়ে রাখলে মাছির আক্রমণ কমতে পারে, বলছেন কৃষি আধিকারিকরা। তাছাড়া এই মাছি দমনে জৈব পদ্ধতিতে ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে। গাছ প্রতি ১টি ফাঁদ ব্যবহার করলেই চলবে। এতে দিতে হবে মিথাইল ইউজিনল। এর সুগন্ধে পুরুষ মাছি আকৃষ্ট হবে। এবং ফাঁদে ধরা দেবে। এই ফলের মাছি খুবই চঞ্চল। ফলে রাসায়নিক পদ্ধতিতে এদের দমন করা খুব একটা সহজ হবে না। তবে এসিফেট ৭৫ শতাংশ ডব্লুপি প্রতি লিটার জলে ০.৭৫ গ্রাম মিশিয়ে দিনের বেলায় স্প্রে করা যেতে পারে।
বারুইপুর ব্লকের দুই কৃষি আধিকারিক শাশ্বত সর্দার ও মহ: হবিবুল্লা জানিয়েছেন, শঙ্করপুর ১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকায় পেয়ারার জমিতে মাছির আক্রমণ সবচেয়ে বেশি। এর অন্যতম কারণ, চাষিরা গাছের গোড়া ঠিকমতো পরিস্কার রাখেন না। চাষিদের বলা হয়েছে, আক্রান্ত ফল মাটিতে পুঁতে দিতে হবে।
এদিকে, পেয়ারা রপ্তানি নিয়েও সঙ্কটে পড়েছেন বারুইপুরের পেয়ারা চাষিরা। এখানকার পেয়ারা সাধারণত নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, ইরান, ইরাক ও সৌদি আরবে যায়। করোনার জেরে লকডাউনের কারণে এবার এমনিতেই রপ্তানি হয়নি। তার উপর জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত পেয়ারার চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু বারুইপুরের খুব অল্প চাষি রয়েছেন, যাঁরা জৈব পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষ করেন।
বারুইপুর ব্লকের ধপধপি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পেয়ারা চাষি দীপঙ্কর নস্কর, বাবুল মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের ৫ বিঘা ও ৪ বিঘা জমির পেয়ারা দু’বছর ধরে রপ্তানি করছেন। জৈব পদ্ধতিতে তাঁরা চাষ করেন। প্রথমে কিছুটা কম উৎপাদন হলেও এখন তা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একর প্রতি ২৪ কুইন্টাল খামার সার, ৬ কেজি জীবাণু সার, ৪ কুইন্টাল খোল, ৩ কুইন্টাল কেঁচো সার, ২ কুইন্টাল কচুরিপানা সার প্রয়োগ করতে হবে। এর থেকে নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশ পাওয়া যাবে। পরিমাণ মতো সেচ দিতে হবে। গাছ লাগানোর দু’বছর পর থেকে ফল পাওয়া যাবে। এল ৪৯ ছাড়াও ভাল জাত এলাহাবাদ, সফেদ, বেনারসি, হরিজা, বারুইপুর প্রভৃতি।