নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে থাকা পাঁচশোটির বেশি ‘শত্রু সম্পত্তি’ (‘এনিমি প্রপার্টি’) দখলদারদের হাত চলে গিয়েছে। তার মধ্যে ৪৯টি সম্পত্তি দখলমুক্ত করে সরকারের হাতে ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে এমনই তথ্য মিলেছে। এরাজ্যের শত্রু সম্পত্তিগুলি কী পর্যায়ে আছে, তা জানতে একটি সমীক্ষা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেখানেই সামনে আসে দখলদারির বিষয়টি। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের পর শত্রু সম্পত্তি সংক্রান্ত আইন আনা হয়। এদেশে শত্রু দেশগুলির যেসব সম্পত্তি আছে, সেগুলি ১৯৬৮ সালের আইন মোতাবেক সরকারের হাতে আসে। বেশকিছু সম্পত্তি সরকার লিজে ভাড়া দিয়ে রেখেছে, যেখান থেকে তাদের রাজস্ব আদায় হয়। আবার নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেগুলি নিলামে তুলে বিক্রিও করা হয়। যে সমীক্ষাটি করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে বাংলায় থাকা শত্রু সম্পত্তির সংখ্যা ৪,৩৭৬। এর মধ্যে ৪,৩২০টি সম্পত্তি পাকিস্তানের ছিল। বাকিগুলি চীনের। এই সম্পত্তিগুলির মধ্যে ৫৩৬টি বেআইনি দখলে চলে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাদের মধ্যে ৪৯টি সম্পত্তি বা বাড়ি খালি করার জন্য নোটিস ধরানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে। যেগুলিতে নোটিস ধরানো হয়েছে, তার মধ্যে দুটির ঠিকানা কলকাতা। একটি শেক্সপিয়ার সরণিতে, অন্যটি দক্ষিণ ট্যাংরা রোড এলাকায়।
এরাজ্যে যে শত্রু সম্পত্তিগুলি রয়েছে, তার সিংহভাগ মুর্শিদাবাদে অবস্থিত। ১,৭২৮টি সম্পত্তি রয়েছে সেখানে। এরপর সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি রয়েছে কোচবিহারে—৭১১টি। পূর্ব বর্ধমানে শত্রু সম্পত্তির সংখ্যা আছে ৬২৫। সংখ্যাটি বীরভূমে ৪২৭ এবং আলিপুরদুয়ারে ১০০। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, এনিমি প্রপার্টিগুলি কী পর্যায়ে আছে, তার দেখভালোর দায়িত্ব প্রাথমিকভাবে জেলাশাসকদের। এমন কোনও সম্পত্তি যদি দখলদারদের হাতে চলে যায়, তবে তা দখলমুক্ত করার দায়িত্ব তাদেরই। সেই উদ্যোগ রাজ্যে শুরু হয়েছে। মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই রাজ্যের এমন সম্পত্তির বেশকিছু লিজে দেওয়া থাকলেও গত তিনবছরে কোনোটির বিক্রিবাটা হয়নি।