সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
তাঁরা আরও জানান, সহ কৃষি অধিকর্তা অরূপ পাঠক ও সহকারি শস্যবিদ স্নেহাশিস দাস তাঁদের জমিতে এসে সবসময় দেখাশোনা করেছেন। তাঁদের নির্দেশে তাঁরা জমিতে টানাভাবে পাওয়ার টিলার দিয়ে লাঙল দিয়েছেন। এরপর ঘাস শুকিয়ে গেলে তাঁরা জমিতে সার ছড়িয়েছেন। সারের কয়েকদিন পর মই দিয়ে জমি সমান করে নিয়েছেন। এই সমান জমিতে ৮ মিটার অন্তর অগভীর সরু ৩০ সেন্টিমিটার চওড়া নালা তৈরি করেন। এর পর সেচ দেন। এই সেচ প্রয়োগের ১ ঘণ্টা পর প্রতিটি গুছিতে ১টা বা ২টো বীজতলা রোপণ করে দেন। এর পর মাটি শুকনো হলে আবার সেচ দেন। ২৫ দিনের সুস্থ ও সবল বীজতলাগুলি তাড়াতাড়ি মাটি কামড়ে ধরে। তাই জমি শুকিয়ে গেলেও মাটি ফেটে যায় না। মাটি না ফেটে যাওয়া এই প্রযুক্তির অন্যতম আকর্ষণ। তাঁরা ৮৫ দিনেই ফসল ঘরে তুলেছেন। ২৫দিন জমি বাঁচিয়ে এই চাষে লাভও বেশি হয়েছে।
এদিকে রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের হিজুলি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষি স্বপন বিশ্বাস জানিয়েছেন, তাঁর ১ বিঘা বেলেমাটির জমিতে এবছর প্রথম শুকনো কর্ষণে সুধা বোরো চাষ করে বিঘা প্রতি ২২ মণ ধান পেয়েছেন। এটা তাঁকে অবাক করেছে। কারণ, বেলেমাটিতে জল একদম দাঁড়ায় না। জল চলে যায় মাটির গভীরে। জলের খরচ বেশি বলে তাঁদের হিজুলি অঞ্চলে কেউ বোরো ধান চাষ করেন না। এবছর সহকারি শস্যবিদ সমীরকুমার হেমব্রম ও স্নেহাশিস দাসের পরামর্শ মতো শতাব্দী জাতের ধান চাষ করে এই অঞ্চলে তাঁর মতো অনেকেই ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। বোরো ধানে শীতে অঙ্কুরোদগমের সমস্যা লেগেই থাকে। তার থেকে বাঁচতে তিনি ব্যবহার করেছেন বীজ অঙ্কুরোদগম যন্ত্র। বীজতলাকে কোল্ড ইনজুরি থেকে বাঁচাতে তাঁদের পরামর্শ মতো ব্যবহার করেছেন পলিশিট। এতে বীজ লাগে বিঘায় মাত্র ৩ কেজি। প্রথাগত পদ্ধতিতে বিঘা প্রতি বীজ লাগে ১২ কেজি। ৬০ কেজি ধান তিনি বিক্রি করবেন ৭৫০ টাকায়। এতে লাভ বেড়েছে বহুগুণ। সেচ লেগেছে গোটা ফসল চক্রে মাত্র ৩৫ ঘণ্টা সেচেও লাভ বেড়েছে।
রানাঘাট জল ও সেচ ব্যবহার গবেষণা কেন্দ্রের যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা মাধবচন্দ্র ধারা বলেছেন, নদীয়া জেলার বহু জায়গায় বেলেমাটির সমস্যা আছে। বোরো ধান চাষ হয় না। এবার প্রথমে ওইসব অঞ্চলের চাষিরা শুকনো কর্ষণে সুধা বোরো চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, অন্যান্য ফসল যেমন গম, ভুট্টা বিভিন্ন সব্জির মতো বোরো ধান ও শুকনো কর্ষণে চাষ করা সম্ভব। এতে জলের খরচ কমবে। ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ঠিক থাকবে। পরিবেশও বাঁচবে।