কর্মপ্রার্থীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। নিকটস্থানীয় কারও প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। পুরোনো কোনও বন্ধুর ... বিশদ
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল নাটক, ‘পরিযায়ী’। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের গল্প অবলম্বনে এই নাটকটি রচনা করেছেন সুপর্ণা ভট্টাচার্য। নির্দেশনায় অসীম ভট্টাচার্য।
করবী এবং অনুব্রত, প্রৌঢ় এই দম্পতির সংসারে সবচেয়ে বড় সমস্যা তাঁদের একাকীত্ব। তাদের ছেলে বাইরে থাকে। বাড়ির মধ্যে এই দম্পতি একাই। একসময় তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন এই বিশাল বাড়িতে তাঁদের একাকীত্ব দূর করতে তাঁরা বাড়িতে পেয়িং গেস্ট রাখবেন। খবর পেয়ে তাঁদের বাড়িতে পেয়িং গেস্ট থাকতে আসে রূপসা আর সম্পূর্ণা নামের দুই তরুণী। এদের সঙ্গে এক আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে করবীর। দুই পেয়িং গেস্টের মধ্যে সম্পূর্ণা এক অন্য সমস্যায় ভুগছে। তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে কোনও একসময় তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে সেই সম্পর্ক টিকে না থাকলেও সেই যুবকটি তাকে প্রায়শই ব্ল্যাকমেল করে বলে সর্বদাই আতঙ্কিত হয়ে থাকে সম্পূর্ণা। করবী বিষয়টি জানতে পারে এবং সমস্যার সমাধানে সম্পূর্ণার পাশে দাঁড়ায়।
এদিকে রূপসা আবার নবদিশা নামের এমন এক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত যারা সমাজ, সরকার দ্বারা নিপীড়িত মানুষের স্বার্থে কাজ করে। এজন্য তাদের সইতে হয় বহু যন্ত্রণা। রূপসার জীবনের ব্যক্তিগত কিছু দুঃখ, কিছু সমস্যাই তাঁকে ব্রতী করে তুলেছে সমাজের দলিত, নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করতে। স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান রাজনৈতিক ডামাডোলে, যেখানে সরকার বিরোধী কথা বলতে গেলেই তাকে সন্ত্রাসবাদীর আখ্যা দেওয়া হয়, যেখানে ‘উন্নয়নের গাজর’ সামনে ঝুলিয়ে রেখে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়, সেইসব রাজনৈতিক দলের চক্ষুশূল হয়ে ওঠে সে আর তাদের নবদিশা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাণপুরুষ অনিমেষ। এমনকী পুলিসি জুলুমের মধ্যেও পড়তে হয় তাঁদের। অবশেষে নির্ধারিত সময়ের পরে যে যার নিজেদের বাড়ি ফিরে যায় মেয়ে দুটি। আবার একা হয়ে পড়ে করবী আর অনুব্রত। এতদিন যারা বাড়ি মাতিয়ে রেখেছিল তারা আবার চলে যাচ্ছে দম্পতিকে একা রেখে। আসলে এরা পরিযায়ী পাখিদের মতোই। একটা সময় আসে, কিছুদিন নিজেদের উপস্থিতিতে মাতিয়ে রাখে একটা বাড়ি, একটা পরিবার। তারপর নির্দিষ্ট সময় এলেই ফুড়ুৎ করে উড়ে যায় পরিযায়ী পাখিদের মতো। পড়ে থাকে শুধু একরাশ স্মৃতি। অনেকটা যন্ত্রণা।
নাটকটির বিভিন্ন দৃশ্যে সুঅভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হবেন সুপর্ণা ভট্টাচার্য (করবী চরিত্রে), অসীম ভট্টাচার্য (অনুব্রত), তাপস পাল (সম্পূর্ণার বাবা), মৌমিতা অধিকারী (সম্পূর্ণা), সোমা দাস (প্রতিমা), দীপঙ্কর ঘোষ (পল্লব), শঙ্কর চক্রবর্তী (অনিমেষ), রিয়া জানা (শর্বরী), মনোলিসা কোলে (মোনালিসা), অপূর্ব নস্কর (সুজন), সাত্যকি সরকার (অফিসার) এবং ঋজু দাস। অসীম ভট্টাচার্যর সুপরিচালনার গুণে নাটকটিতে প্রাণসঞ্চার হয়েছে। তাঁকে যথাযথ সহযোগিতা করেছেন সাত্যকি সরকার (আলো, মঞ্চ ও ধ্বনি)।