দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
তিনটির মধ্যে তিনটি আসনেই যে তাঁরা জিতবেন, তা ভোট গণনার আগের দিন পর্যন্ত কেউ বুক ঠুকে দাবি করেননি। মাত্র সাত মাস আগে লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে আসনের নিরিখে প্রায় সাফ হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। স্বভাবতই, এদিন উত্তর দিনাজপুরের একদা কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত কালিয়াগঞ্জ আসনটি বিজেপির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়াটা অবিশ্বাস্য তৃণমূল নেতাদের কাছে। খড়্গপুর সদরে বিপুল সংখ্যক ভোট বাড়িয়ে জয় তো বটেই, বিজেপির মনোবল তলানিতে ঠেকাতে এই ফলাফল অনুঘটকের কাজ করবে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের আশা। করিমপুরের আসন ধরে রেখে ভোট বাড়াতে সমর্থ হয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায়ের মতে, তিনটি কেন্দ্রের চরিত্রের ভিন্নতা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের প্রতি মানুষের আস্থা ও ভরসার ছবিটা সর্বত্র অভিন্ন। তাই ধর্মীয় বিভাজন থেকে এনআরসি, সব খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়রে মতে, নোটবন্দি থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ, এনআরসি করে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, এই আতঙ্ক থেকে মুক্তি চেয়েছিল মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতে, বাংলার মমতা ছাড়া কারও কোনও ভবিষ্যৎ নেই। তিনি বলেন, বাংলায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলের বিরোধিতা করতে গিয়ে বাম ও কংগ্রেসের জোট ফের মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলেই তিন আসনে তাদের জামানত খোয়া গিয়েছে। ফিরহাদ হাকিম মনে করেন, মানুষকে ভাঁওতা দিয়ে ভোটে জিতেছিল বিজেপি। মাত্র এই কয়েক মাসেই মানুষ তাদের ধরে ফেলেছে। এই ভোটের ফলাফলে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি ফিরহাদ হাকিমের।
তবে, বিগত লোকসভা ভোটের পর থেকে দলের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক প্রচারের অভিমুখ নির্ধারিত হয়েছে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) পরিকল্পনা অনুসারে। এই অভাবনীয় জয়ের পিছনে পিকের অবদান নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তাঁর সংস্থা আইপ্যাক কঠোর অনুশাসনে বেঁধে ফেলেছিল এই তিন কেন্দ্রের টিম তৃণমূলকে। তৃণমূল স্তরে সমীক্ষা চালিয়ে তিন কেন্দ্রের জন্য আলাদা আলাদা ইস্তাহার থেকে শুরু করে প্রচার পরিকল্পনাও স্থির করে দিয়েছে পিকের ৩৫ জনের একটি বাহিনী। নেপথ্যে থেকে দিনরাত পরিশ্রম করে তৃণমূলকে জয়ের মুখ দেখিয়েছেন পিকে। প্রথম দিন থেকেই পিকের নিষেধাজ্ঞা, তাঁর বা আইপ্যাকের কাজ নিয়ে কোনও আলোচনায় জড়াবেন না তৃণমূল নেতারা। তাই মুখে বিশেষ কিছু বলতে রাজি নন তাঁরা। এক নেতার মতে, মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সাফল্যেরও নেপথ্য কারিগর পিকে। এবার বাংলাতে তাঁর প্রথম পরীক্ষাতেই সাফল্যের সঙ্গে উতরে গিয়েছেন। এই নিয়ে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, লোকসভা ভোটে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল। সেগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফাঁকফোকর বন্ধ করা গিয়েছে। এক্ষেত্রে পিকের অবদান আছে কি না, তা নিয়ে সরাসরি মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, সবটাই দলে আলোচনা করে দেখা হবে।