সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
এদিকে, এই রহস্যজনক মৃত্যুর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। যাতে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ইঙ্গিত দিয়েছেন, খুন করে দেহ পুকুরে ফেলা হয়নি, তা নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে, প্রথমত, প্রসেনজিতকে কেউ ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হতে পারে। তৃতীয়ত, আত্মহত্যার সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠে আসছে। তাই গোয়েন্দারা এখন সিসিটিভি’র ফুটেজ সংগ্রহ করছেন।
লালবাজারের সূত্র বলছে, ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। ফলে আত্মহত্যার সম্ভাবনা এক প্রকার নেই বললেই চলে। তবে রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা বডিগার্ড লাইনের সেই পুকুর পাড়ে মন্দিরের চাতাল থেকে প্রসেনজিতের বিছানা, ব্যাগ, জুতো উদ্ধার করেছেন। পুকুরের পাড় পিচ্ছিল ছিল। সেই রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। ফলে পা হড়কে পুকুরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, প্রসেনজিতের পাকস্থলিতে পুকুরের জল ছাড়া কিছু মেলেনি। তাঁর দেহে ‘কালশিটে পড়া’ বা বড়সড় আঘাতের চিহ্ন নেই। একমাত্র কপালের ডান দিকে সামান্য ছড়ে যাওয়ার মতো ক্ষত রয়েছে। যা দেখে গোয়েন্দাদের অনুমান, পুকুরের ফেনসিংয়ে খোঁচা খেলে এমন ক্ষত হতে পারে।
পাশাপাশি এই রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুসারে ঠিক যে সময়ে প্রসেনজিতের মৃত্যু হয়েছে, তখন দুই অভিযুক্ত ইন্দ্রজিৎ ও বিশ্বজিৎ কোথায় ছিলেন? গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, মৃত্যুর সময়ে অভিযুক্ত দুই ভাই বডিগার্ড লাইনের চৌহদ্দির কাছে ছিল না। এমন প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। তবে বিকেলের দিকে আলিপুরের এক অভিজাত হাসপাতালে তাঁরা গিয়েছিলেন চিকিৎসাধীন বাবাকে দেখতে।
এই রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিস জানতে পেরেছে, ২০১৭ সালের জুলাই, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে প্রসেনজিৎ তিন দফায় ইন্দ্রজিৎ ও বিশ্বজিৎকে কনস্টেবল সহ যে কোনও সরকারি চাকরির জন্য মোট তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি না মেলায় বারবার টাকা ফেরত চাইছিলেন প্রসেনজিৎ। যা নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। লালবাজারের এক সূত্র জানাচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিশ্বজিৎ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের পাল্টা দাবি, সিংহভাগ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ‘খুন’, ‘দুর্ঘটনা’ বা ‘আত্মহত্যা’ প্রসেনজিতের মৃত্যু যেকারণেই হোক না কেন, বডিগার্ড লাইনের মতো সুরক্ষিত এলাকায় মালদহের গ্রাম থেকে আসা এক চাকরিপ্রার্থী যুবক এক সপ্তাহ ধরে মন্দিরের চাতালে কার্যত বসবাস করছিলেন, তার দায় কি এভাবে ঝেড়ে ফেলতে পারে লালবাজার?