সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
এরপর আলমারির লকার সহ ঘরের সব কিছু প্রায় তছনছ করে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা নগদ এবং লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না তুলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। যা বুঝতে পেরে গিয়ে মা-ছেলে বাধা দেন। তখনই তাঁদেরকে শাসাতে থাকে। গৃহস্থের চিৎকারে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে আসেন। তাঁরা আঁচ করতে পারেন, এই ছ’জন পুলিস নয়। কারণ যে গাড়িতে করে তারা এসেছিল, তাতে পুলিস বলে কোথাও উল্লেখ নেই।
এরপরই ওই এলাকার বাসিন্দারা পাল্টা ওই ছ’জনকে পাকড়াও করতে এগিয়ে এলে তারা শূন্যে পর পর তিন রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। তাতে এলাকার বাসিন্দারা ভয়ে কিছুটা পিছুপা হয়ে যান। তখন ওই ছ’জন পালানোর চেষ্টা করলে এক বাসিন্দার লোহার রডের আঘাতে দুষ্কৃতীদের মধ্যে একজন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। বাকিরা তাকে ছেড়েই পালিয়ে যায়। রবিবার রাত দু’টোর সময় এমনই রোমহর্ষক ঘটনা ঘটল নরেন্দ্রপুর থানার পূর্ব খুঁড়িগাছি নেতাজিনগর আমবাগান এলাকায়। এভাবে পুলিস পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত ওই এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনার খবর পেয়েই রাতেই নরেন্দ্রপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং স্থানীয়দের হাতে আটক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিস তল্লাশি চালিয়ে যাদবপুরের বাঘাযতীন এলাকা থেকে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আমবাগানের বাসিন্দা অরূপ দত্তের বিদ্যুতের সামগ্রীর দোকান রয়েছে। তিনি বলেন, আমি ও মা রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ি। রাত দু’টো নাগাদ বাড়ির দরজায় এসে টোকা মেরে কেউ ডাকাডাকি করে। প্রথমে শোনার ভুল ভেবে এড়িয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আচমকাই আমাদের শোনার ঘরের বন্ধ জানালায় জোরে জোরে ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে কেউ। অরূপবাবুর মা মায়া দত্ত বলেন, আমরা কে জিজ্ঞাসা করতেই, ওরা বলে নরেন্দ্রপুর থানা থেকে এসেছি। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাই। এত রাতে পুলিস বাড়িতে এসেছে শুনে চমকে উঠি। এরপর আমার ছেলে দরজা খুলে দিতেই তিনজন উর্দিধারী সহ ছ’জন বাড়ির মধ্যে ঢুকে আসে। বাইরে একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তাতে আরও কয়েকজন ছিল। ঘরের ভিতরে ঢুকে এসেই ওরা ছেলেকে বলতে থাকে, কবে থেকে এই ব্যবসা শুরু করেছিস! সোনার বাঁটগুলো বের করে দে। ছেলে তাদের বলে, কীসের সোনার বাট! তার কাছে কোন সোনার বাট নেই। সোনার ব্যবসা তার নয়। তাতে কান না দিয়েই ওই ছ’জন ঘরের ভিতরে ঢুকে যাবতীয় আসবাবপত্র, আলমারি লণ্ডভণ্ড করতে থাকে। আলমারির লকার থেকে টাকা ও সোনার গয়না নিয়ে নেয়। আমি ওদের বলেছিলাম, এগুলি কী হচ্ছে? আমাদের টাকাপয়সা ও গয়না নিচ্ছেন কেন? কিন্তু আমাদের পাল্টা ওই ছ’জন শাসায়, পুলিসের মুখের উপরে কথা বললে তুলে নিয়ে চলে যাব।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছ’জনের হাবভাব দেখে মায়াদেবী এবং অরূপবাবুর সন্দেহ হয়। তখনই তাঁরা বাগবিতণ্ডা শুরু করে দেন। যা শুনে তাঁদের পড়শিরা বেরিয়ে আসেন। লোকজন ভিড় করতে শুরু করলে ওই দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করে। এলাকার লোকজন তাড়া করলে তাঁদের ভয় দেখাতে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। তাতে ভয় পেয়ে কিছুটা পিছিয়ে এলে এক বাসিন্দা লোহার রড পিছন দিক থেকে এক দুষ্কৃতীকে মাটিতে লুটিয়ে ফেলেন। বাকিরা পালায়। বারুইপুর পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, পুলিস পরিচয় দিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এমকী, তারা এলাকার মানুষের বাধা পেয়ে গুলিও চালিয়েছে। নগদ ৭০ হাজার টাকা ও কিছু সোনার গয়না খোয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিনজনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।