সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
এবার বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ শহরে বেড়া উৎসব পালিত হবে। এবার এই উৎসব ৩১৭বছরে পা দেবে। নবাবি ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ ১৭০৩সালে বেড়া উৎসব চালু করেন। সেইসময় সুবে বাংলার রাজধানী ছিল ঢাকা শহর। কাজেই প্রথম বছর বেড়া উৎসব ঢাকা শহরেই আয়োজন করা হয়েছিল। পরের বছর থেকে মুর্শিদাবাদ শহরেই বেড়া উৎসব আয়োজন হয়ে আসছে। এই উৎসব চালুর পিছনে কারণ হিসেবে কেউ কেউ বলেন, সেই সময়ে প্রতি বছর বন্যায় মুর্শিদাবাদ প্লাবিত হতো। তাই জলের দেবতা খাজা খিজিরকে তুষ্ট করার জন্য নবাব এই উৎসব চালু করেন। কারণ হিসেবে আবার কেউ কেউ বলেন, নবাবরা নদীপথে বাণিজ্যে যেতেন। বাণিজ্যে যাওয়ার পথে জলদস্যু দ্বারা নবাবদের বজরা আক্রান্ত হতো। জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে নিস্তারের জন্য জল দেবতার আশীর্বাদ লাভের জন্য উৎসব চালু করেছিলেন। এই উৎসবের খ্যাতি রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও রয়েছে। তবে নবাবদের সময়ের আড়ম্বর এবং জৌলুস না থাকলেও উৎসব ঘিরে মানুষের উন্মাদনায় ঘাটতি দেখা যায় না। সর্বধর্মের মানুষের মিলন মেলা এই উৎসবকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ রয়েছে শহরে। বর্তমানে রাজ্য সরকারের বিচার বিভাগের অধীনে মুর্শিদাবাদ এস্টেট এই উৎসবের আয়োজন করছে। সাধারণত ভাদ্র মাসের শেষ বৃহস্পতিবার উৎসব হলেও চলতি বছরে ভাদ্র মাসের প্রথম বৃহস্পতিবারেই পালিত হচ্ছে। এব্যাপারে এস্টেটের কর্মী সৈয়দ আর্থার আলি বলেন, ভাদ্র মাসের শেষদিকে মহরম রয়েছে। বেড়া উৎসব খুশির উৎসব, কিন্তু মহরম শোকের উৎসব। তাই এবার বেড়া উৎসব এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নবাবি আমলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার বেড়া উৎসব দেখতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভাগীরথীর তীরে জমায়েত হতেন। এখন নবাবি আমলের মতো জৌলুস না থাকায় আগের মতো মানুষের সমাগম না হলেও কিছু সময়ের বেড়া উৎসব দেখতে এখনও হাজার হাজার মানুষ মুর্শিদাবাদে আসেন।
মুর্শিদাবাদ এস্টেট ম্যানেজার শুভদীপ গোস্বামী বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তোপখানা ঘাটে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের সূচনা হবে। উৎসবের সূচনার জন্য রাজ্যের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ওইদিন মুর্শিদাবাদ শহরে আসবেন। সূচনা অনুষ্ঠানের জন্য তোপখানা ঘাটে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়নে নিউ প্যালেসের সামনে মঞ্চ করা হয়েছে। বেড়া উৎসবের প্রস্তুতি একেবারে শেষ লগ্নে। আশা করছি সুষ্ঠুভাবেই উৎসব সম্পন্ন হবে।
লালবাগ মহকুমা পুলিস আধিকারিক বরুণ বৈদ্য বলেন, বেড়া উৎসবের সকাল থেকেই শহরে প্রচুর পুলিস মোতায়েন করা হবে। বেড়া উৎসব চলাকালীন কেউ যাতে জলে পড়ে গিয়ে বিপত্তি না ঘটে তার জন্য বিকেল থেকেই ভাগীরথীর ঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নজরদারি চালানো হবে।