দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
শুক্রবার লন্ডন ব্রিজের উপর ছুরি নিয়ে চড়াও হয় লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ ওড়ানোর ষড়যন্ত্রকারী তথা দোষী উসমান। ২০১০ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে এই হামলার ছক কষেছিল সে। লন্ডনের তৎকালীন মেয়র তথা ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও তার নিশানায় ছিল। কিন্তু, তার আগেই পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যায় উসমান। সেই মামলায় ২০১২ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে লন্ডনের এক আদালত। গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিল উসমান। তারপর থেকে বৈদ্যুতিন ট্যাগের মাধ্যমে তার উপর নজর রাখছিল ব্রিটিশ পুলিস। শুক্রবার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বন্দিদের পুনর্বাসন সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে দুই ব্যক্তির উপর উপর চড়াও হয় উসমান। মারা যান এক মহিলা সহ দু’জন। পরে পুলিসের গুলিতে মৃত্যু হয় তার।
এ প্রসঙ্গে জঙ্গিদের কার্যকলাপের উপর নজরদদারি চালানো ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ জানিয়েছে, লন্ডন ব্রিজ হামলার দায় নিয়েছে আইএস। এক বিবৃতি জারি করে তারা জানিয়েছে, ‘লন্ডনের হামলাকারী ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধা। আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারী দেশগুলির নাগরিকদের যথার্থ নিশানা করেছে সে।’ যদিও, তার সপক্ষে কোনওরকম তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে পারেনি আইএস। স্টক এক্সচেঞ্জ হামলার ছক ছাড়াও ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হামলারও ছষ কষেছিল উসমান। পরিকল্পনা ছিল ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার অনুরূপ নাশকতা চালানো।
কিন্তু, এর আগে কাশ্মীরে বড়সড় হামলা চালানোর ছক ছিল উসমানের। সেই লক্ষ্যে ব্রিটেন থেকে অল্পবয়সি মুসলমান ছেলেদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। ২০১২ সালের ওই মামলার রায়ে এমনটাই জানিয়েছিলেন বিচারক উইলকি। এ প্রসঙ্গে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার পক্ষে উসমানকে ‘বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।
আরও জানা গিয়েছে, উসমানের পরিবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দা। সেখানে তাদের জমি ও সম্পত্তি রয়েছে। শৈশবে পাকিস্তানে থাকাকালীন জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় উসমান। সেখান থেকে ব্রিটেনে গিয়ে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হয় সে। শুরু করে কমবয়সি ছেলে-মেয়েদের মগজ ধোলাইয়ের কাজ। তখনই কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ হামলার ছক কষে উসমান। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই পুলিসের জালে ধরা পড়ে যায় সে। উসমানকে ১৬ বছরের সাজা শোনায় আদালত। কিন্তু, পরে তা কমিয়ে আট করা হয়। কিন্তু, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারোলে মুক্তি পায় উসমান। তারপর থেকে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিসের নজরে ছিল সে। শুক্রবার তার ছুরি-হামলায় মৃত্যু হয় দু’জনের।
কিন্তু, মেয়াদ শেষের আগে কী করে ছাড়া পেল ‘বিপজ্জনক জঙ্গি’, তা নিয়ে ব্রিটেনের রাজনীতিতে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। নয়া নিয়মে উসমানের মতো জঙ্গিদের সাজা কমানোর জন্য তৎকালীন লেবার পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকারকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। অন্যদিকে, নিরাপত্তার সঙ্গে কনজারভেটিভ পার্টি আপস করছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন। ফলে, ভোটের আগে লন্ডন ব্রিজ হামলা এবং তা নিয়ে নিরাপত্তার গাফিলতি রাজনৈতিক দলগুলির কাছে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।