বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
প্রসঙ্গত, শহরের মালঞ্চ চণ্ডীপুর এলাকার এক ব্যবসায়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেছেন, তাঁর বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা মদের দোকান খুলে দেওয়ার নাম করে চেয়ারম্যান ৫লক্ষ টাকা কাটমানি নিয়েছেন। কথা ছিল, বাকি আরও ৫লক্ষ টাকা দোকান খোলার পর দিতে হবে। কিন্তু, তিনি দোকান খুলে দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা করেননি। ওই ব্যবসায়ীর বক্তব্য ভাইরাল হতেই শহরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনার পিছনে দলেরই এক নেতা তথা কাউন্সিলারের চক্রান্ত আছে বলে দাবি করে চেয়ারম্যান দলের কাছে এর বিচার চেয়েছেন। দলীয় নেতৃত্বের কাছে তিনি বলেছেন, এরকম চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আর দল করা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে দলের কয়েকজন কাউন্সিলার জেলাশাসকের কাছে যাওয়ায় নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
কাউন্সিলার দেবাশিস চৌধুরী বলেন, লোকসভা ভোটে বড় বিপর্যয়ের পর শুভেন্দুবাবুর নেতৃত্বে দলকে যখন ঘুরে দাঁড় করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই সময় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ ওঠায় খড়্গপুর শহরে দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। অবশ্যই এর তদন্ত হওয়া উচিত। আমাদের দলের ২৬জন কাউন্সিলারেরই জেলাশাসকের কাছে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু, কয়েকজন কাউন্সিলারকে নিয়ে গিয়ে দলের মধ্যে নতুন করে বিভাজন করার চেষ্টা হচ্ছে। যা এই মুহূর্তে ঠিক নয়।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, আমরা যা বলার শুভেন্দুবাবুকে বলেছি। তিনিই বিষয়টি দেখবেন। তাঁর উপরেই বিষয়টি আমরা ছেড়ে দিয়েছি। উনি ২৩ তারিখ আসবেন। খড়্গপুরে বৈঠক করবেন বলেছেন। তবে, আমরা জেলার পক্ষ থেকে দু’টি জিনিস তদন্ত করে দেখছি, খোঁজ নিচ্ছি। প্রথমত, যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্যি কি না। দ্বিতীয়ত, বলা হচ্ছে কারা নাকি এটা পরিকল্পিতভাবে ছড়াচ্ছে। এই অভিযোগ সত্যি কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপর আমি দলের পক্ষ থেকে এব্যাপারে মন্তব্য করব। তার আগে আমরা কিছু বলব না। শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন।
জওহরলালবাবু বলেন, আমরা মনে করি, এখানে বেআইনিভাবে মদ দোকান চলছিল। এখানে মন্দির, স্কুল, বাজার আছে। এরকম লোকালয়ের মাঝে মদের দোকান চলায় বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়ছিলেন। এর জন্য পুরসভা কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। এলাকার মহিলাদের আন্দোলনের জেরে প্রশাসন দোকান বন্ধ করে দেয়। চেয়ারম্যান এলাকার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন ওই ব্যবসায়ী ঘুরপথে আমাদের চেয়ারম্যানের নামে মিথ্যা প্রচার করে তাঁর বদনাম করে দোকান খোলার চেষ্টা করছেন। এর পিছনে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ আছেন। তাঁরা ওই ব্যবসায়ীকে উৎসাহিত করে এরকম প্রচার চালিয়ে চেয়ারম্যানের বদনাম করাচ্ছেন। এর পিছনে তাঁদের লোভ-লালসাও কাজ করছে বলে আমাদের ধারণা। এর ফলে পুর বোর্ডের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আমরা জেলাশাসককে সমস্ত বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি। আমরা এটাও বলেছি, ওই দোকানের লাইসেন্স অন্য জায়গায় আছে। কিন্তু, জোর করে এখানে চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত লোকসভা ভোটে মূলত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দল বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়ার থেকে প্রায় ৪৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। দলের এই বিপর্যয় কাটাতে শুভেন্দুবাবু শহরে চার নেতা প্রদীপ সরকার, জওহরলাল পাল, দেবাশিস চৌধুরি ও শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডেকে কোলাঘাটে ডেকে পাঠিয়ে মিটিং করেন। পরে খড়্গপুর শহরে এসেও বৈঠক করেন। আবার এক দিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দলের কাউন্সিলার, নেতা ও কর্মীদের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করেছিলেন। কর্মীদের মতে, শুভেন্দুবাবু চেষ্টা করলেও দলের এই সব নেতারা গোষ্ঠী বিরোধ থেকে সরে আসতে পারছেন না। এতে দলের ক্ষতি হবে বলেই মনে করছেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা।