বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর পরেই শাসক দলের ভাঙন শুরু হয়েছে। বিজেপিতে যোগদানের কার্যত হিড়িক পড়েছে। রানাঘাট-১ ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি প্রদীপ সরকার(কাজু) বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। হাঁসখালির তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি কৃষ্ণকিঙ্কর ঘোষও গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন। হরিণঘাটা পুরসভার একাধিক কাউন্সিলার বিজেপিতে যোগ দেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অসিত সাহা দলত্যাগ করেছেন। চলতি মাসের প্রথমদিকে কৃষ্ণনগরে তৃণমূল শিক্ষাসেল ও এবিপিটিএ ছেড়ে ৬২জন প্রাথমিক শিক্ষক যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহে রাজ্যস্তরের একাধিক নেতা জেলায় আসবেন। তাঁদের নিয়ে তেহট্টে একটি দলীয় সভাও হবে। ওই সভায় যোগ দিতে পারেন তেহট্ট পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের এক দাপুটে নেতা। উনি যোগ দিলে ওই পঞ্চায়েত সমিতিও শাসক দলের হাতছাড়া হওয়ার সম্ভবনা থাকছে। এছাড়া, নদীয়া জেলার চিকিৎসক সংগঠনের এক নেতাও যোগ দিতে পারেন। তিনি যোগ দিলে চিকিৎসক সংগঠন শাসক দলের পরিবর্তে বিজেপির ছত্রছায়ায় আসবে। ওই সভায় শাসক দলের আরও বেশ কিছু নেতা যোগ দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
বিজেপির জেলা নেতা সুনীল পাল বলেন, শাসক দলে আর কেউ থাকতে চাইছে না। কৃষ্ণনগর পুরসভার বেশ কয়েকজন প্রাক্তন কাউন্সিলার পা বাড়িয়ে রয়েছেন। পুরসভার নির্বাচন যেদিনই হোক না কেন, সব পুরসভা আমরা এবার দখল করব। কারণ, এই পুরসভা থেকেই আমরা ২৭ হাজার ভোটের লিড নিয়েছি। ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৩টিতে লিড নিয়েছি আমরা। কাউন্সিলাররা তাই দলবদল করতে প্রস্তুত রয়েছেন। তবে আমরা সকলকে নিচ্ছি না। বিজেপির নদীয়া(উত্তর) জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, আগামী সপ্তাহে তেহট্টে একটি দলীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রাজ্যস্তরের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ওই সভায় তৃণমূল ছেড়ে বেশ কয়েকজন নেতা যোগদান করবেন। শাসক দলের অনেক নেতা আমাদের দলে যোগদানের জন্য পা বাড়িয়ে আছেন।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের জেলার ২২টি কলেজের মধ্যে ৫টি কলেজের ছাত্র সংসদ কার্যালয় দখল করেছিল এবিভিপি। আসাননগর ও মাজদিয়া কলেজের ছাত্র সংসদ কার্যালয় পুনরুদ্ধার করেছে টিএমসিপি। জেলার কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ কার্যালয় দখল করার টার্গেট নিয়েছে এবিভিপি। কৃষ্ণনগর শহরের দুই কলেজে গভর্নমেন্ট কলেজ ও ডিএল রায় কলেজের ছাত্র সংসদ কার্যালয় দখল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এবার লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাট কেন্দ্র তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী দু’লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন। রানাঘাট কেন্দ্র এলাকার সাতটি বিধানসভার মধ্যে নবদ্বীপ ছাড়া বাকিগুলিতে হার হয়েছে শাসক দলের। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে বিজেপি জয়ী হতে পারেনি। কিন্তু শাসক দলের বিপর্যয় হয়েছে। সাতটি বিধানসভা মধ্যে তিনটিতে হার হয়েছে শাসক দলের। কেবল সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা বিধানসভাগুলিতে শাসক দল লিড নিয়েছে।
তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি তথা বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি। সেখানে আমাদের কেউ যাবেন না। কিছু নাম ভাসিয়ে দিয়ে বিজেপি একটা চাপ সৃষ্টি করার কৌশল নিয়েছে। তাতে আমরা মাথানত করব না। ২০২১ সালের আগে জেলার সংগঠন আরও মজবুত হয়ে উঠবে। আর যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের মোহভঙ্গ হয়েছে। তাঁরা আমাদের দলে ফের ফিরে আসছেন। ‘ঘর ওয়াপসি’ ঘটছে। হরিণঘাটা পুরসভায় যেসব কাউন্সিলার দলত্যাগ করেছিলেন, তাঁরা ফের আমাদের দলে এসেছেন। হরিণঘাটা পুরসভায় আমাদেরই চেয়ারম্যান হয়েছে। শুধু নদীয়া নয়, অন্যান্য জেলাতেও একই ঘটনা ঘটছে। আমাদের দলের কিছু কিছু নেতাকে ভয় দেখিয়ে বিজেপি দলে টেনেছিল। ভয় দেখিয়ে বেশিদিন দলে রাখা যায় না। তাঁরা ফের ঘরে ফিরছেন।