উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
কয়েকদিন আগেই কাঁকসার মলানদিঘি এলাকায় দেখা হয়েছিল আতিকুলের সঙ্গে। সে লাল, সাদা সহ বিভিন্ন রংয়ের আইসক্রিম হাঁক দিয়ে বিক্রি করছিল। তার সমবয়সিদের তা বিক্রি করতে পেরে যেন যুদ্ধজয়ের হাসি ফুটে উঠছিল তার মুখে। সে বলে, এবছর গ্রীষ্মে অনেক দিন ছুটি পেয়েছি। ভালো আয় হবে। বাবা ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারেন না। ডান পা ফুলে যাচ্ছে। চিকিৎসা করার মতো বাড়িতে টাকা নেই। আইসক্রিম বিক্রি করার পর টাকা জমিয়ে বাবার চিকিৎসা করাব। অর্ধেক টাকা সংসারের খরচ জোগাতে ব্যয় করি। বাকিটা জমাই। এলাকারই একটি কারখানা থেকে আইসক্রিম কিনে বিক্রি করি। আগে এলাকাতেই ব্যবসা করতাম। কিন্তু গ্রামের দিকে সেভাবে আইসক্রিম বিক্রি হয় না। দুর্গাপুরে দুপুরের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যায়। কোনও দিন মলাদিঘি কোনও দিন ফুলঝোড় এলাকায় গিয়ে আইসক্রিম বিক্রি করি। এই সময় গরম বেশি হওয়ায় ব্যবসাও ভালো হয়। আমার ইচ্ছে আছে পড়াশোনা করার পর ভালো একটা চাকরি করা। তাই যত কষ্টই হোক না কেন পড়াশোনা চালিয়ে যাব। আতিকুলের বাবা শেখ নিজাম বলেন, আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। তাতে সংসার কোনওরকমে চলে যেত। কিন্তু দু’বছর ধরে পায়ে কী হল কিছু বুঝতে পারছি না। ভালো জায়গায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো ঠিক হয়ে যেত। কিন্তু সেই সামর্থ্য নেই। এখন আর কাজে যেতে পারি না। ছেলেকে আইসক্রিম বিক্রি করাতে ভালো লাগে না। কিন্তু এছাড়া কোনও উপায় নেই। ও সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে যায়। সেই সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরে। রাস্তায় কোনও জায়গায় খাওয়াদাওয়া করে। সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফেরে তখন ওর মুখের দিকে তাকানো যায় না। ওকে দেখে খুব কষ্ট হয়। তারপরেও রাতে পড়াশোনা করে। আতিকুল বলে, সারা বছর তো আর কাজ করি না। এই সময় কিছু টাকা রোজগার করতে পারলে বাবার চিকিৎসা যেমন করা যাবে, তেমনই সংসার চালানোর জন্যও টাকা জমানো যাবে। কষ্ট সহ্য করা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। পরিবারের কথা চিন্তা করে এটা আমাকে করতেই হবে!