ফুকেট ও কাঠমাণ্ডু, ২৮ মার্চ (এপি): শীত পার করে এসেছে বসন্ত। প্রয়োজন শুধু কয়েকদিনের ছুটি। তারপরই উড়ে যাওয়ার পালা থাইল্যান্ড কিংবা হিমালয়ের দেশ নেপাল। কেউ আবার একটু বেশি খরচ করে চলে যান ইউরোপের কোনও দেশে। ভ্রমণপিপাসুদের সেই ইচ্ছা এবার মাটি। কেননা আতঙ্কের নাম করোনা। এই ভাইরাসের হানায় বেসামাল গোটা এশিয়ার পর্যটন শিল্প। অতীতেও সার্স ভাইরাসের প্রকোপে পর্যুদস্ত হয়েছিল পর্যটন শিল্প। এবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস।
থাইল্যান্ডের ফুকেট কিংবা পাটায়ার কথাই ধরা যাক। বছরের প্রতিটি সময় এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। নীল সমুদ্রের জলে সান-বাথ করতে নেমে পড়েন পর্যটকরা। গত বছরও থাইল্যান্ডে প্রায় চার কোটি পর্যটক এসেছিলেন। কিন্তু এবার সেই চেনা ভিড় উধাও। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে থাই সরকার। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে থাই ভিসা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় দিন গুনছেন ভ্রমণপিপাসুরা। থাইল্যান্ডে এসে কার্যত ফেঁসে গিয়েছেন রাশিয়ার নাগরিক কেসেনিয়া ভস্ত্রিকোভা। তিনি ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু মিলে ফুকেটে ঘুরতে এসেছিলেন। কিন্তু আচমকাই লকডাউন হয়ে যাওয়ায় হোটেলেই বন্দি তাঁরা। তবে আংশিকভাবে ফুকেট বিচ খুলে দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন পর্যটকরা। কেসেনিয়া বলেন, ‘বিচ খুলে দেওয়ায় আমার ছেলে সেখানে খেলাধুলা করতে পারছে অন্তত।’ সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার পর্যটন শিল্পও করোনার জেরে মার খাচ্ছে। দেশে ফেরার বিমান না পেয়ে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে আটকে রয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার পর্যটক। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়া ঘুরতে এসে আটকে পড়েছেন অন্তত ১৭ হাজার বিদেশি পর্যটক। তাঁদের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের জন্য পর্বতারোহীরা ভিড় করে থাকেন নেপালে। করোনার জেরে নেপালে সেই চেনা ভিড় উধাও। লকডাউন ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে গোটাদেশে। বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা। এই মুহূর্তে কাঠমাণ্ডুতে অন্তত ১০ হাজার বিদেশি পর্যটক আটকে পড়েছেন। তবে জার্মান সরকার বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করে তাদের দেশের ৩০০ পর্যটককে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে যাওয়ার জন্য মূলত লুকলা বিমানবন্দর ব্যবহার করে থাকেন পর্বতারোহীরা। কিন্তু অভিযান আপাতত বাতিল করায় লুকলা বিমানবন্দরে আটকে পড়েছেন অন্তত ২০০ জন পর্বতারোহী।