দক্ষিণবঙ্গ

প্রথম দলীয় কর্মসূচিতে সকলকে নিয়ে চলার বার্তা অনুব্রত মণ্ডলের

বলরাম দত্তবণিক, রামপুরহাট: এ এক অন্য অনুব্রত! সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছেন তিনি। মুখে নেই কোনও ঔদ্ধত্যপূর্ণ রাজনৈতিক শব্দবন্ধ। ‘বাজবে চড়াম চড়াম ঢাক’, ‘গুড় বাতাসা’ কিংবা ‘রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে উন্নয়ন’—এমন সব কথা এখন তাঁর মুখে অতীত। বরং তিনি অনেক বেশি নমনীয়, অনেক বেশি সহনশীল। নিজেকে আর নেতা হিসেবে জাহির করতে চান না। দলের একজন সাধারণ কর্মী বলতেই তিনি বেশি স্বচ্ছন্দ। বিরোধ ভুলে চলতে চান সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। বৃহস্পতিবার এই বদলে যাওয়া কেষ্ট দা’কে দেখল মুরারই। 
তিহার থেকে ফেরার পর এদিন মুরারই-১ ব্লকের পশু হাটে প্রথম দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন অনুব্রত। কর্মসূচি বলতে বিজয়া সম্মিলনী। সেখানে একেবারে গলা নামিয়ে দলীয়কর্মীদের পরামর্শ দিলেন—‘সবাইকে এক সঙ্গে চলতে হবে। মন্ত্রী, বিধায়ক কেউ ঝগড়া করবেন না। জোট বেঁধে চললে আমাদের কেউই হারাতে পারবে না। বিধানসভায় আমাদের জয় নিশ্চিত।’ তাঁর এই কথার মধ্যে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরুর ইঙ্গিত পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। এর চেয়েও অনুব্রতের তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা হল ‘সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার।’ 
এদিন সেই ছবি খানিকটা হলেও ধরা পড়েছে। জেলা রাজনীতিতে অনুব্রত বিরোধী বলে পরিচিত কাজল শেখের ঘনিষ্ঠ নেতা আলি খানকে সম্মিলনীর অনুষ্ঠান মঞ্চে দেখা গিয়েছে। আলি সাহেব তৃণমূলের মাইনোরিটি সেলের রাজ্যস্তরের নেতা। অনুব্রত সাগ্রহে তাঁর উপস্থিতির কথা ঘোষণা করেছেন কর্মীদের কাছে। যা দেখে রাজনৈতির মহলের ব্যাখ্যা, অনুব্রত একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েই থেমে থাকতে চান না। নিজেও সদর্থক উদ্যোগ নিয়ে দলের আভ্যন্তরীণ যাবতীয় দ্বন্দ্ব মেটাতে তৎপর। এদিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি ত্রিদিব ভট্টাচার্য। 
গোরুপাচার মামলায় ২০২২ সালের ১১ আগস্ট গ্রেপ্তার হন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত। গত ২৪ সেপ্টেম্বর তিহার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মেয়েকে নিয়ে বোলপুরের বাড়িতে ফেরেন তিনি। সেইসময় তিনি জানিয়েছিলেন, কালীপুজো মিটলে আবার তাঁকে সক্রিয়ভাবে দেখা যাবে। ব্লকে ব্লকে যাবেন। কিন্তু তার আগেই তিনি যোগ দিলেন দলের বিজয়া সম্মিলনী কর্মসূচিতে। প্রায় দু’বছর পর এমন কর্মসূচিতে দেখা গেল তাঁকে। প্রিয় নেতাকে দেখতে কানায় কানায় ভরা ছিল পশু হাট।  
নলহাটি থেকেই রাস্তার দু’পাশ অনুব্রতর ছবি সহ ফ্লেক্সে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। কনভয় দাঁড় করিয়ে বাজনা সহযোগে স্বাগত জানান এলাকার বিধায়ক রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিং সহ কর্মীরা। তাঁর ছবি তোলা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। দর্শকাসনে জায়গা নিয়ে বিশৃঙ্খলা ও মারামারি হয়। তাতে তিনজন জখম হয়েছেন বলে খবর। পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 
অনুব্রত সবাইকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘অঞ্চল ও বুথের কর্মীদের ভরসায় মুখ্যমন্ত্রী। ভোটটা আপনারা করেন। বুথের কর্মীরাই দলটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমি অপানাদের মতো ছোট্ট কর্মী। আমি নেতা নই, আমরা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফলো করুন। কোনও হানাহানি, ঝগড়া করবেন না। সবাইকে নিয়ে চলুন। সবাইকে পাশে টেনে নিন। তাতে ভালো হবে। দলটা আরও বৃদ্ধি পাবে। আমি হোক বা মন্ত্রী, বিধায়ক কেউ কোনও জন্য ঝগড়া করবেন না। সবাই মিলে একসঙ্গে দল করব। কেউ নেতা সাজব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকুন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভালো বক্তা। অস্বীকার করা যায় না। জোট বেঁধে চললে লোকসভার থেকেও বিধানসভায় বেশি লিড হবে।’
এদিন মুরারই ২ ব্লকের হিয়াতনগরে বিজয়া সম্মিলনীতেও যোগ দেন অনুব্রত। যদিও বক্তব্যের শুরুতেই তাল কাটে। অনেক নেতা কর্মী উঠে যাওয়ায় মঞ্চের পিছনের দিক বসে যায়। ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় অনুব্রত সহ সকলে নেমে পড়েন। বসে যাওয়া অংশে চেয়ার লাগিয়ে কর্মীরা ধরে রাখেন। পরে একাই মঞ্চে উঠে অনুব্রত নিজেকে সাধারণ কর্মী হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী রায় ও কাজল শেখকে ফোন করে বলেছিলাম সবাই আসুন এই সম্মিলনীতে।’ যদিও দু’টি কর্মসূচিতে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, সুদীপ্ত ঘোষ ছাড়া মঞ্চে জেলাস্তরের তেমন কোনও নেতার দেখা মেলেনি। অনুব্রত কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের কাছে দু’বছর পর এসেছি। ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিলাম।’ সত্যিই, এই অনুব্রত কি সেই অনুব্রত? প্রশ্ন থেকেই গেল রাজনৈতিক মহলে।
3h 3m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাধায় চিন্তা ও উদ্বেগ। বেকারদের ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মপ্রাপ্তির প্রবল যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.০৬ টাকা১১১.৮৬ টাকা
ইউরো৮৯.৯১ টাকা৯৩.৩২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা