সুখী গৃহকোণ

বাঙালি সাবেকি রান্না

বাঙালি সাবেকি রান্না খেতে চাইলে তা বাড়িতেই বানিয়ে নিন। রেসিপি জানালেন গপ্পো বুড়ির হেঁশেলের দুই কর্ণধার অরিজিৎ মণ্ডল ও অর্ণব ঠাকুর।

১. নারকেল মুরগি
উপকরণ: ১ কেজি মুরগির মাংস,  কাপ নারকেল বাটা, ৩টে পেঁয়াজ কুচি, ১টা টম্যাটো কুচি, ২ টেবিল চামচ আদা রসুন পেস্ট, ২ টেবিল চামচ কাঁচা ও শুকনো লঙ্কা পেস্ট, ৩ টেবিল চামচ টক দই, ২ টেবিল চামচ জিরে ও ধনে মৌরি ড্রাই রোস্ট করে বেটে নেওয়া, ১ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো,  টেবিল চামচ কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো, ১ চা চামচ গরমমশলা গুঁড়ো, ১টা তেজপাতা ও শুকনো লঙ্কা, ১ চা চামচ গোটা জিরে, ৪ টেবিল চামচ সর্ষের তেল, নারকেল কোরা ১ কাপ।
প্রণালী: প্রথমে মুরগির মাংস ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। নারকেল বাটার পাশাপাশি সব উপকরণ একসঙ্গে বেটে নিতে হবে। একটা পাত্রে মুরগির মাংস নিয়ে টক দই, নুন, হলুদ, লঙ্কাগুঁড়ো নিয়ে এক সঙ্গে ভালো করে মেখে ৩০ মিনিট ম্যারিনেট করে রাখতে হবে। কড়াই আঁচে বসিয়ে গরম হলে তেল দিয়ে খানিকক্ষণ পর ফোড়ন দিতে হবে। তারপর পেঁয়াজ দিয়ে ভাজতে  হবে। পেঁয়াজ ভাজা হলে বাটা মশলা দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। নুন, হলুদ ও কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। মশলা কষানো হলে মুরগি দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। ভালো করে কষিয়ে নিয়ে নারকেল কোরা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ৫ মিনিট পরে ঢাকনা খুলে ভালো করে ঝোলটা ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে।  মুরগি বেশ গা মাখো মাখো হয়ে এলে নারকেল কোরা ছড়িয়ে গরম ভাতে পরিবেশন করতে হবে।

২. ইলিশের ঢাকাই ভুনা খিচুড়ি
উপকরণ: ২ কাপ গোবিন্দভোগ  চাল, ৬ টুকরো ইলিশ মাছ, ৩ চা চামচ আদা-রসুন বাটা, ৮ চা চামচ সর্ষের তেল, ১ কাপ মুগ ডাল, ৩ চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো, পরিমাণ মতো কাঁচালঙ্কা ও নুন, ৪ থেকে ৫টি এলাচ, ৪টি লবঙ্গ, ২টি দারচিনি।
প্রণালী: চাল আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে জল ঝরিয়ে নিন। ইতিমধ্যে মাছে সামান্য নুন-হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিতে হবে। এবার ওই তেলেই এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি দিন। গন্ধ বেরলে এতে আদা-রসুন বাটা দিয়ে চাল, ডাল, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে একটু নাড়তে থাকুন (মুগ ডাল কড়াইতে হাল্কা ভেজে ভালো করে ধুয়ে রাখবেন আগে থেকেই)। চাল-ডাল ভাজা ভাজা হয়ে গেলে পরিমাণ মতো জল দিন। ফুটতে শুরু করলে স্বাদ মতো নুন যোগ করুন। জল প্রায় শুকিয়ে এলে তাতে ইলিশ মাছ ভাজা ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখুন।  কয়েক মিনিট ভাপে বসানোর পর দেখবেন জলটা টেনে যাবে এবং ঝরঝরে হয়ে যাবে। তখন নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

৩. নারকেল চিংড়ির দোলমা
উপকরণ : ৪০০ গ্রাম চিংড়ি, ৫০০ গ্রাম পটল, ২ টেবিল চামচ টক দই, স্বাদমতো চিনি, নুন  চা চামচ,   চামচ হলুদগুঁড়ো, ১ টি পেঁয়াজ কুচি, ১টি পেঁয়াজ বাটা,  চা চামচ ধনে গুঁড়ো,  চা চামচ জিরে গুঁড়ো, ১ চা চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, স্বাদ মতো কাঁচালঙ্কা, প্রয়োজন মতো সর্ষের তেল, একটা নারকেল কোরানো, গোটা গরমমশলা (২ দারচিনি, ২ এলাচ), একটি তেজপাতা,   চা চামচ গরমমশলা গুঁড়ো।
প্রণালী: চিংড়ি মাছ নুন, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে মেখে ভেজে তুলে চপারে কুচিয়ে নিতে হবে। পটল চেঁছে নিয়ে পটলের মাথাটা কেটে ভালো করে ধুয়ে পটলের ভিতরের অংশ চামচের পিছনে দিয়ে খুব সাবধানে বের করে নিতে হবে। এবার পটল তেলে হাল্কা করে ভেজে নিতে হবে। সেই তেলেই পেঁয়াজ কুচি, কুচানো চিংড়ি, কাঁচালঙ্কা কুচি, জিরে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো ও নারকেল কোরা দিন। সব একসঙ্গে মিশিয়ে একটা শুকনো পুর তৈরি করে নিতে হবে। এবার ভাজা পটলের মধ্যে সেই পুর ভরে নিতে হবে সাবধানে।  
এবার তেল গরম হলে গোটা গরমমশলা ও তেজপাতা ফোড়ন দিতে হব। একটা পাত্রে টক দই, হলুদ গুঁড়ো, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, সামান্য চিনি ও নুন একটু জল দিয়ে গুলে নিতে হবে। এবার সেই মিশ্রণ তেলে দিয়ে কষাতে হবে কিছুক্ষণ। অল্প জল দিয়ে পুরভরা পটল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না করতে হবে ৫ মিনিট। নামানোর আগে গরমমশলা গুঁড়ো দিয়ে পরিবেশন করুন নারকেল চিংড়ির দোলমা।  

৪. তিল নারকেলি আলুর দম
উপকরণ:  ছোট গোল আলু সেদ্ধ ২০০ গ্রাম,  পেঁয়াজের কিমা, কাঁচালঙ্কার কিমা, ধনেপাতা কুচানো, ১ চা চামচ, কাশ্মীরি লাল লঙ্কার গুঁড়ো, ৩ চা চামচ আমচুর গুঁড়ো, নুন স্বাদ মতো, ১টা পাতিলেবু , ১০ গ্রাম তিল, আদা বাটা ২ চা চামচ, ২ টেবিল চামচ গাওয়া ঘি।
প্রণালী: ঘি গরম হলে তিল ভেজে আলাদা করে সরিয়ে রেখে দিতে হবে। এবার কড়াইয়ে পরে থাকা বাদবাকি ঘিয়ের সঙ্গে তেল মিশিয়ে গরম করে নিতে হবে। তাতে আদা বাটা, কাঁচালঙ্কার কিমা, পেঁয়াজের কিমা দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে। সব মশলায় সোনালি রং না ধরা পর্যন্ত ভাজবেন। এবার এই মিশ্রণে কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, নুন, ধনেপাতা কুচি আর সেদ্ধ আলু দিন। তার সঙ্গে একটু নারকেলের দুধ দিয়ে ভালো করে কষাতে থাকুন। বাড়তি জল দেবেন না, এটা শুকনো শুকনো হয়। গা মাখা হয়ে এলে পাতিলেবুর রস, নারকেল কোরা, ধনেপাতা কুচি আর ভাজা তিল দিয়ে কষিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন তিল নারকেলি আলুর দম।  

৫. রুই কমলা
উপকরণ: ৪ টুকরো রুই মাছ,  চা চামচ কালো জিরে, ২টি শুকনো লঙ্কা, ১ চা চামচ আদা বাটা, ১টি টম্যাটো পেস্ট করা, ১ চা চামচ জিরে গুঁড়ো, ১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ৩-৪টি কাঁচালঙ্কা,  কাপ কমলালেবুর রস,  চা চামচ শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো, ১ চা চামচ গরমমশলা গুঁড়ো, ৩-৪ টেবিল চামচ, প্রয়োজন অনুযায়ী সর্ষের তেল, স্বাদ অনুযায়ী নুন।
প্রণালী: প্রথমে মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নুন আর হলুদ মাখিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। এবার একটা ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে তাতে মাছগুলো দিয়ে দিন আর বেশ হাল্কা বাদামি করে ভেজে তুলে রাখুন। এবার ওই একই  ফ্রাই প্যানেই মাছ ভাজার তেলের সঙ্গে আরও খানিকটা প্রয়োজন মতো তেল দিন। এবার তেল গরম হলে তাতে কালো জিরে আর শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে দিন। যখন গোটামশলা থেকে ভালো গন্ধ বেরতে শুরু করবে আর মশলার রং পাল্টে যাবে তখন তার মধ্যে আদাবাটা দিয়ে দিন। ভালো করে খুন্তি দিয়ে নাড়িয়ে থাকুন। আদাবাটার কাঁচা গন্ধ চলে গেলে তাতে টম্যাটো পেস্ট আর সব গুঁড়ো মশলা আর স্বাদমতো নুন দিন। অল্প উষ্ণ গরম জল মশলার সঙ্গে ৩-৪ মিনিট মশলাকে ভালো করে অল্প আঁচে কষিয়ে নিন। এবার এক কাপ বা তার কম বা বেশি (যেমন গ্রেভি পছন্দ) জল দিয়ে দিন ফ্রাই প্যানে আর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মাঝারি আঁচে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।  এরপর ঝোল ভালো করে ফুটে উঠলে তাতে মাছ দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে ১০-১২ মিনিট ঢাকনা দিয়ে ভালো করে রান্না করুন। এবার ঢাকনা খুলে আঁচ একদম কমিয়ে কমলা লেবুর রস মিশিয়ে দিন। তারপর তা দুটো ফুট খাইয়ে নিন। একদম শেষে গরমমশলা আর কাঁচালঙ্কা ভালো করে মিশিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। কিছুক্ষণ গ্রেভিটা রেখে দিন। তারপর কড়াই থেকে নামিয়ে নিন।

৬. মোচার শামি কাবাব
উপকরণ: একটি মোচা কুচিয়ে সেদ্ধ করে নেওয়া, ১২৫ গ্রাম ছোলার ডাল, ২টি ছোট পেঁয়াজ, ১ চা চামচ আদা বাটা, স্বাদমতো নুন ও মিষ্টি, ১ চা চামচ তেল।
প্রণালী: ছোলার ডাল আগের রাতে ভিজিয়ে রেখে বেটে নিতে হবে।  পেঁয়াজও বেটে নিতে হবে। এইবার সেদ্ধ করা মোচা জল ঝরিয়ে চটকে বা বেটে নিতে হবে। তার সঙ্গে ছোলার ডাল বাটা আদা বাটা পেঁয়াজ বাটা নুন ও মিষ্টি যোগ করে নিতে হবে। এই মোচা বাটার মিশ্রণটা থেকে ছোট ছোট লেচি বার করে নিন। তারপর তা টিকিয়ার আকারে গড়ে নিন। অনেকটা মাটন শামি কাবাবের মতো করে গড়ে নিতে হবে। টিকিয়া আকারে গড়ে নেওয়ার পর তা কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। ইতিমধ্যে ফ্রাই প্যানে তেল ব্রাশ করে দিয়ে তা গরম করে নিতে হবে। এবার মোচার কাবাবগুলো এপিঠ ওপিঠ সেঁকে নিতে হবে। তাহলেই  তৈরি হয়ে যাবে মোচার শামি কাবাব।

৭. চাল পটল
উপকরণ: পটল ৬-৭ টা, আলু ৩-৪ টা, গোবিন্দভোগ চাল এক মুঠো, তেজপাতা, গোটা গরমমশলা ২ টো এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি, গোটা জিরে, নুন, হলুদ, চিনি, জিরে গুড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো, ঘি, সাদা ও সর্ষের তেল, কাজু ও কিসমিস, গরমমশলা গুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা ৪টি, টম্যাটো ২টি, আদা বাটা ২ চামচ, শুকনো লঙ্কা।
প্রণালী: গোবিন্দভোগ চাল ধুয়ে জল ঝড়িয়ে নিতে হবে। এবার কড়াইয়ে সাদা তেল দিয়ে কাজু-কিসমিস দিয়ে নেড়েচেড়ে তাতে চালটা দিয়ে নাড়তে হবে। চালটা ভাজা ভাজা হলে আলাদা করে তুলে নিতে হবে। কড়াতে আবার সর্ষের তেল দিয়ে তাতে ডুমো করে কেটে রাখা আলু, পটোল দিয়ে ভালো করে ভেজে আলাদা করে সরিয়ে রাখতে হবে। তেলে এবার গোটা জিরে, ২টো তেজপাতা, ২টো শুকনো লঙ্কা গোটা গরমমশলা দিয়ে ভেজে নিয়ে তাতে আদা বাটা, নুন, হলুদ, জিরে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে কষিয়ে অল্প জল দিতে হবে। এবার তাতে ভাজা পটোল, আলু, চাল, কাজু, কিসমিস দিয়ে নেড়ে টম্যাটো কুচি ও দুটো কাঁচালঙ্কা দিয়ে ও চিনি দিয়ে, অল্প জল দিয়ে ঢেকে রান্না করতে হবে। চালটা সেদ্ধ হলে এবং কড়াই থেকে তেল ছাড়লে ১ চামচ ঘি ও গরমমশলা গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে নামান। গরম গরম পরিবেশন করুন চাল পটোল।

৮. কই মাছের হরগৌরী
উপকরণ: কই মাছ, জিরে বাটা, সর্ষে বাটা, কাঁচালঙ্কা গোটা, কাঁচালঙ্কা বাটা, রসুন বাটা, পেঁয়াজ বাটা, স্বাদমতো নুন, চিনি, তেঁতুল বাটা, সর্ষের তেল। 
প্রণালী: প্রথমে কই মাছগুলোকে ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর রসুন বাটা, পরিমাণমতো নুন ও হলুদ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিয়ে ১০ মিনিটের জন্য সরিয়ে আলাদা করে রাখুন। 
এবার কড়াইতে সর্ষের তেল ভালো করে গরম করে নিন, এরপর ভালো করে মাছগুলো ভেজে তুলে নিন। সেই মাছ ভাজার তেলেই কাঁচালঙ্কা বাটা, সর্ষে বাটা দিয়ে দিন তারপর পরিমাণমতো হলুদগুঁড়ো দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ মশলাগুলিকে নুন দিয়ে নাড়াচাড়া করে কষিয়ে নিন। এবার ভাজা মাছগুলোকে সেই বাটামশলার মধ্যে দিয়ে দিন। এরপর আবার কড়াইতে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ বাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, নুন এবং অল্প জল দিয়ে কষিয়ে নিন।  মশলা একটু কষে এলেই তাতে দিয়ে দিন চিনি আর তেঁতুল বাটা। এবার মাছগুলোর উল্টোপিঠে তেঁতুলের মিশ্রণটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন। নামানোর আগে উপরে একটু ধনেপাতা ছড়িয়ে দিন। 

৯. কাঁচা আম দিয়ে মাংস
উপকরণ: পাঁঠার মাংস  ৭৫০ গ্রাম, রসুন ১০ কোয়া, মরিচ পাঁচটি, আদা কুচি  চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা আমের রস (স্বাদ অনুযায়ী), সর্ষের তেল  কাপ, চেরা কাঁচালঙ্কা।
প্রণালী: প্রথমেই একটি মিক্সিং জারে টুকরো করে রাখা আদা, রসুন, মরিচ ও পেঁয়াজ দিয়ে একটু দানা দানা মতো রেখে পেস্ট করে নিন। তারপর একটি প্যানে দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল দিয়ে সেটিকে ভালো করে গরম করে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ হাল্কা করে ভেজে নিন। এরপর আগে থেকে বেটে রাখা মশলা দিয়ে তাতে পরিমাণ মতো হলুদগুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিন। ভালোভাবে কষানো হয়ে গেলে মাংস দিয়ে দিন। এবার লবন দিয়ে ভালো করে মাংসটাকে কষিয়ে নিন। কষানো হয়ে গেলে এর মধ্যে কাঁচা আমের রস দিয়ে দিন। এরপর এককাপ গরম জল দিয়ে ঢেকে রান্না করুন। এবার ভালোভাবে মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চেরা কাঁচালঙ্কা দিয়ে নামিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন কাঁচা আম দিয়ে মাংস।

১০. মাছের ডিমের তেল ঝাল
উপকরণ: ২ কাপ মাছের ডিম, দেড় কাপ পেঁয়াজ কুচানো, স্বাদমতো লবণ, ১ টেবিল চামচ বাটা মশলা (জিরে, ধনে, আদা, রসুন), পরিমাণ মতো সাদা তেল (ভেজে তুলে নেওয়ার জন্য), ১ চা চামচ হলুদগুঁড়ো,  কাপ বেসন, দুটো কাঁচালঙ্কা কুচি,   চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো, ১ টুকরো পাতিলেবু, ধনেপাতা কুচি।
প্রণালী: প্রথমে মাছের ডিম পরিষ্কার করে ধুয়ে  জল ঝরিয়ে নিন। এবার মাছের ডিমের সঙ্গে সমস্ত উপকরণ ও এককাপ পেয়াঁজ কুচানো একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে মাখিয়ে নিন। কড়াই বসিয়ে তেল গরম করে বড়া ভেজে তুলে নিন। এবার কড়াতে তেল গরম করে আদা বাটা, রসুন বাটা, নুন, ধনেপাতা কুচি, কাঁচালঙ্কা কুচি দিয়ে ভালো করে কষিয়ে মাছের বোরগুলো দিয়ে দিন।  একদম শুকনো শুকনো গা মাখা হলে পরিবেশন করুন।  

১১. ফুলকপির মালাইকারি
উপকরণ: ১টি মাঝারি সাইজের ফুলকপি, ১ গ্লাস নারকেল দুধ, ৩ টেবিল চামচ পেঁয়াজ বাটা, ১ টেবিল চামচ আদা বাটা, ৪টি ছোট এলাচ,   ইঞ্চি দারচিনির টুকরো, ৮/৯টি গোলমরিচ, ৪টি লবঙ্গ, ১টি তেজপাতা,  চা চামচ গুঁড়ো লঙ্কা, ১চা চামচ ধনে গুঁড়ো,  চা চামচ জিরে গুঁড়ো,   চা চামচ গরমমশলা গুঁড়ো, স্বাদমতো নুন, ৩ টেবিল চামচ সাদা তেল (ঘিও ব্যবহার করা যেতে পারে), ১ কাপ জল।
প্রণালী: ফুলকপি টুকরো করে কেটে নুন জলে ভিজিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। কড়াতে তেল গরম করে হালকা লাল করে ভেজে নিতে হবে। নারকেল দুধ, পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, গোটা গরমমশলা, গুঁড়োমশলা  ও তেজপাতা ফোড়ন দিতে হবে। এবার পেঁয়াজ বাটা হালকা লাল করে কষিয়ে নিয়ে আদা বাটা ও গুঁড়োমশলা যোগ করে ১ মিনিট কষিয়ে নিয়ে  কাপ জল মিশিয়ে ফুটতে দিতে হবে। জল শুকিয়ে মশলা থেকে তেল ছাড়বে। এবার নারকেল দুধ মিশিয়ে ফুটতে দিতে হবে। গরমমশলা গুঁড়ো ওপর থেকে ছড়িয়ে দিতে হবে। কষানো মশলাতে ফুলকপি ভাজা টুকরো যোগ করে হালকা হাতে নাড়াতে হবে।  কাপ জল মিশিয়ে ঢেকে দিতে হবে যাতে করে ফুলকপি সেদ্ধ হয় আর ফুলকপির মধ্যে মশলা মিশে গেলে নামিয়ে নিতে হবে।  

১২. মরিচ চিংড়ির পোলাও
উপকরণ: গোবিন্দভোগ চাল ২০০ গ্রাম, মাঝারি চিংড়ি সাদা তেলে ভেজে নেওয়া  ৮টা, ঘি, সাদা তেল, গোটা গোলমরিচ  চা চামচ, গোটা শুকনো লঙ্কা ৪টি, তেজপাতা ২টি, নুন, কিশমিশ ১০ গ্রাম, চিনি, পেঁয়াজ বেরেস্তা, গোটা গরমমশলা ৫ গ্রাম।
প্রণালী: তেল আর ঘি গরম হলে গোটা শুকনো লঙ্কা আর তেজপাতা ফোড়ন দিন। এবার কিশমিশ দিয়ে হালকা আঁচে ভেজে নিন।  তারপর ভাজা চিংড়ি মাছ দিয়ে কিছু ভেজে, তারপর ভেজানো চাল দিয়ে ভাজতে হবে।  কিছুক্ষণ ভেজে নেওয়ার পর স্বাদমতো নুন, মিষ্টি আর জল দিয়ে অল্প আঁচে ফুটতে দিতে হবে। এবার ঝরঝরে হয়ে গেলে বেরেস্তা দিয়ে পরিবেশন করুন মরিচ চিংড়ির পোলাও।  

১৩. ডিমের হিঙ্গি
উপকরণ: সেদ্ধ  ডিম ৪টি, হিং দু’চিমটে, পেঁয়াজ বাটা ৪ চা চামচ, লঙ্কার গুঁড়ো ১ চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চামচ, রসুন বাটা ১ চামচ, টম্যাটো বাটা ১ চামচ, গরমমশলা বাটা ১ চামচ, চেরা কাঁচালঙ্কা ২ টো, গাওয়া ঘি ২ চামচ, নুন  স্বাদমতো। 
প্রণালী: ঘি গরম হলে হিং ফোড়ন দিতে হবে। এবারে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে। তারপর রসুন বাটা, হলুদগুঁড়ো, লঙ্কার গুঁড়ো, নুন জল দিয়ে ভালো করে গুলে নিতে হবে। পেঁয়াজ হালকা বাদামি করে ভেজে নিতে হবে। 
ভাজা হলে মশলা দিয়ে এবং টম্যাটো বাটা দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে।  এবারে সেদ্ধ ডিম দিয়ে কিছুক্ষণ কষে নিতে হবে। তেল ছাড়তে শুরু করলে গরম জল দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। জল শুকিয়ে এলে গরমমশলা বাটা ও গাওয়া ঘি, চেরা লাল লঙ্কা দিয়ে পরিবেশন করুন ডিমের হিঙ্গি।  

১৪. বোয়াল মাছের  বিরিয়ানি
উপকরণ: বোয়াল মাছের পিস  ৪টি, দেরাদুন চাল ২০০ গ্রাম, কেশর রং  ১ চিমটে, গোটা গরমমশলা ১০ গ্রাম, তেজপাতা ২টো, হলুদ ২ চামচ, বেরেস্তা ২ বড় চামচ, ঘি ৪ চামচ, সাদা তেল  দু’চামচ, কিসমিস  ৫ গ্রাম, সেদ্ধ ভাজা আলু ৪টি, নুন  স্বাদমতো, কেওড়া জল ১ চামচ, মিঠা আতর  ১ চামচ, বিরিয়ানি মশলা ৪ চামচ, চিনি ২ চামচ।
প্রণালী: চাল সেদ্ধ করে নিতে হবে এবং অর্ধেক চালে কেশর রং মিশিয়ে আলাদা করে রেখে দিতে হবে। বোয়াল মাছে নুন-হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিতে হবে। মাছ ভাজার সেই তেলে নুন-হলুদ মাখিয়ে আলু ভেজে নিতে হবে।  এবার কড়াতে ঘি আর তেল একসঙ্গে মিশিয়ে গরম করে নিয়ে তাতে তেজপাতা, গোটা গরমমশলা, ফোড়ন দিতে  হবে।  এবার সাদা ভাত একটা স্তর দিয়ে, ভাজা বোয়াল মাছ, নুন, ভাজা পেঁয়াজ, কেওড়া জল, মিঠা আতর, কেশর ভাত দিয়ে একই ভাবে আরেকটি স্তর করতে হবে। সব শেষে ভাজা আলু, নুন, বিরিয়ানি মশলা, ভাজা পেঁয়াজ, কেওড়া জল, মিঠা আতর দিয়ে সাজিয়ে ডোম আকারের পাত্রে রান্না করতে হবে ১০ মিনিট।  ঢাকা খুলে এদিকে ওদিকে উল্টে, নেড়ে নিয়ে পরিবেশন করতে হবে ওপর থেকে বেরেস্তা দিয়ে। বোয়াল মাছের বিরিয়ানি তৈরি।  

১৫. ইলিশ বেগুনের তেল-ঝাল
উপকরণ: ইলিশ মাছের পেটি ২টো, ছোট লম্বা বেগুন ২টো  ৪ ফালা, সর্ষে বাটা  ২  চামচ, সর্ষের তেল  ২ চামচ, নুন স্বাদমতো, হলুদ গুঁড়ো  ১ চামচ, রসুন বাটা ১ চামচ, কালো জিরে   চামচ, কাঁচালঙ্কা বাটা  ১ চামচ।
প্রণালী: ইলিশ মাছে নুন হলুদ মাখিয়ে ভেজে রাখতে হবে।  সেই তেলে বেগুনে নুন-হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিতে হবে।  এবার তেল গরম করে কালো জিরে ফোড়ন দিতে হবে।  তারপর, কাঁচালঙ্কা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়ো, নুন, রসুন বাটা দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে। অল্প জল দিয়ে কষিয়ে নিয়ে ভাজা মাছ আর ভাজা বেগুন দিয়ে হালকা আঁচে রান্না করতে হবে।  যখন জল শুকিয়ে আসবে ওপর থেকে সর্ষের তেল ছড়িয়ে শুকনো শুকনো পরিবেশন করতে হবে ইলিশ বেগুনের তেল ঝাল।  
ছবি: গপ্পো বুড়ির হেঁশেলের সৌজন্যে
22d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা