সাপ্তাহিক বর্তমান

রহস্য মুক্তি পোস্টমর্টেমে!

শুধুই মৃতদেহ কাটাছেঁড়া নয়, অপরাধীকে চিহ্নিত করতে জরুরি হয়ে পড়ে পারিপার্শ্বিক প্রমাণও। জানাচ্ছেন প্রবীণ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ অজয় গুপ্ত

ফরেনসিক এক্সপার্ট হিসেবে চিকিত্‍সক চন্দন সেন, চিকিত্‍সক সুশীল পালের পোস্টমর্টেম আপনিই করেছিলেন। আর আপনার করা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের কারণে সেই সময় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল!
ডাঃ চন্দন সেন আর সুশীল পালের ঘটনার মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল খুব কম। ২০০৩ সালে ঘটে ডাঃ চন্দন সেনের ঘটনাটি। পরের বছর ঘটে ডাঃ সুশীল পালের ঘটনা। ডাঃ চন্দন সেন রাণাঘাট হাসপাতালে সার্জেন হিসেবে কাজ করতেন। ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এক রাতে হাসপাতালেরই এক কর্মীর বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন। আর সেই কর্মীর বাড়ির পাশে পুকুরেই তাঁর মৃতদেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়! আর ২০০৪ সালের জুলাই মাসের প্রথমদিকের কথা। হাওড়ার বাগনানের কাছে সরস্বতী খালে একটি মৃতদেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়। পুলিস আমার কাছে সেই মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে ময়নাতদন্তের জন্য। মৃতদেহ নিয়ে যে পুলিস অফিসার এসেছিলেন, তিনি আমাকে জানান, মৃতদেহের পকেটে থাকা মানিব্যাগ থেকে ভিজিটিং কার্ড মিলেছে। ভিজিটিং কার্ডে লেখা আছে ডাঃ সুশীল পাল।

ডাঃ চন্দন সেনের মৃত্যু ও আপনার করা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
হ্যাঁ। অভিযুক্তদের দাবি ছিল ডাঃ সেন পুকুরের ধারে সিগারেট ধরাতে গিয়ে মদের নেশার ঘোরে পুকুরে পড়ে মারা গিয়েছেন। ডাঃ সেনের মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবেই। আমার করা রিপোর্ট নিয়ে তাদের বক্তব্য ছিল, জলে ডোবার একটা সাধারণ দুর্ঘটনাকে আমি মার্ডার হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি! অথচ কেউ পুকুরে ডুবে গেলে রেসপিরেটরি ট্র্যাক্টে বা শ্বাসনালীতে জল থাকার কথা। জল ঢুকেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়! অর্থাৎ পোস্টমর্টেমে ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালীতে জল পাওয়া যাবে। আর যদি কেউ গলা টিপে বা তার পেঁচিয়ে অথবা যে কোনওরকমভাবে নাক-মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে থাকে, সেক্ষেত্রেও পোস্টমর্টেমে গলায় রক্ত পাওয়া যাবে! কিন্তু, গলায় রক্ত পাওয়া গেল না। আবার শ্বাসনালীতে পুকুরের জল, কাদাও মিলল না! অর্থাৎ ডাক্তার সেনকে গলায় চাপ প্রয়োগ করে শ্বাসরোধ করা হয়নি। আবার জলে ডুবেও তাঁর শ্বাসরোধ হয়নি। তাহলে? শ্বাসরোধ হল কীভাবে? তাছাড়া শরীরে একাধিক জায়গায় কালশিটে মিলল কেন! নিশ্চয় একাধিক ব্যক্তি বলপ্রয়োগ করেছিল। আর খাবারের প্যাকেট দিয়ে আরও একজন ব্যক্তি ডাক্তারবাবুর মাথা ও মুখ চেপে ধরেছিল! তারপর প্লাস্টিক ব্যাগের হ্যান্ডেল দুটো ধরে ফাঁস দেওয়ার কারণে ঘাড়ের কাছে, গলার দু’পাশে লম্বা কিন্তু সরু কালশিটে পড়ে গিয়েছিল!

ডাঃ সুশীল পালের পোস্টমর্টেমের কথা শুনে মনে হয়েছিল, খুনের রহস্য উন্মোচনে মৃতের পোশাক খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ?
নিশ্চয়। পোশাক থেকেই বহুসূত্র আবিষ্কার করা যায়। পোশাক থেকে স্টিচলাইনে কতটা ফোর্স পড়েছে, তা জানা সম্ভব! তা থেকেও মৃত্যুর আগে পর্যন্ত  কী কী ঘটনা ঘটেছে সেটাও বোঝা যায়। সবটাই হয় গাইডলাইন মেনে। ডাঃ সুশীল পালের ক্ষেত্রে যেমন দেখা গিয়েছিল শার্টের বোতামের ঘরগুলো বেশ বড় হয়ে গেছে। বোতাম ছেঁড়াও রয়েছে। এমনকী জামার কিছু জায়গায় সেলাই বেশ আলগা হয়েও আছে! সাধারণত একাধিক লোকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হলেই জামার হাল এমন হয়। আবার মৃতের পোশাকের ভিতরেও এমন কোনও ছোট্ট জিনিসও থাকতে পারে যা খুনির কাছে পুলিসকে পৌঁছতে সাহায্য করতে পারে। ডাঃ পালের পরনের প্যান্টের স্টিচ লাইন বের করতেই দেখা গেল, স্টিচলাইনের ভিতরে একটা ছোট্ট লুকনো পকেট রয়েছে। সেখানে থেকে বেরল সিকো গোল্ডেন ওয়াচ। আসলে ডাঃ পাল একজন গাইনিকোলজিস্ট ছিলেন। স্ত্রীরোগের চিকিৎসকদের মাঝেমধ্যেই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ডাক আসে হাসপাতাল, নার্সিংহোম থেকে। তাঁদের ছোটখাট অনেক ধরনের অপারেশন করতে হয়। তাই হাসপাতাল থেকে ডাক এলে তাঁরা ওটিতে ঢোকার আগে আংটি, ঘড়ি পকেটের ভিতরে অ্যান্টি পকেটে ঢুকিয়ে রাখেন। 
অর্থাত্‍ ডাঃ  পাল, খুন হওয়ার আগে অপারেশন করার জন্যই হাতের ঘড়ি খুলে অ্যান্টি পকেটে ঢুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু আর ঘড়ি পরার সুযোগ পাননি! তত্‍কালীন পুলিস অফিসারদের জানিয়েছিলাম, সম্ভবত তিনি কোনও একটি নার্সিংহোম বা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে একটা অপারেশন করার জন্য তৈরি হয়েছিলেন। কিন্তু অপারেশন করতে পারেননি। অথবা অপারেশন থিয়েটারেই কোনও একটা ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার কারণেই সম্ভবত ওই নার্সিংহোমে ওঁর মৃত্যু হয়। ওঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন আছে! আরও বলেছিলাম, ডাঃ পালের নিথর দেহ সরস্বতী খাল থেকে উদ্ধার হলেও, ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে বালি ব্রিজের নীচ থেকে। সম্ভবত বালিতেই রয়েছে সেই নার্সিংহোম। এরপর খুব দ্রুত ওই নার্সিংহোম চিহ্নিত হয়। খুনিরাও ধরা পড়ে।

মৃতদেহের ডিসেকশনের সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখতে হয়?
এক কথায় সব কিছু। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি। এমনকী যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন তিনি কীভাবে শায়িত ছিলেন, পাশ ফিরে হলে কোনদিকে, উপুড় হয়ে নাকি চিত্‍ হয়ে। মৃতের হাত শরীরের মিড লাইন থেকে কতটা দূরে রয়েছে তা দেখতে হয়। মৃতের শরীরে একটা বোতাম পাওয়া গেলে সেই বোতাম কোথায় কীভাবে ছিল তারও নোট রাখতে হয়। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়ও অপরাধীর কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে সাহায্য করে। খুব সামান্য বিষয়েরও ফরেনসিকে বিপুল গুরুত্ব রয়েছে। কেন ছোট ছোট বিষয়গুলি বোঝার দরকার পড়ে? ধরা যাক পিছন থেকে কোনও ব্যক্তিকে গুলি করা হল। ঠিক গুলি করার আগে তিনি ঘাড় ঘুরিয়ে খুনির দিকে তাকিয়েছিলেন আর একটা হাত তুলে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। সেক্ষেত্রে মৃত্যুর পরে তাঁর হাতের অবস্থান যেমন হবে, তেমনটি হবে না বাধাহীনভাবে মারা গেলে।
ডিসেকশনের কথা বরং একটা উদাহরণ দিয়ে বলি। ধরা যাক একজন ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া গেল পিঠে গুলিবিদ্ধ অবস্থায়। মৃতদেহ এল ময়নাতদন্তের জন্য। দেখা গেল আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বেরনো বুলেট পিঠের পাঁজরের দুটি হাড়ের মধ্যে দিয়ে ঢুকেছে। এক্ষেত্রে দেখতে হবে এই বুলেট কি শরীরের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে? নাকি সামনে গিয়ে আটকে আছে? ১২টি পাঁজরার মধ্যে কোন জায়গায় বুলেট আছে? বুলেট কি বেরিয়ে হাতে লেগেছে? ত্বকে পোড়ার ভাগ কতখানি, আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বেরনো ধোঁয়া থেকে ত্বকে কেমন প্রভাব পড়েছে ইত্যাদি।
এমন নানা ছোট ছোট প্রশ্ন এবং তার থেকে বেরিয়ে আসা উত্তর থেকেই জানা যায় কত কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়মিত ব্যবহার করা হতো কি না, আগ্নেয়াস্ত্র কমজোরি ছিল নাকি শক্তিশালী ইত্যাদি। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সম্ভাব্য অপরাধী সম্পর্কে তথ্যের জোগান দেয়।

আচ্ছা এমনও তো হয় যে খুন করা হয়েছে এক জায়গায় আর তারপর দেহ অন্য জায়গায় এনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে? দুর্ঘটনা বা আত্মহত্যার রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে?
•• অপরাধী যতই খুন লুকোনোর চেষ্টা করুক, প্রমাণ থাকবেই। প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাও হয়। খুনের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকলে  মাথা বেশি খাটায় তারা। বেশি বেশি প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে! সেসব চেষ্টাও ধরা পড়ে যায়। অনেকসময় হয়তো দেখা যায় খুনি একজন ব্যক্তির গলায় গুলি চালিয়ে তাকে রেললাইনে ফেলে দিয়ে চলে এল। যেন গলার উপর দিয়ে ট্রেনের চাকা চলে গেলে খুনের সব প্রমাণ লোপাট হয়ে যাবে! হাড়গোড়ও গুঁড়ো হয়ে যাবে! কিছুই আর বোঝা যাবে না! এমনটা হয় না। প্রমাণ থাকেই। এমন ক্ষেত্রে শুধু মৃতদেহ নয়, তার সঙ্গে আশপাশে কী কী জিনিস পড়ে আছে তার দিকেও নজর দিতে হয়। ছবি তুলতে হয়। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হয় আশপাশ। আশপাশে পড়ে থাকা নানা বিষয়ে নজর দিলেই প্রকৃত ঘটনা বোঝা সম্ভব হয়। 
একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে। ঘটনাটা পুরুলিয়ার। আমি ময়নাতদন্ত করিনি। মতামত দিয়েছিলাম। আপাতভাবে ঘটনাটি একটি ট্রেনের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা ও গাড়িচালকের ট্রেনের চাকায় কাটা পড়ে মৃত্যুর। তবে প্রকৃত ঘটনা কি সত্যিই তাই ছিল? ৩ বছর পর, কোর্টের অর্ডারে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে ঘটনাটির পুনরায় পর্যবেক্ষণ করি। প্রাথমিকভাবে শোনা যায়, পাহারাহীন, রেলিংহীন লেভেল ক্রসিং-এ একটা গাড়ি উঠে এসেছিল রেললাইনে। ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে সেই গাড়ির। গাড়ির ভিতরে একজন ডাক্তার ছিলেন! তিনিই রেলে কাটা পড়েন। এখন প্রশ্ন হল, যে চিকিত্‍সকের মৃতদেহ মিলল, তিনি কি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেলেন নাকি তাকে আগে খুন করা হয়েছিল? আদৌ তিনি গাড়ির ভিতরে ছিলেন? নাকি রেললাইনে গাড়ি একজায়গায় রাখা হয়েছিল আর খুন করার পর ডাক্তারবাবুর বডি এক জায়গায়? কেন এমন প্রশ্ন উঠছে? কারণ, মৃতদেহের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল।
ড্রাইভার ও গার্ডের সঙ্গে কথা বলি। বোঝার চেষ্টা করি ধাক্কা লাগার আগে গাড়ির মুখ কোনদিকে ছিল। তার থেকেও অনেক প্রশ্নের উত্তর জানার কথা। পুলিস অফিসারদের সঙ্গে কথা বলি। পুরনো ছবি দেখি। তাতেই নজরে আসে অকুস্থলে রেললাইনের পাশে মাটিতে গাড়ির চাকার অদ্ভুত দাগ! ওই চাকার দাগেই বোঝা যায় ব্যাক গিয়ারে ফেলে গাড়িটাকে অপেক্ষাকৃত উঁচু রেললাইনে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন ব্যাক গিয়ারে গাড়ি চালানো হয়েছে? আসলে গাড়ি চালাতে পারেন এমন লোকেরা জানেন গাড়ির ব্যাক গিয়ার হল সবচাইতে শক্তিশালী গিয়ার। ঢালু কিন্তু উঁচু জায়গায় গাড়ি তুলতে হলে তাই ব্যাক গিয়ার ব্যবহার করেন ড্রাইভাররা! তা একজন ডাক্তারবাবু বেঁচে থাকা অবস্থায় কেন ব্যাক গিয়ায়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে রেললাইনে তুলবেন, তা বেশ ভাবনার বিষয় তাই না? অতএব প্রমাণ থাকে। নজর করে দেখতে হয়।  

 আজকাল ধর্ষণ এবং খুন অতিপরিচিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্ষণ হয়েছে তা বোঝার উপায় কী?
একেবারে প্রাথমিক বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর বয়স কত? যেখানে মৃতদেহ পড়ে আছে, তার আশপাশে জিনিসপত্রের অবস্থা কেমন, বিছানায় কি ধস্তাধস্তির চিহ্ন আছে? এমন কোনও প্রমাণ কি বিছানার উপর আছে যাতে বোঝা যায় মৃতার উপর বলপ্রয়োগ হয়েছিল ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে! শরীরে আঘাত আছে? সবকটি প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হলে বোঝাই যাচ্ছে ঘটনা একটা ঘটেছে। এছাড়া ব্যক্তিগত অঙ্গ ও তার পাশ থেকে যে ফ্লুইড সংগ্রহ করা হয়েছে তা বিশ্লেষণের জন্য ল্যাবরেটেরিতে পাঠানো যায়। ডিএনএ অ্যানালিসিস করলেই বোঝা যাবে মূল ঘটনা। তাছাড়া একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন কি না তাও জানা সম্ভব। 
এছাড়া যিনি অত্যাচারিত হচ্ছেন তার নখেও অত্যাচারী ব্যক্তির কোষ, কলা লেগে থাকার সম্ভাবনা থাকে। সেখান থেকেও ডিএনএ পরীক্ষা করা যেতে পারে। এমনকী দেহ, বিছানা থেকে নানা এনজাইমের পরীক্ষাও করা যায়। 

শোনা যায় ছাদ থেকে ফেলে দিলে নাকি খুন না আত্মহত্যা তা বোঝা যায় না। সত্যিই কি তাই?
ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া বা ‘ফল ফ্রম এ হাইট’-এর কেসগুলো খুব গোলমেলে। এই জন্য এই ধরনের কেস-এ অনেক খুঁটিয়ে তদন্ত করা দরকার। কারণ কোনও ব্যক্তিকে অজ্ঞান করেও ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হতে পারে। আবার, ছাদ থেকে কেউ দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারেন। তবে যাই হোক না কেন, বিষয়টি খুন বা আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা তা বের করা যায়। ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর বেশিরভাগ ঘটনাগুলির ক্ষেত্রেই দেখা যায় মৃতর পেটে বিষ আছে বা রয়েছে ঘুমের ওষুধ! অর্থাত্ ওই ব্যক্তিকে বিষ বা ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর তিনি যখন প্রায় অচেতন, তখনই তাকে ছাদে তুলে সেখান থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে! কারণ অতখানি বিষ বা ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিজে নিজে ছাদে ওঠা যায় না। 
এই প্রসঙ্গে একটা অদ্ভুত ঘটনার কথা বলি। বহু দিন আগের কথা। এক মাড়োয়ারি মেয়ে গয়নাগাটি, জামাকাপড় বেছে রেখেছিলেন কোনও এক বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবেন বলে। অনেকগুলো জামা একটার উপর একটা পরে পছন্দ করে রাখছিলেন। তার সঙ্গে যত গয়না ছিল সব পরেছিলেন হাতে, গলায়, কানে, নাকে...! সারা শরীরই প্রায় গয়নায় মোড়া হয়ে গিয়েছিল। সেই গয়না পরা নিয়ে নিজের বিপত্নীক বাবার কোনও একটা কথায় তার সম্মানে লাগে। মেয়েটি যেন কোথাও লুকিয়ে পড়ে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। হঠাত্‍ই উপর থেকে ভারী কিছু একটা পড়ার শব্দ পাওয়া গেল। 
সবাই দৌড়ে গিয়ে দেখল মেয়েটি বাড়ির নীচে পড়ে আছে। তার মুখে জল দিতে তার সংজ্ঞা ফিরল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। দেখা গেল গোড়ালি ভাঙা ছাড়া আর কোনও সমস্যা সেভাবে নেই! পুলিসে রিপোর্ট হয় ঘটনাটির। পুলিস ঘটনাটি বিশ্বাস করতে চায়নি। কারণ চার তলা থেকে পড়ে কেউ বাঁচবে কীভাবে? নিশ্চয় ছোটাছুটি করতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়েছে! তবু তদন্ত শুরু হল। তাতে দেখা গেল মেয়েটি ঝাঁপ দেওয়ার আগে গা থেকে গয়না খুলে ছাদে একজায়গায় রেখেছিল। আর যেখান থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল বলে দাবি, সেখানকার শ্যাওলায় পায়ের ছাপও মিলেছে! তার মানে সে ঝাঁপ দিয়েছিল! তাহলে বাঁচল কী করে? এক্ষেত্রে আমার বিশ্লেষণ হল, আসলে ওইদিন মেয়েটি একাধিক পোশাক পরেছিল। পরনে ছিল ঘাঘরার মতো পোশাক। ছাদ থেকে সামনে ঝুঁকে লাফ দেয়নি। দিয়েছে সরাসরি লাফ। ফলে মেয়েটির পোশাক ফুলে গিয়ে প্যারাশ্যুটের মতো কাজ করে, আর তার ফলেই পতনের বেগ কমে। মেয়েটির প্রাণহানি রোধ হয়।

নানা সময়েও আমরা ভিসেরা রিপোর্টের কথা বার বার শুনি। ভিসেরা রিপোর্ট কী? 
খুব সহজভাবে বললে, মৃতের দেহের ফ্লুইড ও টিস্যুর কেমিক্যাল অ্যানালিসিস। এই বিশ্লেষণে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা। একইসঙ্গে কোনও রাসায়নিক বা বিষপ্রয়োগ হয়েছে কি না তাও নির্ণয় করা যায় ভিসেরা রিপোর্ট থেকে।
সাক্ষাত্‌কার: সুপ্রিয় নায়েক
3d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মে উন্নতি। ব্যবসায় গতি বৃদ্ধি। ব্যবসা ক্ষেত্রে লগ্নিবৃদ্ধির প্রচেষ্টায় সাফল্য। সন্তান বিষয়ে কোনও সুখবর পেতে...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.৯৬ টাকা৮৬.৭০ টাকা
পাউন্ড১০৪.৫৩ টাকা১০৮.২৪ টাকা
ইউরো৮৬.৫১ টাকা৮৯.৮৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা