কলকাতা

এটা হাসপাতাল নাকি যুদ্ধক্ষেত্র! ভয়াবহ স্মৃতি রোগীর আত্মীয়দের

নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর ও কলকাতা: সদ্য সন্তান প্রসব করেছেন টুম্পা বিশ্বাস। ওয়ার্ডে ভর্তি। নীচে প্রবল চিৎকার শুনতে পেয়ে সচকিত হয়ে উঠলেন। তাঁর মনে হল, নীচে গুলি চলছে। যেন যুদ্ধ বেধে গিয়েছে! নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর। কোনওরকমে ফোন করলেন দমদম মল রোডের আশিসকুমার দাসকে। ‘তুমি কোথায়? লুকিয়ে পড়ো। নীচে তো গুলি চলছে। তোমার কিছু হয়ে গেলে আমাদের কী হবে?’ ততক্ষণে আশিসবাবু অবশ্য ইমার্জেন্সি থেকে হাসপাতালের পিছনের দিকে দৌড়ে গিয়ে অন্ধকার গলিতে গা-ঢাকা দিয়েছেন। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতেই গাইনি ওয়ার্ড লাগোয়া বন্ধ গেটের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। বললেন, ‘সকাল হলে চিকিৎসকদের পায়ে ধরে ছুটি চাইব। প্রয়োজনে সোনা-দানা, জমি জায়গা যা আছে, বিক্রি করে নার্সিংহোমে চলে যাব। এখানে আর থাকব না।’
শুধু টুম্পাদেবী বা তাঁর স্বামী নন, বুধবার রাতে এমনই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাঁদের পরিবারের অসংখ্য সদস্য। ইমার্জেন্সির গেটের সামনে রোগীর বাড়ির লোকজনের বসার জায়গা। তার সামনে তৈরি হয়েছিল ধর্নামঞ্চ। কয়েকদিন ধরে সেখানে বিক্ষোভ দেখে বিষয়টি গা-সওয়া হয়ে গিয়েছিল অনেকের। সারা দিনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কেউ কেউ। ভাঙচুর শুরু হতেই ঘুম ভেঙে গিয়েছিল অশোকনগরের আক্রম আলির। তাঁর মায়ের গল ব্লাডার স্টোনের অপারেশন হয়েছে। তিনি দেখেন, মারমুখী কয়েকজন যুবক লাঠি হাতে উন্মত্তের মতো ছুটে বেড়াচ্ছে। ধর্নামঞ্চ ও পুলিসের গাড়ি ভাঙছে। আক্রম বলেন, ‘না পালালে আমাকেও হয়তো মারধর করত। ওরা যেভাবে ভাঙচুর চালাচ্ছিল, সামনে যাকে পেত, তাকেই মেরে ফেলত। দৌড়ে পালিয়ে বেঁচেছি। জামা-কাপড়ের ব্যাগটাও নিতে পারিনি। এখনও ঘোরের মধ্যে রয়েছি।’ রানাঘাটের বাসিন্দা বিপ্লব বিশ্বাসের স্ত্রী অনুপা বিশ্বাসের কিডনির সমস্যায় চিকিৎসাধীন আর জি করে। বিপ্লববাবু বলেন, ‘ভাঙচুরের শব্দ শুনে ধড়ফড় করে উঠে পড়ি। দেখতে পাই, কয়েকজন পুলিস দৌড়ে আসছে। তাঁরা লুকনোর জায়গা খুঁজছেন। আমরা হাসাপাতালের পিছনের দিকে অন্ধকার গলির দিকে দেখিয়ে দিতে সেখানে গিয়ে ওঁরা লুকিয়ে পড়লেন।’ গোপালনগরের রামশঙ্করপুরের বাসিন্দা প্রকাশ মল্লিক বলেন, ‘কাঁদানে গ্যাসের গন্ধে নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না। চোখ জ্বালা করছিল। ওয়ার্ডে থেকে স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে ফোন করছে। মুহূর্তের জন্য ভুলে গিয়েছিলাম এটা হাসপাতাল নাকি যুদ্ধক্ষেত্র।’
হাসপাতালের নার্সরা জানালেন, সেদিন রাতে পুলিস তাঁদের কাছে গিয়েও লুকনোর জায়গা খুঁজেছিল। জায়গা দেখিয়ে দিলে সেখানে গিয়ে কয়েকজন পুলিসকর্মী লুকিয়ে পড়েন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিসের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিস সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ছিল বলেই এরকম তাণ্ডব সম্ভব হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাঁদের ডাকে সাড়া দেয়নি। এসব অভিযোগে বৃহস্পতি ও শুক্রবার হাসপাতালের ভিতরেই দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান নার্সরা।
1Month ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

অতিরিক্ত কর্মের চাপ গ্রহণ করে বেকায়দায় পড়তে পারেন। নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। আয় বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৬৮ টাকা৮৪.৪২ টাকা
পাউন্ড১০৯.৫৩ টাকা১১৩.১১ টাকা
ইউরো৯১.৭৫ টাকা৯৪.৯৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
21st     September,   2024
দিন পঞ্জিকা