কলকাতা

দেশজুড়ে ধর্মঘট পালন, আর জি কর-বিক্ষোভে হাসপাতালে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘দয়া করে বাবাকে বাঁচান... আপনারা না দেখলে মারা যাবে!’ চারদিকে ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদী ঝড়ের মধ্যে কোথাও কি হারিয়ে যাচ্ছে অসহায় কণ্ঠগুলো? রাজ্যের দূর-দূরান্ত থেকে সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলির ভরসায় ছুটে আসা সাধারণ মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, গরিব মানুষের আর্তি? না হলে কেনই বা ৮৫ বছরের নিমাই চট্টোপাধ্যায়কে বাঁচাতে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চে গিয়ে অঝোরে কাঁদতে হবে মেয়ে সোমা দাসকে? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সির ডানদিকে মঞ্চ করে কর্মবিরতি পালন করা ডাক্তারদের প্রথমে কাতর অনুরোধ করেন সোমা। তারপর বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে সোজা চলে যান সেই ক্যাম্পে। কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁদের সামনে। তাতেও কাজ না হওয়ায় ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। তখন টনক নড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের। বৃদ্ধকে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন দুই প্রতিবাদী। 
কিন্তু সোমা দাসের মতো ভাগ্যবান ছিলেন না ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দেবাশিস জানা। পূর্ব মেদিনীপুরের দেবাশিসের ঠাকুমা হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু গত তিনদিন তাঁর কোনও চিকিৎসাই হচ্ছে না। কর্মবিরতির জেরে রাউন্ড দিতেও কেউ আসেননি। এইসব দেখে ভেবেছিলেন, ঠাকুমাকে ছুটি করিয়ে নিয়ে যাবেন। কিন্তু ইমার্জেন্সি গেট আটকে চলা বিক্ষোভের জেরে কেউ তাঁকে রিলিজের কাগজটাও বের করে দেয়নি। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে টানা চার ঘণ্টা একটা কাগজের জন্য এর-ওর হাতে পায়ে ধরেছেন। কেউ এগিয়ে আসেনি। 
প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বাড়ছে। আর সেইসঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। কলকাতা থেকে শহরতলি... আর রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে দিল্লির এইমস, সফদরজং হাসপাতাল, মৌলানা আজাদ বা লেডি হার্ডিংস—সর্বত্র ছিল চিকিৎসক-পড়ুয়ার বিরুদ্ধে নৃশংসতার প্রতিবাদ। জুনিয়র ডাক্তারদের এক হওয়ার ডাক। অসংখ্য মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতির জেরে এদিন নাকালের একশেষ হতে হয়েছে রোগীদের। হাজার হাজার প্ল্যানড অপারেশন বাতিল হয়েছে। আউটডোরে পড়েছে তালা। কিন্তু কলকাতার মতো রোগী-দুর্ভোগ ছাপিয়ে যেতে পারেনি ছোট-বড় কোনও শহরই। আর জি কর, মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনালে ভোগান্তি ছিল সর্বাধিক। কারণ, এই তিন হাসপাতালেই ইমার্জেন্সিকে কর্মবিরতির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। পিজিতে গিয়ে দেখা যায়, আউটডোরে চিকিৎসকের সংখ্যা হাতেগোনা। হৃদরোগের আউটডোরে ছিলেন সবেধন নীলমণি একজন চিকিৎসক। ন্যাশনালে আউটডোর চললেও ডাক্তার খুব কম। আন্দোলনের জেরে ঠিক কতটা ভোগান্তি হয়েছে? দু’টি সরকারি পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট। ঠিক এক সপ্তাহ আগে স্বাভাবিক পরিস্থিতির সোমবারে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির আউটডোরে রোগীর সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ১০ হাজার। সেখানে এদিন কর্মবিরতির জেরে রোগী সংখ্যা ৫২ হাজার কমে গিয়েছে। তাও কর্মরত ডাক্তাররা দম ফেলার সময় পাননি। শুধু আর জি করের আউটডোরেই সোম থেকে শুক্র আসেন পাঁচ হাজারের বেশি রোগী। জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে এদিন মাত্র ৩৬৯ জন রোগী চিকিৎসা করাতে পেরেছেন। জেনারেল এবং ট্রমা ইমার্জেন্সি মিলিয়ে আর পাঁচটা দিন ‌এখানকার ‌ইমার্জেন্সিতে ডাক্তার দেখান ৬০০’র বেশি রোগী। সেখানে এদিন চিকিৎসা পেয়েছেন মাত্র ৫৩ জন! 
আজ কী হবে রাজ্যে? একই ভোগান্তি চলবে? সন্ধ্যা থেকে আর জি করে প্রায় চার হাজার আন্দোলনকারী চিকিৎসক পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে গভর্নিং বডির বৈঠক ডেকেছিলেন। তবে পরিস্থিতি শুধরানোর ইঙ্গিত মেলেনি। এর মধ্যে, আজ থেকে দেশের এক নম্বর স্নায়ুরোগ চিকিৎসাকেন্দ্র বেঙ্গালুরুর নিমহ্যানস-এ কর্মবিরতি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন ইউডিএফএও আজ থেকে এই কর্মবিরতিতে শামিল হবে বলে এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে। 
1Month ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

অতিরিক্ত কর্মের চাপ গ্রহণ করে বেকায়দায় পড়তে পারেন। নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। আয় বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৬৮ টাকা৮৪.৪২ টাকা
পাউন্ড১০৯.৫৩ টাকা১১৩.১১ টাকা
ইউরো৯১.৭৫ টাকা৯৪.৯৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
21st     September,   2024
দিন পঞ্জিকা