সিনেমা

যত কাণ্ড বেলেঘাটায়

এত লোক, তবুও থমথম করছে গোটা বাড়িটা। সদর দিয়ে ঢুকলেই দালান। ইতিউতি ছড়ানো রয়েছে শিশুদের খেলার সরঞ্জাম। সেগুলো পাশ কাটিয়ে সংকীর্ণ গলি পেরিয়ে প্রায়ান্ধকার সিঁড়ি। দোতলায় এল-প্যাটার্নের বারান্দা। বাঁদিকে ঘুরেই তিন দরজার লম্বা বৈঠকখানা। উঁকি মারতেই ধমক। ‘কী করছেন দাদা! লাইট কাটছে।’ গুঁড়ি মেরে প্রথম দরজা দিয়ে ঢুকে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর পরিস্থিতিটায় ধাতস্থ হওয়া গেল। একদিকে মেহগনি কাঠের সোফা। তার দু’দিকে গদি আঁটা চেয়ার। সোফার ডান দিকে বসে রয়েছেন বাড়ির কর্তা সৌম্যেন্দু রায়চৌধুরী। সোফায় সাবা, সুমনা ও তনুকা। সৌম্যেন্দুর  উল্টোদিকের চেয়ারে ছেলে আর্য। সোফার বিপরীত দিকে ঘরের মেঝেতে পায়চারি করছে তোপসে। 

শট ১৩, টেক ওয়ান
আর্য: আপনি আবার কারও সঙ্গে গোলাচ্ছেন। 
তোপসে: না, না। আপনিই গুলিয়ে দেবার চেষ্টা করছেন। আচ্ছা, আপনি সেন্ট জনস চার্চে গিয়েছিলেন না সেদিন? 
আর্য: সেন্ট জনস চার্চ?  আমি সেখানে কী করতে যাব? 
তোপসে: বিদেশি ছবি দেখে সেদিন যে সর্দারজির গেটআপটা নিয়েছিলেন, সেটা খামোকা রিপিট করতে গেলেন...
আর্য: না আপনি ঠিক কী বলতে চাইছেন বুঝতে পারছি না। আপনি পরিষ্কার করে খুলে বলুন। 
তোপসে: তাহলে গোটা ব্যাপারটা প্রথম থেকে রিকনস্ট্রাক করি? 
কাট!  
‘এখানে কাট কেন? ডায়লগ ছিল তো। কোনও ভুল করলাম?’ সহকারী পরিচালকের দিকে অবাক মুখে তাকিয়ে বললেন ‘তোপসে’ ওরফে ‘তপস্মিত সেন’ অর্থাৎ অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়। ‘ক্লাইম্যাক্স সিন। আউট সাইডার থাকলে হবে না’, সহকারীর ঘোষণা। অগত্যা ফ্লোর থেকে প্রস্থান। 
বেলেঘাটার কবি সুকান্ত সরণির ব্যারিস্টার বাড়িতে সেট পড়েছে অনীক দত্তর নতুন ছবি ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’-এর। মনিটরের সামনে বসে খুঁতখুঁতে পরিচালকের কিছুতেই মনঃপুত হচ্ছে না শট। টেক, রিটেক করতে করতে বেলা তিনটে। বাধ্য হয়ে লাঞ্চ ব্রেক দিলেন অনীক। ‘কলকাতা নিয়ে ছবি নয়। গল্পটার দু’টো ভাগ। একজন শিকড়ের সন্ধানে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় এসেছে। সেটাকে ধরে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। এর সূত্রগুলো রয়েছে  ষাটের দশকের কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে, উত্তরের বনেদি কলকাতায়, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান অঞ্চলে। সেখান থেকে ফেরত এসে একটা ধাঁধা বা হেঁয়ালির সমাধান করা হচ্ছে। অর্থাৎ শিকড় খুঁজে পেতে গেলে হেঁয়ালির সমাধান করতে হবে।’ কথায় কথায় ‘তোপসে’কে নিয়ে তৈরি কৌতূহলেরও জবাব দিলেন অনীক। ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষে যখন ভাবছি কী করা যায়, তখন ‘অপরাজিত’ আদৌ হবে কি না নিশ্চিত ছিলাম না। এই রকম একটা গল্প আগেই ভাবা ছিল। তাতে হালকা ফেলুদার ছোঁয়া দিয়ে প্রদোষ মিত্তির ও তাঁর মগজাস্ত্রকে সম্মান জানানো। এই ছবিতে ডিটেকটিভ কেউ নেই। তবে সিধু জ্যাঠা ও ফেলুদা মেশানো একটি চরিত্র আছে।’ 
ছবিতে আবীরের ভূমিকা ফেলুদার মতোও নয় আবার তোপসেও ঠিক নয়। তবে সংলাপে আছে, ‘চেহারা ও ব্যক্তিত্ব যা, তাতে ফেলুদা হলে মানিয়ে যেত।’ কথাটা শুনে মেকআপ ভ্যানের নিঃসঙ্গতায় একটা ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলেন আবীর। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, ‘আবার বলছি ‘সোনাদা’ করার পর থেকে ফেলুদা না করার আফসোস নেই।’ এই ছবিতে আবীরের চরিত্র তপস্মিত ফেলুদার অনুরাগী। কলোনিয়াল কলকাতা নিয়ে লেখালেখি করে। মজার ছেলে। 
অন্যদিকে বাংলাদেশের অভিনেত্রী কোয়াজি নওশাবা আহমেদের স্বপ্নপূরণের গল্প রয়েছে। ভারতে এটি তাঁর প্রথম সিনেমা। এই ছবির ‘সাবা’ চরিত্রটি পেয়ে নায়িকা উত্তেজিত। ‘আমরা বাংলাদেশে মন খারাপ হলে ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ দেখি। সেই পরিচালক আমার সঙ্গে যখন যোগাযোগ করেন, ভেবেছিলাম কেউ রসিকতা করছেন’, হেসে বললেন তিনি। ছবির অন্যান্য শিল্পী অর্থাৎ দুলাল লাহিড়ি, মিঠু চক্রবর্তী, অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরাজিতা ঘোষকে নিয়ে পরিচালকের মত, ‘একদম পারফেক্ট’।  বাম নেতা শতরূপ ঘোষ এই ছবিতে অতিথি শিল্পীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন।
প্রিয়ব্রত দত্ত
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়
8Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা