প্রচ্ছদ নিবন্ধ

লক্ষ্মীকথা 

 সমৃদ্ধির দেবী তিনি। তাঁর পাঁচালির সঙ্গে আজকের সমাজের মিল খুঁজে পান অনেকে। সেই কাহিনিই লিখলেন রজত চক্রবর্তী

পাকা ধানের গায়ে হাত বোলায় সুধা। আঙুলের ডগায় শিরশির হিম ভিজে ওঠে। হালকা শীতের চমক লাগে শরীরজুড়ে। শাড়ি জড়িয়ে তন্বী শরীর। খড় রঙের শাড়িতে সবুজ-লাল খড়কে ডুরে। লাল পাড়। গত হাটে বাপ কিনে এনেছে বাড়ন্ত মেয়ের জন্য। নতুন ধানের গোছা বেঁধে সুধা যখন চলেছে আলের পথ দিয়ে তখন সূর্য সবে উঁকি দিয়েছে কুয়াশার মখমল চাদর সরিয়ে। বাপের ভাগ-চাষের জমি সোহাগী হয়ে উঠেছে পাকা ধানে। কালচে মাটির নিকোনো দাওয়ার এক পাশে লাল আলতা ঘের পা রাখে সুধা। উবু হয়ে বসে। পাশে রাখে হলুদ ধানের গুচ্ছ। মা কমলা তখন ধোয়া-মোছা কাঠের পিঁড়ির উপর চালগুঁড়ো-গোলা দিয়ে সাদা লক্ষ্মীর পায়ের আলপনা আঁকছে আঙুল দিয়ে। ছোলাভাজা আর গুড় দিয়ে হবে নাড়ু। নারকেল পায়নি বাবা। অনেক দাম। আজ লুচি হবে। হবে ভাজা। হবে আলুর দম। আলপনা আঁকা পিঁড়িতে ঘট ভর্তি ধান। উপরে কড়ি। তার উপর লাল সাটিনের কাপড়ের ঘোমটা। সামনে পান-সুপারি। তালের ফোঁপল কেটে এনে রেখেছে বাবা। মাঠের কাজ শেষে ফল কিনে আনবে বলেছে। সন্ধ্যায় শাঁখ বাজাবে সুধা। আজ বাবা–মায়ের ঝগড়া হয়নি একবারও। মনটা হিমেল ভোরের মতন লাগছে মায়ের কাছে ঘেঁষে বসতে। ‘দিই আলপনা?’ মায়ের দিকে তাকায়। ‘দে। হাত ধুয়ে আয়।’ মায়ের কথায় ফড়িং হয়ে পুকুর পাড়ে যায় সুধা। ক্লাস নাইনের সুধা সন্ধ্যায় পড়বে লক্ষ্মীর পাঁচালি। সুধাই পূজারিনি। মা দায়িত্ব দিয়েছে। আগে 
শচী মাসি পড়ত। এ পাড়ার অনেকেই আসত শুনতে। এখন আর কেউ আসে না এই হেলে পড়া ঘরের দাওয়ায়।
মেধার মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে ওঠে আলপনার ডিজাইন। গতকাল থেকে নানা ডিজাইন বেছে শেষ পর্যন্ত একটা ঠিক করেছে। বাবা বলে দিয়েছে—হালকা হবে, ছোট ছোট কিন্তু সুন্দর। দামি মার্বেল যেন আলপনায় নষ্ট না হয়। পোস্টার কালারের ছোট ছোট শিশি আর বিভিন্ন সাইজের তুলি নিয়ে বসেছে কলেজের আলপনা প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া মেধা। মা শীলাবতী, সংক্ষেপে শীলা, তসরের শাড়ি পরে ভোগের হাঁড়ির হাতা নাড়ছে। সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে ঝকঝকে ফ্ল্যাটের পিছল জানালা দিয়ে আবাসনের আনাচেকানাচে। মেধা সুইমিং পুলের দিকে তাকায়। আজ সুইমিং বন্ধ। পাঁচ ভাজা, পাঁচ তরকারি, পায়েস—বিরাট আয়োজন। পিসুন, দিদা, বাবা সবাই ব্যস্ত। শুধু দাদা আইটি সেক্টরে, ফিরতে রাত হবে। 
সুধা, কমলা, শচী, মেধা, শীলাবতী ঘরে ঘরে লক্ষ্মীর নাম। লক্ষ্মীর অষ্টোত্তর শতনাম ছড়িয়ে আছে উচ্চ-মধ্য-নিম্ন সমস্ত বিত্তের ঘরে ঘরে। লক্ষ্মীপুজোর এই সাম্যবাদী চরিত্রটা যেন বাঙালির নিজস্ব। যদিও দেবী হিসেবে লক্ষ্মী বেশ চঞ্চলা। তবে ঘরোয়াও বেশ। দেবী দেবী ভাবটা কম। আপন আপন। ঘরের মেয়ে লক্ষ্মীর উৎপত্তি নিয়ে নানা পুরাণে নানা গল্প ছড়িয়ে থাকলেও দু’টি উপাখ্যান প্রধান। প্রথম উপাখ্যানটি এইরকম— 
মনু বিয়ে করলেন শতরূপা দেবীকে। তাঁদের দুই ছেলে—প্রিয়ব্রত ও উত্তানপাদ। আর দুই মেয়ে—প্রসূতি ও আকুতি। দক্ষ বিয়ে করলেন প্রসূতিকে। তাঁদের ২৪ জন কন্যা। তার মধ্যে ১৩ জনকে বিয়ে করলেন ধর্ম। বাকি ১১ জনকে ভৃগু, বশিষ্ঠ, অত্রি, মরিচের মতো ১১ জন ঋষি। ধর্ম যে ১৩ জনকে বিয়ে করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন লক্ষ্মী।
দ্বিতীয় উপাখ্যানটি বিষ্ণু পুরাণের। ভৃগু ও খ্যাতির দুই ছেলে, এক মেয়ে। দুই ছেলে—দাতা ও বিধাতা। মেয়ে লক্ষ্মী। এই লক্ষ্মীই নারায়ণকে বিয়ে করেছে। মোটের উপর দেখা যাচ্ছে, লক্ষ্মী হয় দক্ষের মেয়ে নয়তো ভৃগুকন্যা। লক্ষ্মীর এই ঋষিকন্যাত্ব প্রশ্নের মুখোমুখি হয় যখন বিভিন্ন পুরাণে তাঁকে সমুদ্রোদ্ভবা বলা হয়। বলা হয় ক্ষীরাদ্ধি। কমলাসনে তাঁর উত্থান সমুদ্র মন্থনে। 
‘ততঃ স্ফুরৎকান্তিমতী বিকাসিকমলে হৃদিতা
শ্রী দেবী পয়স্তস্মাদুত্থিতা ভূতপঙ্কজা।’ (বিষ্ণুপুরাণ -১/৯/১৯)
সে বহুল প্রচারিত এক গল্প। একবার ঋষি দুর্বাসা পারিজাত ফুলের মালা উপহার দেন দেবরাজ ইন্দ্রকে। তিনি তখন শ্রী’র (দেবী লক্ষ্মীর) সঙ্গে খুনসুটিতে ব্যস্ত। ওই মালা ছুঁড়ে দেন বাহন ঐরাবতের দিকে। শুঁড়ে জড়িয়ে যায় মালা। বিষয়টি বোধহয় খুব একটা পছন্দ হয়নি ঐরাবতের। মাথা নেড়ে সে মাটিতে ফেলে দেয় মালাটি। তার পরেই পায়ের চাপে থেঁতলে দেয়। গোটা ঘটনাটি চোখ বুজেই দেখতে পেলেন দূর্বাসা। প্রচণ্ড রেগে অভিশাপ দিলেন ইন্দ্রকে—‘তোমার ত্রিলোক লক্ষ্মীছাড়া হবে।’ ‘প্রনষ্টলক্ষ্মীক’ হল ত্রিলোক। লক্ষ্মী গেলেন পাতালে। হতশ্রী হয়ে পড়লেন দেবতারা। তাদের তাড়া করলেন অসুররা। দেবতারা ছুটলেন ব্রহ্মার কাছে—‘রক্ষা করো, রক্ষা করো প্রভু।’ ব্রহ্মা-বিষ্ণু বসলেন আলোচনায়। তাঁদের পরামর্শে হল সমুদ্র মন্থন। বৃন্দগান ধরলেন গন্ধর্বরা। অপ্সরারা শুরু করলেন নৃত্য। গঙ্গা সহ সকল সরিৎ দেবী স্নানের জন্য উপস্থিত। ক্ষীরোদসাগর দান করল অম্লানপঙ্কজ মালা। বিশ্বকর্মা গড়িয়ে দিলেন গয়না। স্নাতা, ভূষণ-ভূষিতা দেবী সকলের সম্মুখে বিষ্ণুর বক্ষঃস্থলে আশ্রয় নিলেন। দেবকন্যা ও ঋষিকন্যা লক্ষ্মীর পুনরাবির্ভাব হল। আবার নারদীয় পুরাণ, ধর্ম পুরাণ, কুর্ম পুরাণে বলা হচ্ছে লক্ষ্মী ও সরস্বতী শিবদুর্গার কন্যা। কালে কালে সমাজজীবন তথা সমাজবোধ অনুযায়ী তৈরি হয়েছে ধর্মবোধ ও দেবদেবীর উপাখ্যান।
কালো মাটির উঠোন, সিঁড়ি, সিঁড়ি পেরিয়ে দাওয়া, দাওয়া পেরিয়ে ঘর, ঘরে টিনের বাক্স, সুটকেস। সুধা ধানের ছড়ার লতানে আলপনা দিতে দিতে থামে এখানে। ধানের ছড়ার পাশে পাশে লক্ষ্মীর পায়ের পাতা ডান, বাঁ, ডান, বাঁ করতে করতে এগিয়ে এসেছে। মা একটা পদ্মফুল এঁকেছে। তার মাঝে লক্ষ্মীর জোড়া পা আঁকা। পদ্মের ডাঁটির নীচে সাদা চালগুঁড়িগোলা দিয়ে আঁকাবাঁকা দাগ টানা—জলের আভাস। চারপাশে নকশা। সুধা তাকিয়ে থাকে। কলা গাছের ছোট ছোট পেটো বানিয়েছে মা। তার উপর তিনটে তিন রঙের পিটুলির পুতুল—সবুজ, লাল, হলুদ। লক্ষ্মী, নারায়ণ, কুবের। আলপনা শেষ। ধূপ ও প্রদীপের সলতে পোড়ার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। মা নতুন ছাপা শাড়ির আঁচল জড়িয়ে বসেছে। জোড়হাত। সুধা আসনে বসেছে। পড়া শুরু করল পাতলা বিবর্ণ একটি বই—লক্ষ্মীর পাঁচালি। এক অদ্ভুত ছন্দে পড়তে পড়তে কেমন যেন নিজেদের খুঁজে পাচ্ছে সুধা। মায়ের দু’চোখ ভিজে উঠেছে জলে। মাঝেমধ্যে আঁচলের খুঁটে তা মুছে নিচ্ছে আর শুনছে...
দেবর্ষি বলেন বচন
মর্ত্যে দুর্ভিক্ষ মাগো কী ভীষণ...
অন্নাভাবে লোকে কত কষ্ট ভোগে।
মরিতেছে অনাহারে কৃশকায় রোগে।।
ধর্মা ধর্ম লোকে সবে ত্যাগ করি দেয়।
স্ত্রী কন্যা বিক্রি করে ক্ষুধার জ্বালায়।।
সুধারও চোখে জল আসে। শুনেছে পাশের বস্তির মালতিকে বিক্রি করে দিয়েছে ওর বাবা-মা। বাবার ক্যান্সার।
পুরোহিত পুজো করে যাবার পর দিদুন লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়তে শুরু করে। মেধা মোবাইলে রেকর্ড করতে থাকে। দিদুন দুলে দুলে পড়ে— 
অনাচারে মজে গেছে সমাজ সংসার।
এইরূপ স্থানে থাকা দুষ্কর আমার ।।
আপন আপন ধর্ম দিয়া বিসর্জন।
পরর্ধম লয়ে মত্ত হয়েছে এখন।।
দিবানিদ্রা অনাচার ক্রোধ অহঙ্কার।
আলস্য কলহ মিথ্যা ঘিরিছে সংসার।।
মেধা শুনতে শুনতে অবাক হচ্ছে। পাঁচালিতে যেন আজকের কথা উঠে এসেছে। নিজের নিজের ধর্ম বিসর্জন দিয়ে পরধর্ম নিয়ে উন্মত্ত পৃথিবী। অনাচার, মিথ্যাচার, হিংসা, ক্রোধ আজকের সমাজকে ছিন্নভিন্ন করে তুলেছে। সর্বত্র দুর্নীতি। সুনীতির অভাব। কবে লিখেছে পাঁচালি! কেই বা লিখল? বাজারে লক্ষ্মীর পাঁচালিরও নানান রকমফের প্রচলিত আছে। আসল রচয়িতা কে জানা নেই। কবে লেখা হয়েছে তার সাল-তারিখও পাওয়া যায় না। তবে দুর্ভিক্ষ, অনাহার, ক্ষিদের জ্বালায় ছেলেমেয়ে বিক্রি—এসব দেখে সমাজবিদদের মত, লক্ষ্মীর পাঁচালির সময়কাল ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’-এর সময় অর্থাৎ ১১৭৬ বঙ্গাব্দে। আবার যেহেতু ঘরে ঘরে মেয়েরা এই পাঁচালি পড়ত এবং তাতে ঔপনিবেশিক অবস্থার একটা ছবি পাওয়া যায়, তাই কেউ কেউ অনুমান করেন বিদ্যাসাগরের স্ত্রীশিক্ষা প্রচারের পরেই লেখা হয়েছে লক্ষ্মীর পাঁচালি।
আর্যরা আসার আগে নিরাকার প্রকৃতি পূজাই ছিল অনার্য জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি। কৃষিকাজ শুরু হবার পর থেকেই প্রাচীন শস্য পূজার অনার্য রূপটি থেকে গিয়েছে গ্রাম-গ্রামান্তরে, মেয়েদের ব্রতপালনের মধ্যে দিয়ে। গ্রামাঞ্চলে লক্ষ্মীদেবীর উপস্থাপনা সেই আদিম কৌম সংস্কৃতির বাহক হিসেবেই থেকে গিয়েছে। গ্রামেগঞ্জে ঘড়া ভরা ধান, লাল চেলি কাপড়ে ঢেকে তার পাশে দু’দিকে লম্বা সিঁদুরের কৌটো রেখে লক্ষ্মীদেবীর রূপ কল্পনা করে পুজো হয়। কোথাও বা সরা পুজো হয়। সরার উপর দেবী লক্ষ্মীর ছবি, সঙ্গে বিষ্ণুও থাকেন। কলার পেটো সাজানো হয় বাণিজ্যতরী হিসেবে। কোথাও আবার পুজো হয় শুধু ঘটে। গঙ্গাজল পূর্ণ ঘট। গায়ে সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিক আঁকা। ঘটের উপর আমের পল্লব, পল্লবে সিঁদুরের ফোঁটা। পল্লবের মাঝে হরীতকী, হলুদ। সামনে ধান। লাল চেলিতে ঢাকা। আবার লালরঙা শাড়ি পরিয়ে কলাগাছকে লক্ষ্মীদেবী হিসেবে পুজো করা হয়। লোকজ এই লক্ষ্মীদেবীর পুজোয় কল্পনা ও বাস্তব মিলেমিশে একাকার। নিজের মাকে তুমি তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী সাজাতে পারো। ঘরের লক্ষ্মী যে! নীহাররঞ্জন রায় তাঁর ‘বাঙালীর ইতিহাস’ বইতে বলছেন, ‘আমাদের লক্ষ্মীর পৃথক মূর্তিপুজো খুব সুপ্রচলিত নয়।... আমাদের লোকধর্মে লক্ষ্মীর আরও একটি পরিচয় আমরা জানি এবং তার পুজো বাঙালি সমাজে নারীদের মধ্যে বহুল প্রচলিত। এই লক্ষ্মী কৃষি সমাজের মানস-কল্পনার সৃষ্টি। শস্য প্রাচুর্য্যের এবং সমৃদ্ধির দেবী তিনি। এই লক্ষ্মীর পূজা ঘটলক্ষ্মীর পূজা।... বস্তুত দ্বাদশ শতক পর্যন্ত শারদীয়া কোজাগর উৎসবের সঙ্গে লক্ষ্মীদেবীর পূজার কোনও সম্পর্কই ছিল না।’
সুধার মা বাড়ির লক্ষ্মীপুজো করে। লক্ষ্মীর ঝাঁপির পুরনো ধান বার করে, নতুন ধান ভরে, সব গুছিয়ে কাজে এসেছে। শীলা বৌদি বলেছে মেয়েকে সঙ্গে আনতে। সুধা শাড়ি পরেই এসেছে। এককোণে জড়সড় হয়ে বসে আছে মেধার কাছে। মা বাসন মাজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দিদুন মোড়ার উপর বসে গল্প শুরু করে—‘আজ সারারাত জেগে থাকাতে হয়! বুঝলি?’
‘কেন? লক্ষ্মীর পরীক্ষা আছে নাকি!’ মেধা মোবাইল থেকে মুখ তোলে। সুধা ফিক করে হেসে উঠে। দিদুন চোখ পাকায়, ‘পরীক্ষাই তো! লক্ষ্মী আজকের দিনে পরীক্ষা নিতে আসেন। 
নিশীথে বরদা লক্ষ্মীঃ কো জাগর্তীতি ভাষিনী/ তস্মৈ বিত্তং প্রযচ্ছামি অক্ষৈঃ ক্রীড়াং করোতি যঃ।’
‘আবার সেই অং বং শুরু করলে তো দিদুন!’ চোখ ঘোরায় মেধা।
‘এই রাতে?’ সুধা প্রশ্ন করে।
দিদুন নড়ে বসে বাতের ব্যথায়। বলেন, ‘হ্যাঁ রে, এই রাতেই। লক্ষ্মী সব বাড়িতে বাড়িতে এসে দেখে যায় কে জেগে আছে। জেগে থাকা মানে জ্ঞানে জেগে থাকা। অশুদ্ধতার বিরুদ্ধে জেগে থাকা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে থাকা। মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে জেগে থাকা। ঘুমিয়ে পড়লেই লক্ষ্মী চলে যাবে। লক্ষ্মী ছাড়া হবে ঘর-সমাজ সবকিছু। তাই এই আশ্বিনের পূর্ণিমায় লক্ষ্মী এসে দেখে যায়—‘কো জাগর্তীতি।’ অর্থাৎ, কে জেগে আছে!
সুধা মন দিয়ে শোনে, ‘জেগে থাকলেই লক্ষ্মী ধনসম্পদ দেবে!’
‘ধনসম্পদ মানে জ্ঞান। জেগে থাকলেই অজ্ঞানতা চলে যায়, জ্ঞান আসে। জ্ঞান আলো দেখায়। সেটাই সম্পদ।’ দিদুনের বলা শেষ হতে না হতেই শীলা মাইমা প্রসাদ দেন প্লেটে—‘কী রে সুধা, তুই তো বড় হয়ে গেছিস রে! শাড়ি পরে এক্কেবারে লেডি। পড়াশোনা করছিস তো! মন দিয়ে পড়াশোনা কর। মায়ের কাছে ভোগ দিয়ে দিয়েছি। বাড়িতে গিয়ে খেয়ে নিস।’
নিঝুম রাতে মায়ের সঙ্গে বস্তির গলিতে ফিরে আসে সুধা। মায়াবী লাগে। অন্ধকার ঘুপচি গলি আজ আলোয় আলোকময়। জ্যোৎস্নায় আশ্চর্য সাদা হয়ে আছে উঠোন। এককোণে ছোট্ট শিউলি গাছ ফুলে ফুলে ভরা। কালো মাটির দেওয়াল, কালো দাওয়া, হেলে পড়া কুঁড়েঘরটাও যেন চাঁদের আলোয় ভাসছে। সুধা তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। আজ জেগে থাকার দিন। জেগে থাকাই ব্রত।
 ছবি : তাপস কাঁড়ার
9Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা