বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

প্রথম গায়েবের
১৫০ বছর
সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়

মারি সেলেস্টের যাত্রীদের হারিয়ে যাবার খবর আলোড়ন ফেলেছিল সারা ইউরোপ ও আমেরিকায়। এর আগে কেউ কখনও কোন জাহাজ বা তার যাত্রীদের হারিয়ে যাবার কথা শোনে নি।

১৭ই ডিসেম্বর, ১৮৭২। স্পেনের উত্তরে জিব্রাল্টার বন্দরে সকলের মুখে একটাই আলোচনা। জিব্রাল্টার বিশেষ আদালতে সেদিন শুরু হবে ‘মারি সেলেস্টে’ জাহাজ নিয়ে শুনানি। আর হবে নাই বা কেন? এমন ঘটনা কস্মিনকালেও তো কেউ শোনেনি।
মার্কিন পণ্যবাহী জাহাজ ‘মারি সেলেস্টে’কে পাওয়া গিয়েছে আটলান্টিক মহাসাগরে, এজোরেস দ্বীপপুঞ্জের কাছে। দিনটা ছিল ৪ ডিসেম্বর, ১৮৭২। কানাডার ‘দেই গ্রাশিয়া’র নাবিকদের চোখে পড়ে ‘মারি সেলেস্টে’কে। ডেকের উপরে কেউ নেই। মনে হচ্ছে জাহাজটি যেন চালকহীনভাবে ভাসছে। তড়িঘড়ি নামানো হল নৌকা। ‘মারি সেলেস্টে’তে উঠতেই অপেক্ষা করছিল চরম বিস্ময়। গোটা জাহাজে জনমনিষ্যি নেই। এরকম আবার হয় নাকি! বিস্ময়ের তখনও অনেক বাকি—ডেক একদম সাফসুতরো। শুধু একটা পালের কিছুটা অংশ ছিঁড়ে গিয়েছে। ক্যাপ্টেন থেকে ক্রু—সকলের জিনিসপত্র ঠিক আছে। ‘ডিনেচার্ড অ্যালকোহল’ নিয়ে যাচ্ছিল জাহাজটি। তাও ঠিক আছে। নেই বলতে শুধু একটাই জিনিস। লাইফবোট।
কী হয়ে থাকতে পারে?
তন্ন তন্ন করে খোঁজ শুরু করলেন ‘দেই গ্রাশিয়া’র নাবিকরা। জাহাজের গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। অন্তত একনজরে কিছু নজরে পড়েনি। ফুটো হলে তো জল ঢুকত, জাহাজ ভেসে বেড়াত না। রান্নার রসদ আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, জাহাজের লগ বুকের শেষ এন্ট্রি। লগ বুকে শেষ এন্ট্রি ন’দিন আগের। সেখানে জাহাজের অবস্থান যা লেখা, তা প্রায় ৭৪০ কিলোমিটার দূরে। কাগজপত্র মিলেছে কিছু। তা থেকে জানা গিয়েছে, ক্যাপ্টেনের নাম বেঞ্জামিন ব্রিগস। এই যাত্রায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও শিশুকন্যা। ক্যাপ্টেন সহ অন্যরা যদি ৭৪০ কিলোমিটার দূরে নেমে যান, তাহলে জাহাজটি এত দূর এল কীভাবে! ক্যাপ্টেনের কেবিনে তাঁর তলোয়ারটাও রয়েছে। তবে অনেক দরকারি কাগজপত্রের সঙ্গে নেই জাহাজের দিক নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রও। 
‘দেই গ্রাশিয়া’র ক্যাপ্টেন মোরহাউস নিজে অবশ্য ‘মারি সেলেস্টে’তে যাননি। বদলে বিশ্বস্ত দেভাউয়ের নেতৃত্বে কয়েকজনকে নাবিককে পাঠিয়েছিলেন। দেভাউ ফিরে গোটা বিষয়টি জানালেন ক্যাপ্টেন মোরহাউসকে। দু’জনেই দিশাহারা। এ যেন পরিকল্পনামাফিক মাঝ দরিয়ায় জাহাজ ছেড়ে নৌকা নিয়ে কোথাও চলে গিয়েছেন সবাই। কী করা যায়! সিদ্ধান্ত নিতে বিন্দুমাত্র সময় ব্যয় করলেন না মোরহাউস। জাহাজটিকে এভাবে ছেড়ে যাওয়া চলে না। ঠিক হল, ‘মারি সেলেস্টে’কে নিয়ে যাওয়া হবে ১১০০ কিলোমিটার দূরের জিব্রাল্টার বন্দরে। এর পিছনে অবশ্য একটা ব্যবসায়িক কারণও ছিল। মাঝ দরিয়ায় যদি কোনও জাহাজ অন্য জাহাজকে উদ্ধার করে তাহলে উদ্ধারকারী জাহাজকে বলা হয় ‘স্যালভার’। জাহাজি আইন অনুসারে, এই কাজের জন্য ‘স্যালভার’-এর মোটা টাকা প্রাপ্য হয়। টাকার পরিমাণ নির্ধারিত হয় জাহাজ ও তাতে বাহিত মালের দাম অনুসারে। সঙ্গে দেখা হয়, উদ্ধারকাজে কতটা বিপদ ছিল। বিপদ যত বেশি, টাকাও তত। নিজের জাহাজের আটজন মাল্লাকে সমানভাবে ভাগ করলেন ক্যাপ্টেন মোরহাউস। নিজে থাকলেন ‘দেই গ্রাশিয়া’তে। আর দেভাউয়ের উপর ভার দিলেন ‘মারি সেলেস্টে’কে নিয়ে আসার। ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখে জিব্রাল্টার বন্দরে পৌঁছল ‘দেই গ্রাশিয়া’। পরদিন সকালে এল ‘মারি সেলেস্টে’। কুয়াশার জন্য একটু বেশি সময় লাগে দেভাউদের।
জাহাজ উদ্ধার করে নিয়ে এলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ আদালত আছে। জিব্রাল্টারের সেই আদালতে শুরু হল শুনানি। বিচারের তত্ত্বাবধানে জিব্রাল্টারের অ্যাটর্নি জেনারেল সলি ফ্লাড। বিচার করবেন চিফ জাস্টিস স্যার জেমস কচরেন। এই সলি ফ্লাডকে সমসাময়িক ঐতিহাসিকেরা যেভাবে বর্ণনা করেছেন তা এরকম, ‘...তাঁর অহংকার ও আত্মম্ভরিতার সঙ্গে তাঁর বুদ্ধির সম্পর্কটা একেবারে ব্যস্তানুপাতিক।’ তিনি এমন একজন, যিনি একবার যদি কিছু ভেবে নেন, সেই ধারণা থেকে কিছুতেই সরবেন না। তার বিরুদ্ধে শত অকাট্য যুক্তি থাকলেও সিদ্ধান্ত বদলাবেন না সলি। দেভাউয়ের কথা শুনে তাঁর মনে হয়েছে, ব্যাপারটা যা বলা হচ্ছে তা নয়। এর পিছনে বড় অপরাধের চক্রান্ত আছে। আর সব কিছুর মূলে ‘মেরি সেলেস্টে’তে থাকা প্রচুর পরিমাণ অ্যালকোহল। ভেবেচিন্তে ফ্লাডের নির্দেশ, বিশেষজ্ঞ দিয়ে জাহাজের পরীক্ষ করাতে হবে। সার্ভেয়ার লেগে পড়লেন কাজে। সঙ্গী দু’জন ডুবুরি। তাঁদের সার্ভে চলুক। সেই ফাঁকে আমরা একটু ফিরে যাই ‘মারি সেলেস্টে’র আগের ইতিহাসে।
***
‘মারি সেলেস্টে’ অবশ্য এই নাম নিয়ে জন্মায়নি। জাহাজটির নির্মাণ শুরু হয় ১৮৬০ সালে। স্পেন্সর্স দ্বীপের কাছে একটি গ্রামে। ১৮৬১ সালে নাম নথিভুক্তিকরণ হয় ‘আমাজন’ নামে। মালিক ছিলেন ন’জন ব্যক্তির একটি গোষ্ঠী। তাঁদের মধ্যে একজন—রবার্ট ম্যাকেলান ছিলেন এই জাহাজের প্রথম ক্যাপ্টেন। ১৮৬১ সালের জুন মাসে জলে নামে ‘আমাজন’। বিভিন্ন দ্বীপ থেকে কাঠ সংগ্রহ করে লন্ডনে নিয়ে আসা—এই ছিল কাজ। সবে বিভিন্ন দ্বীপ থেকে কাঠ সংগ্রহ চলছে, হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন ক্যাপ্টেন রবার্ট ম্যাকেলান। দিনকয়েক পরেই মৃত্যু। নতুন ক্যাপ্টেন হলেন জন পার্কার। কাঠবোঝাই জাহাজ নিয়ে প্রথম দফায় যান লন্ডনে। এরপরে বেশ কয়েকবছর আর কিছু ঘটেনি। ১৮৬৭ সালে প্রবল ঝড়ের মধ্যে পড়ে ‘আমাজন’। দিক ভুলে পৌঁছয় কানাডার কাছে, কেপ ব্রিটন দ্বীপে। প্রাণহানি না হলেও জাহাজের ক্ষতি হয় মারাত্মক। তৎকালীন মালিকরা আর জাহাজ মেরামত না করার সিদ্ধান্ত নেন।  জলের দরে সেই ভাঙা জাহাজ কিনে নেন এক ব্যক্তি। হাত বদল হয়ে সেই জাহাজ আসে রিচার্ড হেইনস নামে এক ব্যক্তির হাতে। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তিনি নতুন জীবন দেন ‘আমাজন’ জাহাজকে। দেন নতুন নামও। ‘মারি সেলেস্টে’। এরপরও অনেকবার হাতবদল হয় জাহাজের। পরিবর্তন হয় দৈর্ঘ্য, প্রস্থে। যগে হয় একটি নতুন ডেকও। শেষে মালিক ও ক্যাপ্টেন হন বেঞ্জামিন ব্রিগ।
ক্যাপ্টেন হিসেবে যথেষ্ট নামডাক ছিল ব্রিগসের। এই যাত্রার জন্য তিনি বেছে বেছে নাবিক নির্বাচন করেন। ‘মারি সেলেস্টে’ নিয়ে তাঁর প্রথম গন্তব্য ছিল ইতালির জেনোয়া শহর। নিউ ইয়র্কের থেকে শুরু হয় যাত্রা। প্রায় সাড়ে আট হাজার কিলোমিটারের এই সফরে সঙ্গী হন ক্যাপ্টেন ব্রিগসের স্ত্রী ও শিশুকন্যা। ছেলের স্কুল থাকায় সিদ্ধান্ত হয়, সে থাকবে বাড়িতে। ঠাকুমার সঙ্গে। শুরু হল প্রস্তুতি। জাহাজে নিয়ে যাওয়া হবে ১৭০০ পিপে ‘ডিনেচার্ড অ্যালকোহল’। ৫ নভেম্বর, ১৮৭২ যাত্রা শুরু করে ‘মারি সেলেস্টে’। কিছু দূরের বন্দরে তখন নোঙর করা রয়েছে ‘দেই গ্রাশিয়া’। নভেম্বরের ১৫ তারিখে বন্দর ছাড়ে ‘দেই গ্রাশিয়া’। তার গন্তব্য ছিল জিব্রাল্টার। ‘মেরি সেলেস্টে’র সঙ্গে একই যাত্রাপথ ছিল ‘দেই গ্রাশিয়া’রও। শোনা যায় দুই জাহাজের ক্যাপ্টেন পরস্পরের বন্ধুও ছিলেন। সে বিষয়ে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে প্রায় পঞ্চাশ বছর পর ক্যাপ্টেন মোরহাউসের বিধবা স্ত্রী বলেছিলেন, ‘মেরি সেলেস্টে’র যাত্রা শুরুর আগের রাতে একসঙ্গে নৈশভোজ সারেন ব্রিগস ও মোরহাউস।
***
সার্ভেয়ার অস্টিন জানান, তিনি জাহাজের ‘বো’ অর্থাৎ সামনের দিকের ছুঁচল অংশের দু’দিকে কাটা দাগ ছিল। ‘মেরি সেলেস্টে’ কোনও ঝড়ের মুখেও পড়েনি। জাহাজে একটি টেবিলের উপরে সেলাই মেশিনের এক শিশি তেল রাখা ছিল। জাহাজ ঝড়ে পড়লে তা আস্ত থাকত না। অন্য কোন জাহাজের সঙ্গে ‘মেরি সেলেস্টে’র ধাক্কাও লাগেনি। ক্যাপ্টেনের তলোয়ারে রক্তের দাগও রয়েছে। এরপর রানির নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেনদের একটি দল আসে জাহাজ পর্যবেক্ষণে। তাঁরাও জানান, ‘বো’-এর দাগ অত্যন্ত সন্দেহজনক। এর কারণ কোনও দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে করা কোনও কাজের ফলেই এই দাগ। জাহাজের রেলিংয়ে কিছু দাগও দেখতে পেয়েছেন তাঁরা, যা রক্তের দাগ হলেও হতে পারে। সার্ভেয়ার সাহেব রিপোর্ট পাঠালেন লন্ডনের বোর্ড অফ ট্রেডে। রিপোর্টে বলা হল, জাহাজের মাল্লারা মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ক্যাপ্টেন, তাঁর পরিবার ও অফিসারদের হত্যা করেছে। তারপরে নৌকা চেপে পালিয়েছে। জাহাজের সঙ্গে অন্য জাহাজের ধাক্কা লেগেছে, এরকম একটা ধারণা দেবার জন্য ‘বো’-এর দাগও তারাই করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল সলি ফ্লাড অবশ্য এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি। তাঁর ধারণা, ক্যাপ্টেন মোরহাউস কিছু গোপন করছেন। জাহাজে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা ঘটেছে আরও অনেক পূর্বে। জাহাজের লগ বদলেছেন মোরহাউস। নাবিকহীনভাবে একটা জাহাজ প্রায় সাড়ে সাতশো মাইল পাড়ি দিয়েছে, তা মানতে নারাজ তিনি। জাহাজের অন্য এক অংশীদার উইঞ্চেস্টার এলেন জিব্রাল্টারে। জাহাজে থাকা অ্যালকোহলের পিপেগুলি ফেরত চান তিনি। তাঁকে পিপেগুলি দিতে অস্বীকার করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ইতিমধ্যে ভেবেও নিয়েছেন, এই উইঞ্চেস্টারই মাল্লাদের হাত করে ক্যাপ্টেন ব্রিগসকে খুন করিয়েছে। কিন্তু এরপরেই বড়সড় ধাক্কা খেলেন সলি ফ্লাড। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হল, ক্যাপ্টেন ব্রিগসের তলোয়ারে বা অন্যত্র পাওয়া কোনও দাগই রক্তের নয়। কাজেই জাহাজে মিউটিনি বা হত্যা হয়েছে, এই তত্ত্ব দুর্বল হয়ে পড়ল। তখনও দ্বিতীয় ধাক্কা আসা বাকি ছিল। মার্কিন নৌবহরের ক্যাপ্টেন শ্যুফেল্ট জাহাজ পরীক্ষা করে জানালেন ‘বো’-এর দাগ ইচ্ছাকৃত নয়। দীর্ঘদিন যে জাহাজ জলে চলেছে, তাতে জলের জন্যই কাঠের উপর ওরকম দাগ পড়তেই পারে। একপ্রকার বাধ্য হয়েই ‘মেরি সেলেস্টে’কে ছেড়ে দিলেন ফ্লাড। সে পাড়ি জমাল জেনোয়া শহরের দিকে। তবে নানা রকম সন্দেহের নিরসন না হবার কারণে জাহাজ উদ্ধারের মূল্য ধার্য হল মাত্র ১৭০০ পাউন্ড। সাধারণভাবে যা হওয়া উচিত ছিল অন্তত তার তিন গুণ। ‘মারি সেলেস্টে’র ক্যাপ্টেন বা অন্যদের কোনওদিন খোঁজ পাওয়া যায়নি। কী হয়েছিল তা আজও রহস্য।
‘মারি সেলেস্টে’র ক্যাপ্টেন ও অন্যদের হারিয়ে যাবার খবর আলোড়ন ফেলেছিল ইউরোপ ও আমেরিকায়। এর আগে কেউ কখনও কোনও জাহাজের যাত্রীদের উধাও হয়ে যাওয়ার কথা শোনেনি। আজকের দিনে অবশ্য আমরা এরকম বেশ কিছু ঘটনা জানি। হারিয়ে গিয়েছে অনেক প্লেন, জাহাজ। বারমুডা ট্র্যায়াঙ্গেলের রহস্য তো নিয়মিত চর্চার বিষয়। তখনও কিন্তু মানুষ সেসব রহস্যের কথা জানত না। বারমুডা ট্র্যায়াঙ্গেল নিয়ে চর্চা শুরু হয় অনেক পরে, বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর ১৪ জন যাত্রী নিয়ে হারিয়ে যায় ‘ফ্লাইট ১৯’। বারমুডা ট্র্যায়াঙ্গেলে সেই একই দিনে, একই জায়গায় হারিয়ে যায় ‘পি বি এম মেরিনার’ নামে আরেকটি প্লেনও। ‘পি বি এম মেরিনার’ বিমানটি গিয়েছিল ‘ফ্লাইট ১৯’-এর খোঁজ করতে। এমন রহস্যের সন্ধান পেয়ে অনেকেই অনেক রকম ‘থিয়োরি’ খাড়া করেন। এর প্রভাব পড়ে সাহিত্যেও। ১৮৮৪ সালে শার্লক হোমস স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল ‘কর্নওয়াল’ ম্যাগাজিনে ‘জে হ্যাবাকক জেফসনস স্টেটমেন্ট’ নামে একটি গল্প লেখেন। তিনি অবশ্য সব নাম বদলে দিয়েছিলেন। যেমন ক্যাপ্টেন ব্রিগস হয়েছিলেন ক্যাপ্টেন টিবস। এ গল্পে বলা হয় জাহাজের কৃষ্ণাঙ্গ মাল্লারা বিদ্রোহ করে বাকিদের হত্যা করে। তারপর আফ্রিকার কোনও উপকূলে নেমে যায় তারা। 
১৯১৩ সালে বিখ্যাত স্ট্র্যান্ড পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এই জাহাজের এক নাবিকের বক্তব্য। বলেন, তিনি একাই বেঁচে আছেন। বাকিরা গিয়েছে হাঙরের পেটে। পরে অবশ্য এ দাবি ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়। অনেকে মনে করেন, বিমার থেকে প্রচুর টাকা পাওয়ার জন্য পুরোটাই পরিকল্পনা করেন উইঞ্চেস্টার। কেউ কেউ বলেন, মোরহাউস ‘মারি সেলেস্টে’কে মাঝ দরিয়ায় ধরে ফেলে ও জাহাজের লোকজনকে খুন করে। যদিও ‘দেই গ্রেশিয়া’র তুলনায় ‘মেরি সেলেস্টে’র গতি ছিল অনেক কম। জাহাজটি বন্দরও ছাড়ে অনেক পরে। তাহলে তারা ‘মেরি সেলেস্টে’র নাগাল কী করে পেল, সেই প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে গিয়েছে। ১৯০৪ সালে চেম্বারস জার্নালে যা প্রকাশিত হয়, তা আরও অভিনব। বলা হয়, এক অতিকায় অক্টোপাস নাকি সবাইকে খেয়ে নিয়েছে!

18th     December,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা