নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: নভেম্বর শেষ হওয়ার পরেও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচ করতে পারেনি বহু গ্রাম পঞ্চায়েত। জেলাশাসক সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরেও উত্তর দিনাজপুরে বহু গ্রাম পঞ্চায়েত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযোগ, বেশকিছু পঞ্চায়েতের মধ্যে কাজ নিয়ে উদাসীনতা রয়েছে। সার্বিক উন্নয়নে তাদের কোনও আগ্রহ নেই। ফলে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ খরচের গতি মার খাচ্ছে। এনিয়ে ক্ষুদ্ধ জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা। সোমবার রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া অডিটোরিয়ামে জেলার ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ন’টি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে তিনি বৈঠক করেন। ওই বৈঠক থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে ফাঁকিবাজি বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলাশাসক।
শারোদোৎসবের আগেই এই জেলায় জেলাশাসক পদে যোগ দেন সুরেন্দ্র কুমার মিনা। নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। জেলার ৯টি পঞ্চায়েত সমিতির ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নভেম্বরের মধ্যে কাজের গতি বাড়ানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
জেলাশাসকের কড়া নির্দেশের পরেও ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচ করতে পারেনি। এনিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ জেলাশাসক। তাই সোমবার তিনি জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করে কড়া দাওয়াই দেন।
উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে যতটা সম্ভব টাকা খরচ করতে হবে। আমি কোনও ফাঁকিবাজি বরদাস্ত করব না।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েতের এই তিনটি স্তরে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মোট ২৩৪ কোটি টাকা এসেছে। যার মধ্যে চোপড়া ব্লকের দাসপাড়া এবং সোনারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০ কোটি ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ২২৯ ও ১ কোটি ১৫ লক্ষ ৩৩ হাজার ১৬ টাকা পড়ে আছে। গোয়ালপোখর-১ ব্লকের ধরমপুর, গোয়াগাঁও ও পাঞ্জিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে যথাক্রমে ৭৪ লক্ষ ৯৫ হাজার ৬৪৮ , ৮২ লক্ষ ৯ হাজার এবং ৯০ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮১৪ টাকা পড়ে আছে। গোয়ালপোখর-২ ব্লকের সূর্যাপুর পঞ্চায়েত ১ কোটি ১৫ লক্ষ ২০ হাজার ১৭১ টাকা, ইসলামপুর ব্লকের গোবিন্দপুর পঞ্চায়েত ও রামগঞ্জ পঞ্চায়েতে যথাক্রমে ১ কোটি ৬ লক্ষ ৫১ হাজার ৯৯০ এবং ১ কোটি ২১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৬৯৫ টাকা পড়ে আছে।
অন্যদিকে, ইটাহার ব্লকের দুর্গাপুর, ইটাহার, কাপাসিয়া ও মারনাই গ্রাম পঞ্চায়েত যথাক্রমে ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৩৩ হাজার, ১ কোটি ২৬ লক্ষ ১৬ হাজার, ১ কোটি ২৮ লক্ষ ৪৫ হাজার এবং ১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬৯০ টাকা পড়ে আছে। করণদিঘি ব্লকের দোমোহনা, লাহুতারা -১ এবং ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত যথাক্রমে ১ কোটি ৩২ লক্ষ, ১ কোটি ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ও ১ কোটি ১ লক্ষ ১০ হাজার ১১৫ টাকা, রায়গঞ্জ ব্লকের বরুয়া, বিন্দোল, গৌরি, জগদীশপুর, মারাইকুড়া, রামপুর ও শীতগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে যথাক্রমে ১ কোটি ২৭ লক্ষ ৩২ হাজার ১৯৭, ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩৪ হাজার ১৩১, ১ কোটি ২৯ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬৯১, ১ কোটি ৫৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৮০৩, ১ কোটি ৩০ লক্ষ ৮১ হাজার, ১ কোটি ৫০ লক্ষ ৩১ হাজার, ১ কোটি ৬ লক্ষ ১৮ হাজার ৭৮৮ টাকা পড়ে আছে।