বাহন বলতে একটা বাইক বা স্কুটি। তাতে সওয়ার হয়ে কলকাতার এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত। কখনও বা যেতে হয় পাশের জেলাতেও। এক একটি বাড়িতে সময় লাগে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা, রোগীর সংখ্যা খান দশেক, দক্ষিণা ন্যূনতম পাঁচশো অর্থাৎ দিনের শেষে হাজার পাঁচেক টাকা নিশ্চিত।
প্রকৃতিমাতা আমাদের দেশকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে। এখন আমাদেরই ঠিক করতে হবে যে, ১৩০ কোটি জনসংখ্যাকে চালিয়ে নিয়ে যেতে এই সম্পদকে আমরা কীভাবে ব্যবহার করব।
দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
শৌণক সুর: একটা সময় ছিল যখন আমরা সবকিছুই খাতায়, ডায়েরিতে লিখে রাখতাম। দরকারি কাজ, মিটিং, কেনাকাটা-বাজারের লিস্ট, এমনকী মাসকাবারি বিলের বাকি হিসেবও। স্যারের কাছে পড়ার সময়ও খাতা বার করে খসখস করে নোটস নেওয়া ছিল আমাদের অভ্যাস। কিন্তু সময় বদলেছে। প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতির ফলে আমাদের জীবন হয়েছে সহজ। স্লাইড শো-তে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর সময় অনেক পড়ুয়াই এখন প্রয়োজনীয় তথ্য ক্যামেরাবন্দি করে নেয়। টিচারের পড়া হোক বা রাজনৈতিক নেতার গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ আমরা এখন রেকর্ড করে নেওয়াতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। বই পড়ার ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে রকমফের। নতুন বইয়ের পাতার মনমাতানো গন্ধ উপভোগ করে গল্প-উপন্যাস পড়ার দিন এখন আর নেই। বরং ট্যাবলেটে স্টোর করা একাধিক বইয়ের পিডিএফ ভার্সনেই মন মজেছে নেটিজেনদের। ধীরে ধীরে আমাদের গোটা জীবনটাই যেন হয়ে উঠেছে তথ্য নির্ভর। লাগাতার তথ্য আদান-প্রদানের ফলে এই পরিধি যেন ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। টেলিকম সংস্থাগুলির আনলিমিটেড ইন্টারনেটে প্যাকের ঠেলায় প্রায় ২৪ ঘণ্টাই আমরা নেট দুনিয়ার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে রয়েছি। হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সারাক্ষণই তথ্য বিনিময় করে থাকি। কিন্তু মোবাইল, ট্যাবলেট, ল্যাপটপে ধরে রাখা ডেটা কিন্তু শুধুই বিনোদনের জন্য নয়। বরং চিকিৎসাক্ষেত্র, জীববিজ্ঞান সহ একাধিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন, কোনও একটি হাসপাতালে সারা দিনে বহু রোগী আসেন। কিন্তু তাঁদের সকলকে মনে রাখা সম্ভব নয়। খাতাপত্রে তাঁদের নাম-ধাম, বাড়ির ঠিকানা ইত্যাদি লেখাও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই মুশকিল আসানে ব্যবহার করা হয় কম্পিউটার। চোখের নিমেষে লক্ষ লক্ষ রোগীদের নাম, বাড়ির ঠিকানা এমনকী রোগের ধরনও নথিভুক্ত হয়ে যায় ভবিষ্যতের জন্য। ফলে ওই রোগী পরে কখনও হাসপাতালে এলে পুরনো নথি দেখে রোগ নির্ণয়ে করতে চিকিৎসকদেরও কিছুটা সুবিধা হয়। সময় বাঁচে রোগীদেরও। আর তা সবই সম্ভব হয়েছে কম্পিউটারে স্টোর হয়ে থাকা বিপুল তথ্য ভাণ্ডার বা বিগ ডেটার সৌজন্যে। তবে শুধুমাত্র চিকিৎসা শাস্ত্রেই নয়। এর ফলে উপকৃত হয়েছে পুলিস-প্রশাসনও। বিভিন্ন দাগী অপরাধীদের খুঁটিনাটি তথ্য স্টোর করার ফলে পুলিসের কাজে বেশ খানিকটা সুবিধা হয়েছে। অন্যদিকে ডেটা ব্যাঙ্কে জমা থাকা তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোনও একটি স্থানের সমস্যা এখন সহজেই মিটিয়ে ফেলতে পারে সরকার। যেমন নির্দিষ্ট একটি স্থানে কোনও রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সেই এলাকার লোকসংখ্যা বিচার করে চটজলদি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে প্রশাসন। এছাড়া রাজ্যে থাকা একাধিক হাসপাতালে ওষুধের স্টকও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় এই বিগ ডেটার কাঁধে ভর করেই। কিন্তু এই ডেটা বা তথ্য ভাণ্ডার দেখভাল বা তৈরির জন্য প্রয়োজন দক্ষ কর্মী। যার জন্য দরকার সঠিক প্রশিক্ষণ। এর ফলেই কার্যকরী এবং বিজ্ঞানসম্মত ভাবে বিগ ডেটা জমা করা এবং প্রয়োজনে পরবর্তীকালে তা পর্যালোচনা করা সম্ভব। যদিও ডেটা সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা বা গবেষণার সুযোগ ভারতে এখনও বেশ সীমিতই। বর্তমানে বিগ ডেটা বায়োলজির স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স পড়ানো হয় বেঙ্গালুরুর ইনস্টিটিউট অব বায়ো ইনফর্মেটিক্স অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড বায়োটেকনলজিতে। বিশেষ এই কোর্সটি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করানো হয়। সংস্থার দাবি, বিগ ডেটা বায়োলজির প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মীর চাহিদা রয়েছে বিভিন্ন ডেটা অ্যানালিস্ট, কনসালট্যান্ট এবং ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিতে। এই কোর্সে পড়ানো হয় প্রোগ্রামিং, মেশিন লার্নিং, বিগ ডেটা ইঞ্জিনিয়ারিং, ইমেজ ইনফরমেটিক্স, হেলথ কেয়ার ইনফরমেটিক্স এবং কম্পিউটেশনাল বায়োলজি। এই কোর্সটির মেয়াদ এক বছর। রয়েছে ক্যাম্পাসিংয়ের ব্যবস্থাও। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই কোর্স চলাকালীন মাসিক ১০ হাজার টাকা স্টাইপেন্ডও দেওয়া যাবে। তবে সকলে এই কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। বায়োটেকনোলজি, বায়ো মেডিক্যাল টেকনোলজি, বায়ো ইনফরমেটিক্স, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন টেকনোলজি বা সমতুল বিষয়ে বিই, বিটেক পাশরা এই কোর্সে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও সমতুল বিষয়ে বায়ো কেমিস্ট্রি, কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে এমএসসি পাশ করা পড়ুয়ারা এবং স্যাটিস্টিক্সে স্নাতক পাশরাও এই কোর্সে আবেদনের যোগ্য। তবে আসন সংখ্যা মাত্র ২৫টি হওয়ায় প্রার্থী বাছাই করা হয় জাতীয় স্তরের পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে। পরীক্ষায় লাইফ সায়েন্সেস, ভার্বাল অ্যাপ্টিটিউট, অ্যানালিটিক্যাল অ্যাপ্টিটিউট এবং প্রোগ্রামিং অ্যান্ড কম্পিউটিং এবিলিটির মতো বিষয়গুলি থেকে প্রশ্ন থাকে। আগ্রহীরা www.ibab.ac.in ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারেন। আবেদনের ফি এক হাজার টাকা। অনলাইনে আবেদনের পর সাবমিট করা আবেদনপত্র এবং ই-রিসিপ্ট যত্ন সহকারে নিজের কাছে রেখে দিতে হবে। এটি কোথাও পাঠাতে হবে না। বিশদ বিবরণের জন্য সংস্থার ওয়েবসাইট দেখতে পারেন। প্রয়োজনে ইমেল করতে পারেন hosahalli_s@ibab.ac.in-এ। এছাড়া সরাসরি ফোনও করতে পারেন-০৮০ ২৮৫২ ৮৯০০/০১/০২ নম্বরে।
