কারও কাছ থেকে কোনও দামি উপহার লাভ হতে পারে। অকারণ বিবাদ বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্য ... বিশদ
একদিন যানজটে আটকে পড়েছিলেন নাটকের অন্যতম মুখ্য অভিনেতা রজতাভ দত্ত। এদিকে দ্বিতীয় ঘন্টা পড়ে গিয়েছে। সেদিনও পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ। নিরুপায় পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায় দর্শকদের হাতেই ছেড়ে দিলেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার। শো বন্ধ করে টিকিটের মূল্য ফেরত দেবেন না, ইন্দ্র চরিত্রে রজতাভর জায়গায় পরিচালক নিজেই অভিনয় করবেন? সেদিন দর্শকদের অনুমতি সাপেক্ষে নাটকের প্রথমার্ধে মঞ্চে ইন্দ্রর চরিত্রে অবতীর্ণ হয়েছিলেন পরিচালক স্বয়ং। দ্বিতীয়ার্ধে রজতাভ। এমনই চমকপ্রদ স্মৃতিরোমন্থনের মাঝেই সময়ের নিরিখে আদ্যন্ত রাজনৈতিক নাটকটির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ব্রাত্য বসু বললেন, ‘আর্ট কখনও নির্দিষ্ট কালখণ্ডে বাঁধা থাকে না। আর্ট যখন অতীতে যায়, জানবেন সে বর্তমানকে তুলে ধরার জন্যই যায়। অন্য কোনও কারণ তার নেই।’
কাহিনির পটভূমি ১৯৭৬ সাল। পুলিসের বন্দুকের নলের ডগা থেকে উধাও হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক নেতা সব্যসাচী ফিরে আসেন বেশ কিছুদিন পর। দেখেন ছেলে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী। সব্যসাচীর জীবনে সবকিছুই নতুন প্রেক্ষাপট রচনা করতে শুরু করে। পরিচালক সৃজিতের উপর আস্থাশীল নাট্যকার ব্রাত্য বললেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ওঁর কাজ পছন্দ করি। সৃজিত নিজে একসময় নাটক করতেন। ফলে থিয়েটারকে নিয়ে ওঁর একটা ভালোবাসা আছে। নাটকটা থেকে ফিল্মটা সরেও যেতে পারে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না, কেন না নাটকটা এই মুহূর্তে ওঁর সম্পত্তি। আমি বিশ্বাস করি সৃজিত এমন কিছু করবেন না, যাতে দেখা গেল আমার নাটকটা উল্টো কথা বলছে। তবে নির্মাণ, বিনির্মাণ হতেই পারে।’
নাটকের রাজনৈতিক নেতা সনৎ, সিনেমায় সনাতনের সঙ্গে মূল প্রোটাগনিস্ট সব্যসাচীর কথোপকথনের কিছু অংশের শ্যুটিং শেষ করে সৃজিত বললেন, ‘কোনও বিশেষ সময় বা রাজনৈতিক দল নয়, গোটা নাটকটাই বৃহত্তর রূপক। রূপকের টেমপ্লেটে আমি অনেক অবক্ষয়ের গল্পই বলতে পারি। এই টেমপ্লেটটা আমার খুব ভালো লেগেছিল। সেটা আমি নিজের মতো করে সিনেমায় ব্যবহার করতে চাইছি।’
সৃজিতের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ছবির ‘সনাতন’ দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘নাটক ও ছবির ভাষা সম্পূর্ণ আলাদা। অভিনয় করতে গিয়ে বুঝতে পারছি সৃজিত সুন্দরভাবে সেটা এক্সপ্লোর করেছেন।’ কলেজে তৃতীয়বর্ষে নাটকটি দেখার স্মৃতিমেদুরতা সঙ্গে নিয়ে ‘ইন্দ্র’ পরমব্রত বললেন, ‘আমার বা ইন্দ্রর ভূমিকা এই ছবিতে স্পেশাল অ্যাপিয়ারেন্সের মতো। কিন্তু তার মূল অবস্থান ও বক্তব্যটা একই আছে।’ এই ছবিটিতে নাটকের ‘ইন্দ্র’ রজতাভ অভিনয় করছেন একটি ক্যামিও চরিত্রে। প্রস্তাব পেলেও সময়াভাবে অভিনয় করতে পারেননি ‘সব্যসাচী’ দেবশঙ্কর হালদার। বললেন, ‘আমি রোমাঞ্চিত। তখন যা আমরা নাটকে ধরবার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ধরতে চাইনি বা ধরতে পারিনি, সিনেমায় হয়তো সেগুলো দেখতে পাব।’
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়