মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
জীবনে প্রথম বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে চলেছ। তাই তোমাদের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে একটা ভয় বা আশঙ্কা কাজ করা স্বাভাবিক। তবে অযথা ভয় পেও না। পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাও, যাতে যে কোনও প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর দিতে পার। ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষায় কী কী বিষয় মাথায় রেখে পরীক্ষা দিতে যাবে তা সংক্ষেপে তোমাদের সামনে তুলে ধরলাম।
১. পরীক্ষার আগের দিন পদার্থবিদ্যার অধ্যায়গুলি মন দিয়ে পড়ো। আর পরীক্ষার দিন সকালে পড়বে রসায়ন। কারণ, রসায়নের অধ্যায়গুলি তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে তোমাদের মনে হয় কিছুই মনে করতে পারছি না সব ভুলে যাচ্ছি। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু পরীক্ষা দিতে বসে লেখা শুরু করলে সব মনে পড়ে যাবে।
২. প্রশ্ন নির্বাচন অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রশ্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। যেমন ৩ নম্বরের বা ২ নম্বরের প্রশ্নের ক্ষেত্রে যে প্রশ্নগুলিতে ১+২, ১+১+১ বা ১+১ নম্বরের বিভাজন থাকে সেগুলি নির্বাচন করা উচিত।
৩. বইয়ের বাইরে কোনও প্রশ্ন থাকে না। সুতরাং পাঠ্যবইয়ে প্রত্যেক লাইন ধরে পড়ো। তোমাদের বহু বিকল্প ভিত্তিক (MCQ, Q.1) এবং ১ নম্বরের প্রশ্ন (Q.2) মিলে মোট ৩৬ নম্বরের উত্তর করতে হবে।
৪. MCQ প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে সঠিক উত্তরটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।
৪. সংজ্ঞা সূত্র লেখার সময় হুবহু বইয়ের ভাষা লিখবে। বানিয়ে লেখার চেষ্টা করবে না।
৫. একটি বা দুটি লেখচিত্র আঁকতে দেয়। যেমন গ্যাসের ধর্ম অধ্যায়ে বয়েলের সূত্র বা চার্লসের সূত্র, ওহমের সূত্রে বিভব বনাম প্রবাহমাত্রা লেখচিত্র।
৬. কিছু ক্ষেত্রে সংজ্ঞা বা সূত্রের ক্ষেত্রে চিত্র আঁকবে। যেমন লেন্সের আলোককেন্দ্র বা প্রধান ফোকাসের সংজ্ঞায় চিত্র এঁকে দেখাবে। আলোর ক্ষেত্রে রশ্মিচিত্র আঁকার সময় আলোর দিক বোঝানোর জন্য তীর চিহ্ন অবশ্যই দেবে।
৭. গাণিতিক প্রশ্ন প্রায় ১০ নম্বরের থাকে। বিশেষ করে রাসায়নিক গণনা, গ্যাসের ধর্ম, চলতড়িৎ, আলো, তাপ—এই অধ্যায়গুলি থেকে প্রশ্ন আসে।
গাণিতিক প্রশ্ন সমাধানের ক্ষেত্রে আগে ব্যবহৃত সূত্রটি লিখবে। সূত্রে ব্যবহৃত চিহ্নের নাম লিখে প্রশ্নে দেওয়া মানগুলি একক সহ লিখবে। উত্তরের পাশে এককটি অবশ্যই লিখবে। একক না লিখলে নম্বর পাওয়া যায় না।
উদাহরণ: ১। ২৭° সেলসিয়াস উষ্ণতায় একটি গ্যাসের আয়তন ২৫০ মিলি লিটার। চাপ অপরিবর্তিত রেখে গ্যাসটির উষ্ণতা ৮° সেলসিয়াস বৃদ্ধি করা হল। আয়তন কত হবে?
সূত্র: = যেহেতু চাপ স্থির সুতরাং P1=P2
প্রাথমিক আয়তন V1=২৫০ মিলি লিটার
V2=?
প্রাথমিক তাপমাত্রা T1= (২৭+২৭৩) K=৩০০K,
অন্তিম তাপমাত্রা T2=(২৭+৮+২৭৩) K=৩০৮ K
= = V2 = = =২৫৬.৬৬ মিলি লিটার
উদাহরণ ২। একটি কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ ০.৫ Ω। কোষটির সঙ্গে ১০ Ω রোধের একটি বহিঃস্থ রোধ যোগ করলে এরমধ্যে দিয়ে ৫০০ mA (মিলি অ্যাম্পিয়ার) তড়িৎ প্রবাহিত হয়। কোষের তড়িৎচালক বল নির্ণয় করো।
E=1 (R+r)
তড়িৎচালক বল E=?
তড়িৎপ্রাহ্মাত্রা I=৫০০ mA (মিলি অ্যাম্পিয়ার)=০.৫ A বহিরোধ R=১০ ohm (ওহম) তড়িৎকোষের অভ্যন্তরীণ রোধ=০.৫ ohm (ওহম)
E=০.৫ (১০+০.৫)=৫.২৫ V (ভোল্ট)
এ ধরনের গাণিতিক সমস্যা সমাধানে বর্তনী চিত্র আঁকবে।
৮. বামস্তম্ভের সঙ্গে ডান স্তম্ভের সামঞ্জস্য বিধান সাধারণত পর্যায়সারণি ও ধাতু বিদ্যা থেকে থাকে।
৯. শংকর ধাতুর ক্ষেত্রে উপাদানগুলি মনে রাখবে। কোন ধাতুটি কত শতাংশ আছে সেটি মনে না রাখলেও চলে।
১০. এবার পরীক্ষায় রসায়নে নাইট্রিক ও সালফিউরিক অ্যাসিডের শিল্প উৎপাদন থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি।
১১. তোমরা পরীক্ষার উত্তরপত্রে রাসায়নিক বিক্রিয়া লেখার সময় আগে বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের নাম অবশ্যই লিখবে। এরপর বিক্রিয়ার শমিত সমীকরণ (balance eqn.) লিখবে। বিক্রিয়ায় জারণ বিজারণ সম্ভব হলে পরিষ্কার করে দেখাবে।
১২. জৈব রসায়নে IUPAC নামকরণ ভালোমতো অভ্যাস করবে।
১৩. যদি প্রশ্নে দুটি বা তিনটি অংশ থাকে তাহলে প্রত্যেক অংশের জন্য পৃথক পৃথক অনুচ্ছেদ লিখবে।
১৪. প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লেখার সঙ্গে প্রশ্নে টিক চিহ্ন দেবে, না হলে অসাবধানতাবশত কোনও প্রশ্নের উত্তর লিখতে ভুলে যেতে পারো।
আশাকরি, উপরোক্ত লেখায় যে বিষয়গুলি নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছি সেগুলি তোমরা মাথায় রাখলে এবার মাধ্যমিকে ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষা খুব ভালো হবে। অনেক বেশি নম্বর পেতে সাহায্য করবে।