মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
জাতীয় সংহতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
ভারতীয় সংহতির মূলমন্ত্র ‘অমৃতস্য পুত্রাঃ’। অর্থাৎ সকলেই সেই বিশ্বপিতার সন্তান। তাই প্রত্যেকের প্রতি সৌভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতা তথা ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ই ভারতীয় সনাতন ধর্মের প্রকৃত আদর্শ। ধর্ম, বর্ণ, ভাষার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করেও সকলে পরিচিত হয়েছেন ভারতীয়রূপে। ধর্মীয় বৈষম্য বা প্রাদেশিকতার দোহাই দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন যে ভারতে মাথাচাড়া দেয়নি তা নয়, তবে সংহতির মাহাত্ম্য তাকে ম্লান করেছে। এই মহৎ ভাব ভারতকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে গঠিত সার্ক আর্থিক ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে সহজ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে হটলাইন-এ কথা বলার যোগ্যতা ও অধিকার লাভ করেছে ভারত। জাপান, জার্মানি, ইজরায়েল, আরব উপসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে রচিত হয়েছে বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আদান-প্রদানের ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়েছে উন্নত দেশগুলির সঙ্গে। চীন-পাকিস্তানের সীমান্ত ঝঞ্ঝাট বাদ দিলে স্বীকার করাই যায় যে, উন্নয়নশীল ভারত ইতিমধ্যে তার বন্ধুসুলভ আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
অর্ক ঘোষ, দশম শ্রেণী
শিল্প ও সাহিত্য
ভারতের মহামানবের সাগরতীর চিরকালই ভেদাভেদ ভুলে বরণ করে নিয়েছে বহিরাগতদের, তাই ভারতীয় শিল্প সাহিত্যে বহিরাগতদের প্রভাব যথেষ্ট। ভারতে প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক— তিন যুগেই রচিত হয়েছে বিরল শিল্পকীর্তি। প্রাচীন যুগে সাহিত্য কীর্তির মধ্যে ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম্’, ‘ভট্টিকাব্য’, ‘মুদ্রারাক্ষস’ ও শিল্পকীর্তির মধ্যে অজন্তা-ইলোরার গুহাচিত্র উল্লেখযোগ্য। আর আর্য যুগে রচিত ঋক-সাম-যজু-অথর্ব বেদ ও মহাকাব্যদ্বয় ভারতের সম্পদ। ‘মধ্যযুগের কীর্তিগুলি অন্তরে ও বাহিরে ভারতীয়’ (ঐতিহাসিক হ্যাভেল)। এই সময় রচিত হয় বাবরনামা, আকবরনামা, চণ্ডীমঙ্গল, মনসামঙ্গল; প্রতিষ্ঠিত হয় কুতুবমিনার, বিবি কা মকবারা, তাজমহল, জগন্নাথধাম, কোনারক সূর্য মন্দির। আধুনিক যুগে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য ধারার মিলন গড়ে ওঠে বেলুড় মঠ, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, দক্ষিণেশ্বর মন্দির। আধুনিক যুগে কথাশিল্পীদের মধ্যে আছেন রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র, বিভূতিভূষণ, সত্যজিৎ রায়; আছেন আর কে নারায়ণ, বিক্রম শেঠ, অমিতাভ ঘোষ প্রমুখ ইংরাজি ভাষার সাহিত্যিক; রয়েছেন নন্দলাল বসু, রামকিঙ্কর, বেইজ, যোগেন চৌধুরী প্রমুখ চিত্রশিল্পী। এই ‘ইউনিটি ইন ডাইভার্সিটি’-তে ভারতমাতা সুসজ্জিতা। তাই সাধারণতন্ত্র দিবসের এই পুণ্যলগ্নে গেয়ে উঠতে ইচ্ছা করে—‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি। সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।’
অহন চক্রবর্তী, নবম শ্রেণী
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বর্তমানে বিজ্ঞান প্রযুক্তি সমস্ত কাজকে সম্পন্ন করার ক্ষমতা রাখে। চিকিৎসাশাস্ত্রে সর্বপ্রথম শল্যচিকিৎসার বর্ণনা পাওয়া যায় ‘চরক সংহিতা’ ও সুশ্রুত সংহিতা’য়। এরপরে হয় বৈদিক গণিত ও শূন্যের আবিষ্কার এবং অবশেষে গণিত ও বিজ্ঞানকে সঙ্গী করে ১৯৭৫ সালে জন্ম নেয় ‘আর্যভট্ট’। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে ১৯৩০ সালে ‘Scattering of Light by Raman’s Effect”-এর জন্য সি ভি রমন নোবেল পান। মানুষ তখনই বিজ্ঞানকে ভরসা করতে শিখেছিল যখন চিকিৎসা বিজ্ঞানে এলেন রোনাল্ড রস ও হরগোবিন্দ খুরানার মতো নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী। শুধু চিকিৎসা বিদ্যায় নয়, রসায়নে অবদান রেখে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রমাণ করেছেন যে, ভারত বিশ্বসেরা। লব্ধপ্রতিষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী হোমি জাহাঙ্গির ভাবা বিশ্বের প্রথম সারির পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে ভারতকে একাসনে বসিয়েছেন। বিক্রম সারাভাই প্রতিষ্ঠিত ISRO ২০১৩-এ MOM ও চন্দ্রযান ২ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে দুর্জেয়কে জয় করেছে। বর্তমান কালে তরুণেরা
যারা ভাবীকালের বৈজ্ঞানিক তাদের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হওয়া সর্বাগ্রে প্রয়োজন। তাই আধুনিক কালের ভারত বিজ্ঞানের সকল ক্ষেত্রেই উন্নত হয়েছে। সারা দেশে এখন অসংখ্য নবীন গবেষক। সায়ক মিত্র, দশম শ্রেণী
আমাদের মহান সন্তানগণ
পুত্রের সাফল্যেই মাতার গৌরব। বিশ্ব সাহিত্যে ভারত মাতার গৌরব বৃদ্ধি করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আর কে নারায়ণ, কাজী নজরুল ইসলাম, রাসকিন বন্ড প্রমুখ সাহিত্যিক। পরাধীনতার শৃঙ্খলমোচনের জন্য যাঁরা রক্তদান করেছেন তাঁদের মধ্যে ভগৎ সিং, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর নাম উল্লেখযোগ্য। বিশ্বদর্শনকে আলোড়িত করেছেন স্বামী বিবেকানন্দ তথা সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। জগদীশচন্দ্র বসু, সি ভি রমন, শ্রীনিবাস রামানুজন, এ পি জে আব্দুল কালাম, অমর্ত্য সেন প্রমুখ ভারতকে সম্মানের আসনে বসিয়েছেন। সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জ্যোতিরাও ফুলের অবদান অনস্বীকার্য। শাশ্বত অহিংসাকে রাজনীতিতে প্রয়োগ করলেন জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী। দেশের শাসনতন্ত্র রচনার সকল সফল দিশারীদের মধ্যে অন্যতম হলেন সংবিধান প্রণেতা ডঃ বি. আর আম্বেদকর, ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ, লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল প্রমুখ মানুষ। এই সুসন্তানগণের গৌরবেই সাধারণতন্ত্র দিবসের সার্থকতা।
অদ্বিতীয় বন্দ্যোপাধ্যায়, নবম শ্রেণী
প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য
ভারতবর্ষে ধর্ম ও সংস্কৃতিগত বৈচিত্র্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যও কম নয়। এর উত্তর দিকে রয়েছে নবীন পাললিক শিলায় গঠিত সুউচ্চ হিমালয় পর্বতশ্রেণী। আবার অতি প্রাচীন আগ্নেয় শিলায় গঠিত দাক্ষিণাত্য মালভূমিও এখানে বর্তমান। পৃথিবীর সর্বাধিক বর্ষণসিক্ত মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির মৌসিনরাম অঞ্চলের পাশাপাশি বৃষ্টিহীন উষ্ণ থর মরুভূমি অঞ্চল এখানে দেখা যায়। ভারতবর্ষের তিন দিকে সমুদ্র এবং অভ্যন্তর অসংখ্য নদ-নদীতে পূর্ণ। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ বনভূমি, যার মধ্যে সুন্দরবন সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এই সব নদ-নদীর জলরাশি ও পলিমাটি দেশের অধিকাংশ অঞ্চলকে সুজলা-সুফলা-শস্য শ্যামলা করে তুলেছে। এই সমস্ত প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের সৌন্দর্যতে মুগ্ধ মন বলে ওঠে—‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা’
কুন্তল প্রামাণিক, সপ্তম শ্রেণী
বৈচিত্র্যপূর্ণ সংবিধান
বহু ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-জাতির মিলনক্ষেত্র ভারতবর্ষের সংবিধান রচনা করার কাজ ছিল জটিল ও কষ্টসাধ্য। সেই অসাধ্য সাধন করতে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে গণপরিষদ গঠিত হয়। ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ এই পরিষদের স্থায়ী সভাপতি নির্বাচিত হন। তাঁর নির্দেশে বি আর আম্বেদকরের সভাপতিত্বে সাতজনের খসড়া কমিটির অক্লান্ত পরিশ্রমে সংবিধান রচিত হয়েছিল যা ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গৃহীত ও ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি কার্যকর হয়। বিভিন্ন দেশের সংবিধানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ভারতীয় সংবিধান রচিত হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাকে ‘সংবিধানের আত্মা’ বলা হয়। সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা আছে, ‘আমরা, ভারতের জনগণ’ অর্থাৎ জনগণই হল ভারতবর্ষ রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি।
১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে সংবিধানের ৪২তম সংশোধনী থেকে ভারতকে ‘সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধান প্রণয়ন থেকে এখনও পর্যন্ত বহুবার এটি পরিমার্জিত হয়েছে। নানা ভাষা, নানা মত ও নানা ধর্মসংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র ভারতবর্ষের সংবিধান তাই সমস্যাবহুল বর্তমান বিশ্বের বহু দেশের কাছে অনুকরণযোগ্য হয়ে উঠেছে, যা আমাদেরকে গর্বিত করে।
অরিত্র অম্বুধ দত্ত, দশম শ্রেণী
আমাদের দর্শন
যা মানুষকে ধারণ করে তা-ই ধর্ম। ধর্ম নিয়ে পৃথিবীব্যাপী যে বর্বরতার যুদ্ধ, তাকে অগ্রাহ্য করে ভারতবর্ষ চলেছে সকল ধর্মের মহামিলনের পথে। গৌতম বুদ্ধ থেকে শুরু করে শ্রীরামকৃষ্ণদেব পর্যন্ত বহু মহামানবের পুণ্য জন্মভূমি এই ভারতবর্ষ। ভারত যুগ যুগ ধরে সর্বধর্ম সমন্বয়ের সাধনা করেছে ও বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যকে স্থাপন করতে চেয়েছে। কবিগুরুকে অনুকরণ করে বলা যায়— ‘‘হেথা আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড় চীন্/ শক হুন
দল পাঠান মোগল
এক দেহে হলো
লীন।’’ বিভিন্ন
পুরাণ-ধর্মগ্রন্থের
মধ্য দিয়ে ভারত মানব ধর্মের বাণী প্রচার করেছে। ধর্ম ও দর্শন পৃথকধর্মী হলেও দার্শনিকের চিন্তা ব্যতীত
ধর্ম যুগোপযোগী হতে পারে না। সাংখ্য, যোগ, মীমাংসা দর্শন প্রভৃতি হল প্রগাঢ় মননের ফসল। তাই আর্যযুগ থেকে এ যাবৎ বিশ্বে আধ্যাত্মিকতার মূলতম প্রবক্তা ভারতীয়গণ।
প্রীতম মাইতি, দশম শ্রেণী
সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র
জনগণের দ্বারা পরিচালিত শাসনতন্ত্রকে গণতন্ত্র বলে। ভারতীয় গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ পদাধিকারী রাষ্ট্রপতি হলেও কার্যক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভাই সুবিশাল এই সাধারণতন্ত্রের পরিচালক। প্রতিটি রাজ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট আইনসভা। মুখ্যমন্ত্রী ও জননির্বাচিত প্রতিনিধিগণ আইনসভার সদস্য হিসাবে রাজ্যের সার্বিক শাসন পরিচালনা করেন। এছাড়াও সর্বনিম্ন স্বায়ত্বশাসন স্তরের গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ ও শহরাঞ্চলের পৌরসভার সকল সদস্যই সাধারণ জনগণ দ্বারা নির্বাচিত। গণতন্ত্রের অন্যতম অধিকার হিসাবে সংসদ ভবনের লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যদের ‘ইমপিচমেন্ট অর্ডার’ প্রদানের ক্ষমতা আছে, যা স্বৈরাচারী বা প্রজাপীড়ক রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করে। সুতরাং, দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধিকারীও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। তাই আজকের সাধারণ নাগরিকই যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে আগামীতে শাসকের পদ অধিকার করতে পারে। এইরূপ সার্বিক অংশগ্রহণের মাধ্যমেই ভারতীয় গণতন্ত্র তার সাফল্যের পথে
এগিয়ে চলেছে।
অত্রি চট্টোপাধ্যায়, অষ্টম শ্রেণী
আমাদের ক্রীড়াজগৎ
লিয়েন্ডার পেজ থেকে স্বপ্না বর্মন— ভারতীয় ক্রীড়াবিদগণ ভারতকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্ব দরবারে। শুধু ১৯৮৩ বা ২০১১-এর ওয়ান ডে ক্রিকেটে বিশ্বজয়ী হিসাবে নয়, এশিয়াড থেকে কমনওয়েলথ এমনকী অলিম্পিকেও ভারতীয়রা খ্যাতিলাভ করেছে। অ্যাথলেট হিসাবে পিটি উষা, ব্যাডমিন্টনে সাইনা নেহওয়াল কিংবা সানিয়া মির্জা এশিয়াড জয় করেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে প্রথম একক বিভাগে স্বর্ণপদক পান অভিনব বিন্দ্রা। তারপর পি ভি সিন্ধু, সাক্ষী মালিক কুস্তিতে সুশীল কুমার অসাধারণ কৃতিত্বে জয় করেছেন বিশ্বমঞ্চ। জাতীয় খেলা কবাডিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত আটটি বিশ্বকাপের সবকটিই জয় করেছে। ১৯৩৬-এ বার্লিন অলিম্পিকে ‘হকির জাদুকর’ ধ্যানচাঁদের নেতৃত্বে স্বর্ণজয়ও ভারতীয় ক্রীড়াজগতের অনুপ্রেরণা স্বরূপ। জ্যাকলিনে নীরজ চোপড়া, গ্র্যান্ড মাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দের বিশ্বজয়, কিংবা ছয় বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান মেরি কমের বক্সিং প্রশংসনীয়। ডবলিউ ডবলিউ ই’তে ওয়ার্ল্ড হেভি ওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপে জিন্দার মহল পদকলাভ করেছেন। ফুটবলার গোষ্ঠপালের পায়ের জাদু ভারতীয় যুবকদের আজও বিশ্বজয়ের প্রেরণা দেয়। বিরাট কোহলি, সুনীল ছেত্রীরা দেশের আত্মবিশ্বাস তৈরি
করে দিয়েছেন।
সায়র ভট্টাচার্য, দশম শ্রেণী
বর্ণময় সংস্কৃতি
সংস্কৃতি হল মার্জিত মনের সম্পদ ও প্রকাশ। ১৩৬ কোটির এই সুবিশাল গণতন্ত্রে বৈচিত্র্যের নানা রং চোখে পড়ে পোশাকে, ভাষায়, ধর্মে ও খাদ্যাভ্যাসে। এই সকলের সমন্বয়েই গড়ে ওঠে সর্বভারতীয় সংস্কৃতি। ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের জীবনযাত্রার প্রকৃতিকে। পার্বত্য উত্তরাংশে কত্থক, লাহোড়ি নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। পিছিয়ে থাকে না মরু প্রধান পশ্চিমাঞ্চলও। রাজস্থানের ঘুমর, গুজরাটের ডান্ডিয়া নৃত্যের শৈলীও প্রশংসনীয়। পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতের বিহু, কথাকলি, ভারতনাট্ট্যম নৃত্য বহন করে পূর্বতন সংস্কৃতিকে। ধুতি-পাঞ্জাবি, ঘাঘরা, মেখলা, শাড়ি, গান্ধীটুপি ভারতীয় পোশাক তালিকাকেও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে। এছাড়া হিন্দু, শিখ, মজদীয়, ইসলাম, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নানাবিধ ধর্মাবলম্বীগণ তাদের আচারে ও খাদ্যাভ্যাসে সমৃদ্ধ করেছে ভারতকে। ভারতীয় জনগণ ভারতের মহামূল্যবান সম্পদ। তাদের সরলতা, সামাজিকতা, উদারতা বিশ্বের কাছে অনুকরণীয়। ভারতীয় ছাত্রসমাজ অত্যন্ত জ্ঞানপিপাসু, ব্যতিক্রম বাদ দিলে আপামর দেশবাসী কমবেশি শিক্ষাপ্রেমী। তাই তৃতীয় বিশ্বের ভারত তার প্রতিকূলতাগুলি জয় করতে সক্ষম হচ্ছে। আমাদের দেশ যে তার উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছে, নবীন প্রজন্ম ও যুবশক্তিই তার প্রধান প্রাণশক্তি। আমাদের প্রধান শিক্ষক মহারাজ স্বামী মুরলীধরানন্দ বলেন, ‘মানব দেহ নয়, মানব চৈতন্যই সবকিছু। মাতা-পিতাকে শ্রদ্ধা করলেই মানুষ হওয়া যায়। তারপর নিষ্কাম কর্মের মাধ্যমে দেবত্ব অর্জন হবে। এই পথেই ভারত এগচ্ছে। এভাবেই ভারতবাসী এগতে থাকবে।’
স্বরূপ মণ্ডল, দশম শ্রেণী