Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

পঞ্চমুণ্ডির আসন
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

তুষারবাবু ভ্যানরিকশতে বসে শ্মশানের দিকে যাত্রা করার আগে গোবিন্দ সাহার পরিচিত স্থানীয় যে মানুষটির বাড়িতে সকালে এসে উঠেছিলেন সেই বিধু মল্লিক বললেন, ‘আপনার সঙ্গী হতে পারলাম না বলে দুঃখিত। একথা সত্যি সাধুবাবা পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে কারওর জন্যত কিছু চাইলে সে প্রার্থনা মঞ্জুর হয়। এ বিষয়ে বহু জনশ্রুতিও আছে এ অঞ্চলে । কিন্তু তবুও ওই পঞ্চমুণ্ডির আসনকে এই গ্রামের মানুষজন বড় ভয় পায়। জানেনই তো,  পঞ্চমুণ্ডির আসন মানেই অপদেবতা, ভূত-প্রেতের আনাগোনা। তাছাড়া ওখানে একটি কুয়োও আছে। সাধুবাবা কারও উপর কুপিত হলে তাকে ওই কুয়োতে ফেলে দেন।  সেই ব্যওক্তির আত্মা তখন  ওই কুয়োতেই আটকে পড়ে। আমি ছাপোষা মানুষ। সন্তান-সন্ততি নিয়ে সংসার করি। তাই ওখানে যাওয়ার সাহস নেই আমার। তার উপর আজ আবার অমাবস্যার। পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসবেন সাধুবাবা। মহামায়ার কাছে প্রার্থনা করি, আপনার যাত্রা শুভ হোক। তারপর ভালোয় ভালোয় ফিরে আসুন।’ একটানা কথাগুলি বলে থামলেন তিনি। তার কথা শুনে তুষারও মনে মনে বললেন, ‘প্রয়োজন না হলে আমিও কি আর যেতাম সেখানে! দেখি গোবিন্দ সাহার মতো সাধুবাবার আশীর্বাদে আমারও ভাগ্যো ফেরে কি না।’
এরপর তিনি বিধু মল্লিককে ধন্য্বাদ জানিয়ে রওনা হলেন তাঁর গন্তব্যে র উদ্দেশে। ভ্যা নরিকশ কিছুটা এগতেই একটি লোক হঠাৎ ছুটে এল। লোকটির পোশাক শহুরেদের মতো। চালককে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এখানকার শ্মশানটা কোন দিকে? আমাকে পৌঁছে দিতে পারবে সেখানে?’ চালক বলল, ‘ওখানেই যাচ্ছি এই বাবুকে নিয়ে। ওঁর আপত্তি না থাকলে আপনাকেও নিয়ে যেতে পারি।’
তুষার সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘আপত্তির কি আছে! নিয়ে নাও।’
ভদ্রলোক উঠে বসে বললেন, ‘আমি কনিষ্ক পাইক। কলকাতায় থাকি। সাধুসঙ্গের নেশা আছে।’
তুষারও নিজের নাম বললেন এবং জানালেন তিনিও কলকাতারই। সাধুবাবার দর্শনেই চলেছেন। দু’জনের পরিচয় পর্ব মেটার পর কণিষ্ক চালককে বললেন, ‘আজ তো অমাবস্যাক। সাধুবাবার ডেরায় কালীপুজো হবে। তুমি সে কালীমূর্তি দেখেছ? অনেক মানুষ সেখানে যায় পুজো দেখতে?’
বড় রাস্তা ছেড়ে মেঠো পথ ধরে চলতে চলতে চালক বলে চলল, ‘ওখানে পঞ্চমুণ্ডির আসন আছে। তাই ওদিককার শ্মশানে গ্রামের লোকজন দল বেঁধে মড়া পোড়াতে গেলেও কখনওই কেউ সে পুজোয় যায় না। সে মূর্তিও কেউ কোনওদিন তাই দেখেনি। শুনেছি, কষ্টিপাথরের মূর্তি। কোনও এক রাজা নাকি বহু বছর আগে প্রচুর সোনার গয়না দান করেছিলেন মাকে।’
আধ ঘণ্টা চলার পর ভ্যা নরিকশ পৌঁছে গেল শীর্ণকায়া একটি নদীর পাড়ে। সেখানে ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে আছে পোড়া কাঠ, কয়লার টুকরো, ভাঙা মেটে কলসি। ভ্যা নচালক নেমে পড়ল সেখানে। তারপর বলল, ‘এটাই শ্মশান। ওপাশে যে বড় বড় গাছের জঙ্গল দেখছেন, ওখানেই সাধুবাবার ডেরা। আপনাদের এখানে নেমে পায়ে হেঁটে নদী পেরিয়ে সেখানে যেতে হবে। আমি আর এরপর যাব না।’
ভাড়া মিটিয়ে কনিষ্ক নামের সেই লোকটির সঙ্গে তুষার এগিয়ে চললেন নদী পেরিয়ে জঙ্গলের দিকে। সাধুবাবার আস্তানার খোঁজে। 
(২)
বিশাল বিশাল প্রা চীন শ্যাসওলা ধরা গাছের সে  জঙ্গল এমনই ঘন যে, সূর্যালোককে তারা যেন সেখানে প্রবেশ করতে দিতে চায় না। কেমন গা ছমছমে আধি ভৌতিক পরিবেশ। কিছুটা চলার পর হঠাৎই  মাথার উপরের ডালপালা কেঁপে ওঠার শব্দে সেদিকে তাকিয়ে দু’জনে দেখলেন একটি বিশাল হনুমান সেখানে বসে তাদের দেখছে। হনুমানটিকে দেখে তারা থমকালেন ঠিকই,  কিন্তু  প্রাণীটিকে তাদের আক্রমণাত্মক বলে মনে হল না। তারা আবারও চলতে শুরু করলেন। যদিও মাথার উপরের শব্দ শুনে তারা অনুমান করলেন প্রাণীটিও তাদের অনুসরণ করে চলেছে। জঙ্গলের ভিতর আরও কিছুদূর চলার পর একটি উন্মুক্ত স্থানে এসে উপস্থিত হলেন তাঁরা। সে জায়গার ঠিক মাঝখানে বাখারি আর শনের ছাউনি দেওয়া একটি কুঁড়ে— সেটাই সাধুবাবার ডেরা।
তুষার আর তার সদ্যয় পরিচিত সঙ্গী কনিষ্ক সেই কুঁড়ে ঘরের সামনে এসে দাঁড়াতেই হনুমানটি একটি গাছের ডাল থেকে লম্বা এক লাফে কুঁড়ের চালে গিয়ে পড়ল। আর তারপর হুপ্ হুপ্ শব্দে ডাকতে শুরু করল।  সে ডাক শুনে সাধুবাবা বলে উঠলেন , ‘কারা এলি? ভিতরে আয়।’
ঘরে ঢোকার আগে একটা ঘেরা বারান্দা মতো জায়গার এককোণে অন্ধকারের সঙ্গে গা মিশিয়ে বসে থাকা নেংটি পরা কালো মিশমিশে বাবরি চুলের একটি লোক দেখলেন তারা। রক্তাভ তার চোখ। তুষারের তাকে দেখে শ্মশানের চণ্ডাল মনে হল। তার দিকে একবার তাকিয়ে এরপর দু’জনে প্রবেশ করলেন সাধুবাবার ঘরে। সেখানে একটি খাটিয়ার উপর জটাজুটোধারী রক্তাম্বর পরিহিত সাধুবাবা বসে আছেন। তাঁর পায়ের কাছে একটি বেজি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তুষারদের দেখে খানিকক্ষণ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের পর তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘তোরা কারা? কী চাস?’
কনিষ্কই প্রথম উত্তর দিলেন। বললেন, ‘আমার কোনও প্রার্থনা নেই। সন্ন্যা সী দর্শনে পুণ্য হয়। তাই আপনার দর্শনে এসেছি। যদি অনুমতি দেন তো মায়ের পুজোর সময় মাকে একটি বার দেখতে চাই।’
তুষার এরপর সন্ন্যারসীর উদ্দেশ্যে  হাতজোড় করে বললেন, ‘আমি কিন্তু আপনার কাছে বড় আশা নিয়ে এসেছি বাবা। ব্যাবসার অবস্থা খুব খারাপ। বারে বারে লোকসানের ধাক্কায় দেনার দায়ে এবার স্ত্রী-সন্তানের হাত ধরে পথে বসার অবস্থা হয়েছে। আপনি আমাকে রক্ষা করুন।’ এরপর তিনি আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ঘরের এক কোণে চোখ পড়তে নিজে থেকেই কথা বলা বন্ধ হয়ে গেল তার। একটি বিশাল বড় সাপ কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে সেখানে। মাঝে মাঝে ফণাও তুলছে। রাজ গোখরো। মৃত্যুর দোসর। 
তুষারের আতঙ্কের কারণ বুঝতে পেরে সাধুবাবা হেসে বললেন, ‘ওকে নিয়ে তোদের আতঙ্কিত হতে হবে না। খারাপ মানুষ ছাড়া ও কারও ক্ষতি করে না। দেখছিস না সাপে-নেউলে কেমন একসঙ্গে আমার কাছে রয়েছে।’
সত্যিগ ব্যা পারটা বড় অদ্ভুত। নিশ্চিতরূপে এটি সাধুবাবার অলৌকিক ক্ষমতার প্রকাশ। এরপর কুঁড়ে ছেড়ে বেরিয়ে তাদের নিয়ে এলেন ঘরের পিছনের অংশে। সেখানেই পঞ্চমুণ্ডির আসন ও মা কালীর বেদী। একটি ঝাঁকড়া যজ্ঞডুমুর গাছের ঠিক নীচেই অনুচ্চ সে বেদীর উপর অধিষ্ঠিতা মাঝ আকৃতির কষ্ঠিপাথরের দেবী মূর্তি। সর্বাঙ্গ তাঁর স্বর্ণালঙ্কারে ঝলমল করছে। আর তার ঠিক সামনেই মাটি নিকোনো একটি চারকোণা বেদীর উপর বাঘছাল পাতা– পঞ্চমুণ্ডির আসন!
তিনজন সে আসনের কাছে পৌঁছতেই দেবী মূর্তির আড়াল থেকে একটি প্রাণী বেরিয়ে এল। আধো অন্ধকারে তার চোখ জ্বলছে। একটি শেয়াল! তারপর তুষারদের দেখে আবার যজ্ঞডুমুর গাছের আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল সে। সাধুবাবা হেসে বললেন, ‘রাতের জীব তো, তাই দিনের প্রাণীদের দেখলেই পালায়।’
তুষার একসময় সে জায়গা থেকে কিছুটা তফাতে কুয়োটাও দেখতে পেলেন। মাটির ওপরে তার দেহের সামান্য অংশই জেগে আছে। বেখেয়ালে কেউ সে পথে হাঁটলে তার কুয়োর ভিতর পতন অবশ্যম্ভাবী।
কনিষ্ক দেবী মূর্তির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। দেবী মূর্তি আর পঞ্চমুণ্ডির আসন দেখানোর পর সাধুবাবা তাঁদের বললেন, ‘এসেছিস যখন, তখন আজ রাতটা আমার ঘরেই থেকে যা। রাতে পুজো দেখবি।’
(৩)
কিছুক্ষণ পর তাঁরা যখন কুঁড়েঘরে ফিরে এলেন তখন মাঝদুপুর। কিন্তু তখন সেখানে সেই চণ্ডাল, সাপ বা বেজি কেউই নেই।  হয়তো অন্যন কোথাও চলে গিয়েছে সেখান থেকে। সামান্যঝ কিছু কথাবার্তার পর কনিষ্ক সাধুবাবাকে বললেন,  ‘ভাঙ এনেছি সঙ্গে। একটু শরবত করে দিই আপনাকে। আপনি গ্রহণ করলে আমরাও একটু প্রসাদ পেতে পারি তবে।’
সাধুবাবা সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন। সাধুবাবা আর তুষার এরপর কথা বলতে লাগলেন। আর কনিষ্ক বারান্দায় গেলেন শরবত বানাতে। কিছুক্ষণ পর মাটির ভাঁড়ে শরবত বানিয়ে এনে তুলে দিলেন সাধুবাবা আর তুষারের হাতে। সাধুবাবা তাতে একটি চুমুক দিয়ে বললেন, ‘বাহ ভালো বানিয়েছিস।’
কনিষ্ক বললেন, ‘অনুমতি দিলে আমি বাইরে খোলা আকাশের নীচে বসে পান করি।’ কিছু পরে তুষারও বেরিয়ে এলেন কুঁড়ে থেকে। তবে কনিষ্ককে তিনি দেখতে পেলেন না। তুষারের ভাঙ খাওয়ার অভ্যা স নেই। তবুও এক যাত্রায় যাতে পৃথক ফল না হয়, তাই একটা চুমুক দিলেন তিনি শরবতে। আর তারপরই ঘটল একটা ঘটনা। হঠাৎই কুঁড়ের ছাদ থেকে তার উপর লাফিয়ে পড়ল সেই হনুমান। আকস্মিক এই ঘটনায় তার হাত থেকে ছিটকে পড়ল ভাঙের পাত্রটা। এরপর অবশ্য  প্রাণীটা ছুটল অন্য দিকে। পাছে সে আবারও কোনও উপদ্রব করে, সেই ভয়ে তুষার ঘরের ভিতর ফিরে এলেন। তিনি দেখলেন, সাধুবাবা ইতিমধ্যেেই চিৎপাত হয়ে পড়ে আছেন তার খাটিয়ায়। শূন্যয় ভাঁড়টা মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। মাত্র এক চুমুক শরবত খেলেও কয়েক মুহূর্তের মধ্যে তুষারের মাথাটাও কেমন ঝিমঝিম করতে লাগল। তিনিও শুয়ে পড়লেন মাটিতে। 
(৪)
তুষারের চেতনা ফিরল যখন, তখন বাইরের পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে গিয়েছে। ঘড়িতে সময় দেখে চমকে উঠলেন তিনি। প্রায় মধ্য রাত। অর্থাৎ অন্তত সাত-আট ঘণ্টা কেটে গেছে ইতিমধ্যে। উঠে দাঁড়াতে গেলেন তিনি। কিন্তু তখনও মাথাটা ঝিমঝিম করছিল। সাধুবাবা একইভাবে শুয়ে আছেন। তুষার বার কয়েক ডাকলেন তাঁকে। কিন্তু তিনি সাড়া দিলেন না। হতভম্ব তুষার উপায়ান্তর না দেখে বাইরে বেরিয়ে এলেন কনিষ্কের খোঁজে। সেখানে তখন অমাবস্যাার মিশমিশে কালো রাত। হঠাৎ এক ঝলকের জন্য  যেন কনিষ্ককে দেখতে পেলেন তিনি। একটি মশাল হাতে নিয়ে তিনি অদৃশ্যা হয়ে গেলেন কুঁড়ের পিছনে পঞ্চমুণ্ডির আসনের দিকে। কৌতূহলী তুষারও সেদিকেই এগলেন তার পিছনে পিছনে। 
ততক্ষণে কনিষ্ক পৌঁছে গিয়েছেন পঞ্চমুণ্ডির আসনের সামনে। তার এক হাতে একটি ব্যা্গ, অন্যপ হাতে মশাল। সেই আলোতে ঝিলিক দিচ্ছে দেবীর গয়না। সেদিকে কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর কনিষ্ক পাইক বেশ নিশ্চিন্তভাবেই মশালটা মাটিতে পুঁতে এগিয়ে গেল দেবী মূর্তির দিকে। 
তাঁর উদ্দেশ্যদ কী? তাঁকে ডাকতে গিয়েও থমকালেন তুষার। তারপর একটা গাছের আড়াল থেকে চেয়ে রইলেন সেদিকে। ঠিক তখনই হঠাৎ সেই হনুমানটি কোথা থেকে এসে লাফিয়ে পড়ল কনিষ্কর সামনে। কনিষ্ক তাকে তাড়াতে চাইলেন। কিন্তু সে নড়ল না। যেন বেদী আগলে দাঁড়িয়ে রইল সেখানে। এরপর যজ্ঞডুমুর গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল  শেয়ালটাও। আর মায়ের বেদীর দু’পাশে আবিষ্কৃত হল সাধুবাবার সাপ ও বেজি। একসঙ্গে এতগুলো প্রাণীকে দেখে থমকালেন কণিষ্ক। তবে আরও একজনের আসা তখনও বাকি ছিল সেখানে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেনই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে তাঁর মুখোমুখি দাঁড়াল সকালের সেই চণ্ডাল। তাঁকে দেখেই ব্যাসগ থেকে একটি পিস্তল বের করে কনিষ্ক বলে উঠলেন , ‘পালা এখান থেকে।’
লোকটা কিন্তু শান্তই রইল। কনিষ্ক এবার আর সময় নষ্ট করলেন না। গুলি চালিয়ে দিলেন। গুলিটা তার গা ফুঁড়ে বেরিয়ে যজ্ঞডুমুর গাছটার গায়ে বিঁধল। গাছটা যেন কেঁপে উঠল। কিন্তু চণ্ডাল দাঁড়িয়েই রইল। একইভাবে। কনিষ্কর মতো তুষারও হতবাক হয়ে গেলেন ব্যায়পারটা দেখে। আর তখনই সেই চন্ডাল সহ বাকি প্রাণীগুলি এগতে লাগল কনিষ্কের দিকে। তিনি এবার ভয় পেয়ে ছুটতে চাইলেন। কিন্তু মুহূর্তের অসতর্কতায় গিয়ে পড়ে গেলেন কুয়োর পাশে আর তারপর একটি আর্ত চিৎকারের সঙ্গে হারিয়ে গেলেন কুয়োর ভিতর। ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল তুষার সেখানেই সংজ্ঞা হারালেন।
(৫)
চোখে মুখে জলের স্পর্শে তুষারের যখন জ্ঞান ফিরল তখন সদ্যয় ভোর হয়েছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সাধুবাবা। একহাতে তাঁর কমণ্ডলু, অন্যহাতে শালপাতায় মায়ের প্রসাদ। তুষার তাঁকে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত গলায় বললেন, ‘বিশ্বাস করুন, আমি কিছু করিনি।’ সাধুবাবা হেসে বললেন, ‘জানি। অলংকার চোরকে ওরা শাস্তি দিয়েছে। প্রসাদটা নে। মায়ের কাছে তোর কথা বলেছি। সৎপথে থাকিস সব ঠিক হয়ে যাবে।’ তাঁর কথায় কিছুটা আশ্বস্ত তুষার আবারও বললেন, ‘ওরা আবারও ফিরে আসবে না তো?’
সাধুবাবা বললেন, ‘না ওরা আসবে না। ভূতচতুর্দশীর রাতেই ওরা এই পঞ্চমুণ্ডির আসন ছেড়ে বেরিয়ে আসে এবং অমাবস্যাতয় মায়ের পুজোর শেষে সেখানেই ফিরে যায়। পঞ্চমুণ্ডির আসন কীভাবে তৈরি হয় জানিস তো? এই আসন বানানো হয় চণ্ডাল, ধূর্ত শৃগাল, বৃক্ষচারী হনুমান, ক্ষিপ্র বেজি আর ক্রূর সর্পের খুলি দিয়ে। ওরা কেউই জীবিত নয়। ওদের সবার খুলি পোঁতা আছে ওই আসনের নীচে।’
সাধুবাবার কথায় বিস্মিত তুষার কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন সেখানে। তারপর মায়ের প্রসাদ নিয়ে আরও একবার সেই পঞ্চমুণ্ডির আসন, দেবী মা এবং সাধুবাবাকে প্রণাম করে ফেরার পথ ধরলেন। 
12th  November, 2023
বুমেরাং

প্রতুলবাবুর মুখে আজ আচ্ছা করে ঝামা ঘষে দিয়েছেন অতুলবাবু। অ্যাক্টিংয়ের সাধ আর মজা করার নেশা আজ ছুটে গেছে জম্মের মতো।
বিশদ

03rd  December, 2023
স্পর্শ
রাজেশ কুমার

অন্বেষা ফোনেই পেয়েছিল খবরটা, গতকাল সকালে। মনে হচ্ছিল, ওই মানুষটাই কেন! পৃথিবীতে তো আরও মানুষ ছিল। চোর, গুন্ডা, ধর্ষক, নেশাখোর...। দেখে দেখে ভালো মানুষদেরই কেন এসব হয়, ওপরঅলা কি চোখে দেখতে পায় না!  বিশদ

26th  November, 2023
আবদুর রহিম খানের সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

তাঁর এতদিনের অভিভাবক বৈরাম খানের অতি সক্রিয়তার খবর বাদশা আকবর পাচ্ছেন। ৫৮ বছর বয়সি বৈরাম সপ্তাহে তিনদিন দরবারের আমিরদের নিয়ে বসছেন বৈঠকে। অস্ত্রাগার, হাতিশাল, ঘোড়াশাল, রাজস্ব বিভাগ— প্রতিটি বিষয়েই তাঁর মতামত ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। বিশদ

19th  November, 2023
দুনিয়াদারি
সৌরভ মিত্র

কাল রাত থেকেই দেবোত্তমের মনটা বিশেষ ভালো নেই। ছেলেকে বকাবকি করলেই দু-তিনদিন এমন হয়। কারণগুলো আপাতভাবে ন্যায্য হলেও কোথাও যেন একটা অপরাধবোধ কাজ করে। বছর-আটেক বয়স। সেই অর্থে চালাক-চতুর নয়। আপনভোলা। বিশদ

19th  November, 2023
ভৌতিক কেল্লা ভানগড়
সমুদ্র বসু

ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে রাজস্থানের আলোয়ার জেলার ভানগড়ে তৈরি হয় একটি কেল্লা। যেটি তৈরি করেছিলেন অম্বরের তখনকার রাজা ভগবন্ত দাস। পরবর্তীকালে তাঁর ছোট ছেলে  মাধো সিং কেল্লাটির দখল নেন। মতান্তরে মাধো সিং-ই এই দুর্গ তৈরি করিয়েছিলেন। বিশদ

19th  November, 2023
মিষ্টির ভুবন
অর্পিতা সরকার (চন্দ)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘সন্দেশ বাংলাদেশে বাজিমাত করেছে। যা ছিল শুধু খবর, বাংলাদেশ তাকে সাকার বানিয়ে করে দিল খাবার।’ বিশদ

12th  November, 2023
বাজির আলোয় সেকালের কলকাতা

মারাঠা যুদ্ধে ইংরেজদের জয়লাভের উপর পাকা সিলমোহর পড়ল উনিশ শতকের একদম গোড়ায়। এমন ঘটনার উদযাপনে একটু বিশেষ ধরনের আমোদের ব্যবস্থা করতে আয়োজন হল এক এলাহি আতসবাজির প্রদর্শনী।
বিশদ

05th  November, 2023
কিংবদন্তি বেতারনাট্য প্রযোজক শ্রীধর

১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসের একটি দিন। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে একটি নাটকের রেকর্ডিংয়ের জন্য অভিনেতারা সমবেত হয়েছেন।
বিশদ

05th  November, 2023
পুরনো সিন্দুক

ফ্ল্যাটের বাসিন্দা হিসাবে আজকের সকালটা বিজনের প্রথম সকাল। দুশো চল্লিশ স্কোয়ার ফিটের ছোট্ট এক পরিসরের মধ্যে ক্রমাগত ঘুরপাক খেতে খেতে এর মধ্যেই যেন হাঁপিয়ে উঠেছে বিজন।
বিশদ

05th  November, 2023
অতীতের পৃষ্ঠায় সংসদ ভবন
সমৃদ্ধ দত্ত

বাঙালির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে সদ্য প্রাক্তন হয়ে যাওয়া ভারতের এতকালের ওই পার্লামেন্ট ভবন। যাকে এখন নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংবিধান সদন’। বিশদ

29th  October, 2023
সংসারচরিত
সোমজা দাস

দীপ্তর সঙ্গে থাকা যে আর সম্ভব নয়, সেটা ভালোভাবে বুঝে গেছে সুমেধা। সাত বছরের প্রেমে কত স্মৃতি, একসঙ্গে কত শপথ, স্বপ্নের মুহূর্ত বুনেছে তারা। কিন্তু বিয়ের এক বছরেই এমন মোহভঙ্গ হবে সেটা সুমেধার ভাবনারও অতীত ছিল।           বিশদ

29th  October, 2023
সেকালের দুর্গাপুজোর আমোদ

বৃষ্টি, গুমোট গরম আর জল-কাদা মাখা রাস্তা ঠিক পুরাকালের রাজপুরুষদের দিগ্বিজয়ে বেরনোর মতো পরিবেশ তৈরি না করলেও, ক্যালেন্ডার বলছে ‘এসেছে শরৎ’।  তবে ছাপোষা গৃহস্থ প্রকৃতির উদার আহ্বানের থেকে পুজোর আগমন বার্তা বেশি টের পান কলিং বেলের টুং টাং ডাকে।
বিশদ

15th  October, 2023
উঠোন
সৌরভ হোসেন

আসমত গেরস্তর ভুঁইয়ের পরেই হজরুদ্দির বাড়ি। ভুঁইটা যেদিকটায় ঢালু হয়ে নেমে গিয়েছে সেদিকটায় বড়ঘাট্টা বিল। হজরুদ্দির বাপ নুরুদ্দি বলতেন, ওখানে আগে নদী ছিল। সে নদীর সঙ্গে পদ্মার যোগ ছিল। সে নদী মজে বিল হল। এখন নাবাল জমি। বিশদ

08th  October, 2023
হাতিবাগানের  থিয়েটার
সন্দীপন বিশ্বাস

দিনকয়েক আগে উত্তর কলকাতার রাজা রাজকৃষ্ণ স্ট্রিট দিয়ে হাঁটতে গিয়ে থমকে গেলাম। অনেকেই রাজকৃষ্ণ স্ট্রিট নামটা শুনে বুঝতে পারবেন না। কিন্তু যদি বলি একসময় এখানেই ছিল বিশ্বরূপা, রঙ্গনা, বিজন থিয়েটার সারকারিনা থিয়েটার হল, তাহলে হয়তো সবাই বুঝতে পারবেন। বিশদ

01st  October, 2023
একনজরে
আচমকা চিতাবাঘের দেখা! দক্ষিণ দিল্লির নেব সরাইয়ে এই ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্য পশুটির খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। ...

পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সালার থানার খাড়েরা গ্রামের এক যুবকের। মৃতের নাম বাদশা শেখ (২৪) । গ্রামের অঞ্চলপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। মাসতিনেক আগে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজে সেখানে গিয়েছিলেন। ...

আজ, মঙ্গলবার বালুরঘাট এয়ারপোর্ট পরিদর্শনে আসছে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি দল। আজ সকাল ১০টা নাগাদ ওই প্রতিনিধি দল বালুরঘাট এয়ারপোর্ট পরিদর্শন করবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ...

আমেরিকায় ফের শ্যুটআউট। এবার ডালাসের একটি বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হল। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব মাটি দিবস
১৩৬০: ফ্রান্সের মুদ্রা ফ্রাঁ চালু হয়
১৮৫৪: রিভলবিং থিয়েটার চেয়ারের পেটেন্ট করেন অ্যারোন অ্যালেন
১৮৭৯: স্বয়ংক্রিয় টেলিফোন সুইচিং সিস্টেম প্রথম পেটেন্ট হয়
১৯০১: মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজক, নির্দেশক ও কাহিনীকার ওয়াল্ট ডিজনির জন্ম
১৯১১: প্রবাদপ্রতিম গীতিকার ও কবি প্রণব রায়ের জন্ম
১৯১৩: বাঙালি চিত্রশিল্পী গোপাল ঘোষের জন্ম
১৯২৪: গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার জন্ম
১৯৩২: অভিনেত্রী নাদিরার জন্ম
১৯৩৫: কলকাতায় মেট্রো সিনেমা হল প্রতিষ্ঠা হয়
১৯৩৯: অভিনেত্রী বাসবী নন্দীর জন্ম
১৯৪০: সঙ্গীত শিল্পী গুলাম আলির জন্ম
১৯৪৩: জাপানী বোমারু বিমান কলকাতায় বোমা বর্ষণ করে
১৯৫০: বিপ্লবী, দার্শনিক ও আধ্যাত্মসাধক ঋষি অরবিন্দের প্রয়াণ
১৯৫১: শিল্পী ও লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু
১৯৬৯: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব-পাকিস্তানের নামকরণ করেন ‘‘বাংলাদেশ ”
১৯৮৫: ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ানের জন্ম
১৯৯৯: যানজট এড়াতে ব্যাংককে আকাশ ট্রেন সার্ভিস চালু
১৯৯৯: মিস ওয়ার্ল্ড হলেন যুক্তামুখী
২০১৩: দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৪৫ টাকা ৮৪.১৯ টাকা
পাউন্ড ১০৩.৯২ টাকা ১০৭.৩৯ টাকা
ইউরো ৮৯.১৩ টাকা ৯২.৩০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৬৩,৮০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬৪,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬০,৯৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৬,৭০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৬,৮০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩। অষ্টমী ৪৬/১৯ রাত্রি ১২/৩৮। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র ৫৩/৪৯ রাত্রি ৩/৩৮। সূর্যোদয় ৬/৬/১৪, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৪২। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৮ মধ্যে পুনঃ ৭/৩২ গতে ১১/৫ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/২১ মধ্যে পুনঃ ৯/১৪ গতে ১১/৫৪ মধ্যে পুনঃ ১/৪১ গতে ৩/২৭ মধ্যে পুনঃ ৫/১৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৭/২৭ গতে ৮/৪৭ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ গতে ৮/৭ মধ্যে। 
১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩। অষ্টমী রাত্রি ১১/২। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র রাত্রি ২/৫৯। সূর্যোদয় ৬/৮, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩ মধ্যে ও ৭/৪৫ গতে ১১/৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩৫ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ৯/২৩ গতে ১২/৪ মধ্যে ও ১/৫২ গতে ৩/৩৯ মধ্যে ও ৫/২৭ গতে ৬/৮ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৮ গতে ৮/৪৮ মধ্যে ও ১২/৪৮ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ গতে ৮/৮ মধ্যে। 
২০ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
বচসার জেরে গুলি চালানোর অভিযোগে উত্তরপ্রদেশে গ্রেপ্তার অভিনেতা ভূপিন্দর সিং, মৃত ১, জখম ৩

08:26:58 PM

তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেবন্ত রেড্ডিই, জানাল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব

07:00:00 PM

ভাইফোঁটায় সলমন খানকে আমন্ত্রণ মমতার

06:56:35 PM

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে জুন মালিয়া, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়

06:45:00 PM

কেউ আমাদের ভাগ করতে পারবে না: মমতা

06:44:48 PM

বাংলা এখন ফিল্ম ডেস্টিনেশন হতে পারে: মমতা

06:43:53 PM