Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

অতীতের পৃষ্ঠায় সংসদ ভবন
সমৃদ্ধ দত্ত

বাঙালির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে সদ্য প্রাক্তন হয়ে যাওয়া ভারতের এতকালের ওই পার্লামেন্ট ভবন। যাকে এখন নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংবিধান সদন’। একেবারে শুরুর দিন থেকে। ১৯২৭ সালের ১৮ জানুয়ারি যখন এই ভবনের উদ্বোধন হল তখন নাম ছিল ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া। অর্থাৎ ব্রিটিশ ভারতের সংসদীয় সদন। সেই সময় ব্রিটিশ শাসনের ভারত সরকারের সর্বোচ্চ যে প্রশাসনিক কাঠামো সেই ভাইসরয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন স্যর ভূপেন্দ্রনাথ মিত্র। একদিকে যেখানে একঝাঁক সর্বোচ্চ মেধার বাঙালি নিজেদের উজ্জ্বল কেরিয়ারকে জলাঞ্জলি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞে, ঠিক তেমনই আবার একটি অংশের উচ্চশিক্ষিত বাঙালিরা ব্রিটিশ সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর সর্বোচ্চ স্তর স্পর্শ করছিলেন। প্রথম তালিকায় যদি থাকেন অরবিন্দ ঘোষ, চিত্তরঞ্জন দাশ অথবা সুভাষচন্দ্র বসুরা, তাহলে দ্বিতীয় তালিকায় ছিলেন সুকুমার সেন, ভূপেন্দ্রনাথ মিত্র অথবা অতুলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়রা। 
কতটা শক্তিমান ছিলেন বাঙালি অফিসাররা? একটি উদাহরণ হল, ১৯৩১ সালে ভূপেন্দ্রনাথ মিত্র হয়েছিলেন ব্রিটেনে নিযুক্ত তৃতীয় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। তাঁর ঠিক আগে কে ছিলেন? অতুলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। অর্থাৎ একের পর এক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন বাঙালিই। এতটাই ছিল বাঙালি অফিসারদের দাপট। স্যর ভূপেন্দ্রনাথ মিত্র ভাইসরয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে ১৯২৭ সালের ১৮ জানুয়ারি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন নতুন আইনসভা ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের উদ্বোধনে। তিনিই গোটা উদ্বোধন পর্ব ও কর্মসূচির তত্ত্বাবধানে ছিলেন। ভাইসরয় লর্ড আরউইনের কাছে তিনি ছিলেন দক্ষিণ হস্ত। তিনিই আরউইনকে বলেন, আপনিই উদ্বোধন করুন। সেই শুরু এই ভবনের পথ চলা। এভাবে চলল ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত। 
১৯৪৫ সাল নাগাদ মোটামুটি বোঝাই যাচ্ছিল যে, আর ভারতকে উপনিবেশ করে রাখা যাবে না। এবার স্বাধীনতা দিতেই হবে। যিনি এই প্রস্তাবে সবথেকে বেশি বাধা দিতেন, সেই উইনস্টন চার্চিল নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন। ক্ষমতায় ক্লিমেন্ট এটলি। যিনি স্বাধীনতা দেওয়ারই পক্ষে। তবে একটা ফর্মুলা চাই তো! ক্যাবিনেট মিশন প্রস্তাব দিয়েছিল আগে একটি সংবিধান সভা গঠন করা হোক। ভারতীয় নেতারা বসে স্বাধীন ভারতের জন্য সংবিধান নির্মাণ করবে এখানে। সেইমতোই ১৯৪৬ সালে জুলাই মাসে  সংবিধান সভার নির্বাচন হল। দেখা গেল কংগ্রেস জয়ী হয়েছে ২০৮ আসনে। আর মুসলিম লিগের দখলে গিয়েছে ৭৩ আসন। ঠিক হল এবার যত দ্রুত সম্ভব সংবিধান সভায় মিলিত হবেন সকল সদস্য। আর শুরু হয়ে যাবে স্বাধীন দেশের নতুন সংবিধান নির্মাণের কাজ। তবে সংবিধান তো হচ্ছে! দেশের স্বাধীনতার ফর্মুলা কী হবে? এটাই হল সবথেকে বড় প্রশ্ন। কিন্তু একটি অন্তত ইতিবাচক প্রশাসনিক উদ্যোগের সূত্রপাত হোক। তারপর তো দড়ি টানাটানি চলবেই। গণতান্ত্রিক নিয়মে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটেই হবে সিদ্ধান্তের হেরফের। আর এ কথা বুঝে মহম্মদ আলি জিন্না কিছুতেই রাজি নন। তিনি নিশ্চিত যে, ‘হিন্দুত্ববাদী’ কংগ্রেস তাঁর মুসলিম লিগের পক্ষে কোনও সংবিধানই হতে দেবে না। অতএব জিন্না সংবিধান সভায় যোগ দেবেন না জানালেন। বহু চেষ্টা করা হল তাঁকে সভায় যোগ দেওয়ানোর জন্য। লাভ হল না। তিনি নারাজ। উল্টে ২৭ জুলাই বম্বেতে একটি সমাবেশ করে জিন্না ঘোষণা করলেন, ১৬ আগস্ট হবে ‘ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে’। সেদিন কী হবে? সেদিন বোঝা যায়নি। আর বম্বে অথবা দিল্লিতে কিছু বোঝা গেল না। বোঝা গেল অনেক দূরের শহর কলকাতায়। ১৬ আগস্ট, ১৯৪৬। কলকাতার ভোর হয়েছিল রক্তস্রোতে। সেই স্রোত আর থামেনি! বাঙালির প্রথম সর্বনাশ হয়েছিল ১৯০৫ সালে। বঙ্গভঙ্গ। ৬ বছর পরই আবার সংযুক্ত হয়ে যায়। অবশ্য আরও বড় সর্বনাশের মাধ্যমে। ভারতের রাজধানী সরিয়ে নেওয়া হল কলকাতা থেকে। আর ১৯৪৬ সালের ওই ১৬ আগস্টে ভয়ঙ্কর দাঙ্গার মাধ্যমে যে নতুন সর্বনাশের বীজ রোপণ করা হল, তারই পরিণতি মহা সর্বনাশের মহীরুহ। দেশভাগ। একবছরের মধ্যে। 
সেই সংবিধান সভার কাজ শুরু হয়েছিল এই ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ ভবনেই। আর তারপর থেকে নাম দেওয়া হয়েছিল সংবিধান সভা। কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি। ১৩ ডিসেম্বর চেয়ারম্যানের আসনে ছিলেন ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদ। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এখন সংবিধানের প্রস্তাবনা পেশ করবেন। জওহরলাল নেহরু এরপর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন সংবিধানের  প্রস্তাবনা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্থাৎ কেন ভারত স্বাধীন হলে একটি নিজস্ব সংবিধানের প্রয়োজন। এই ভবনে সংবিধান রচনার কাজটি সেদিন থেকে শুরু হয়েছিল। 
আর শেষ হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ২৫ নভেম্বর। ওইদিন সংবিধান রচনা সমাপ্ত হয়ে সংবিধানকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করার মাহেন্দ্রক্ষণে এই সভায় শেষতম বক্তৃতা দিয়েছিলেন সংবিধান রচনা কমিটির চেয়ারম্যান ডক্টর ভীমরাও আম্বেদকর। তিনি দীর্ঘ বক্তৃতায় একজন মানুষের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছিলেন। আম্বেদকর বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমাকে যে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা আমার প্রাপ্য নয়। এটা আংশিকভাবে প্রাপ্য সংবিধান সভার সাংবিধানিক পরামর্শদাতা স্যর বি এন রাওয়ের। কৃতিত্বের একটি অংশ অবশ্যই প্রাপ্য খসড়া কমিটির সদস্যদের। তবে এসবের থেকেও অনেক বড় কৃতিত্ব অবশ্যই পাওয়া উচিত মিস্টার এস এন মুখার্জির। যিনি সংবিধানের প্রধান খসড়া রচয়িতা। সবথেকে জটিল প্রস্তাবগুলিকে অত্যন্ত সরলভাবে উপস্থাপনে তাঁর যোগ্যতা অপরিসীম। স্বচ্ছ আইনি ব্যাখ্যায় তাঁর মতো পারঙ্গম অন্য কাউকে পাওয়া অসম্ভব। একইসঙ্গে তাঁর পরিশ্রম করার ক্ষমতাও অবিশ্বাস্য। তাঁকে ছাড়া এই সভাকে অনেক অনেক বেশি সময় অতিবাহিত করতে হতো সংবিধান রচনার কাজে।’
সুতরাং আজ বাঙালিমাত্র জানে যে, ভারতের সংবিধান রচনার সঙ্গে এহেন এক বাঙালি অফিসার অঙ্গাঙ্গিভাবে ততটাই কৃতিত্বের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন যে, স্বয়ং আম্বেদকর  স্পষ্ট বলছেন, এস এন মুখার্জি ছাড়া সংবিধান রচনার কাজ হতো আরও দুরূহ। এই সেই ভবন, যেখানে ভারতের সংবিধান রচিত হল। আর যার সঙ্গে এক বাঙালির নাম সম্পৃক্ত। 
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। সংবিধান সভা। সেই ভবন। রাত ১১টা। আর মাত্র একঘণ্টা পর ভারতে নতুন সূর্যোদয় হবে। স্বাধীন হবে ভারত। বন্দেমাতরম সঙ্গীতের প্রথম পঙ্‌঩ক্তি গাইলেন সুচেতা কৃপালনী। সভাপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ আবেগপূর্ণ এক ভাষণ দিয়ে বললেন, ‘আসুন আমরা সেই মানুষদের শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করি যে হাজার হাজার মহাপ্রাণ আত্মবলিদান দিয়েছিলেন এই মাহেন্দ্রক্ষণটি আসার লক্ষ্যে। অর্থাৎ স্বাধীনতা।’
সেই বিখ্যাত ভাষণটি দিলেন জওহরলাল নেহরু। ট্রিস্ট উইথ ডেস্টিনি। তারপর তিনি একটি প্রস্তাব ও শপথবাক্য পেশ করলেন ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির ক্ষণে। যে শপথবাক্য এই সদ্য প্রাক্তন হয়ে যাওয়া বিখ্যাত পার্লামেন্ট ভবনের অন্দরে মন্ত্রের মতো উচ্চারিত ও অনুরণিত হয়েছিল। পণ্ডিত নেহরু এবং বাকিরা সেটি পড়েছেন। প্রস্তাবটি ছিল— 
‘এই পবিত্র মুহূর্তে যখন বহু আত্মবলিদান আর যন্ত্রণার বিনিময়ে ভারতবাসী স্বাধীনতা অর্জন করেছে, তখন আমি ভারতের সংবিধান সভার সদস্য ভারত ও তার নাগরিকদের সেবার লক্ষ্যে অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত নিজেকে সমগ্র মানবিকতার সঙ্গে সমর্পণ করব, যতক্ষণ না এই প্রাচীন ভূমি বিশ্বের দরবারে সঠিক স্থান লাভ করছে। এই ভূমিতে নির্মাণ করব আমরা এক সার্বিক সদিচ্ছা, যা বিশ্বশান্তি এবং মানবসভ্যতার কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করবে।’
মধ্যরাতের এই অনুষ্ঠানের পর পরদিন সকাল ১০টায় আবার বসেছিল অধিবেশন। সেখানেই ভারতের ১০০ জন নারীশক্তির তরফে প্রদান করা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল এই ভবনের উপরে। সেই শুরু স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকার উড্ডীন হওয়া। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই ভবন হয়ে রইল সংবিধান সভা হিসেবে। আর তারপর থেকে ৭৩ বছর ধরে ভারতের সংসদ ভবন। পার্লামেন্ট হাউস। 
এই ঐতিহাসিক ভবনে আধুনিক ভারত নির্মাণের প্রতিটি পর্ব সম্পাদিত হয়েছিল। এখানেই ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, বিকেল ৪টের সময় আপনাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ দেব। গোটা সংসদ ছিল উদগ্রীব। কী হয় কী হয় একটি আগ্রহ। ইন্দিরা গান্ধী চারটের সময় ঘোষণা করেছিলেন, পাকিস্তান ভারতের কাছে সারেন্ডার করছে। আগামী কাল হবে সেই আত্মসমর্পণ। আর আমরা নতুন দেশের স্বীকৃতি দিচ্ছি।  পাকিস্তানের আর অঙ্গ নয় পূর্ব পাকিস্তান। নতুন দেশের নাম বাংলাদেশ। গোটা পার্লামেন্টে ছড়িয়ে পড়েছিল বিজয়োৎসব। ১৯৪৭ সালে ভারত থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে জিন্না গঠন করেছিলেন তাঁর সাধের পাকিস্তান। আর মাত্র ২৪ বছরের মধ্যেই ভারত নিয়েছিল মধুর প্রতিশোধ। পাকিস্তানকে দু’টুকরো করে দিয়ে। সাক্ষী ছিল এই পার্লামেন্ট। 
১৩ ডিসেম্বর। সকাল ১১টা ৪০। ২০০১। 
৪০ মিনিট আগে লোকসভা ও রাজ্যসভা মুলতবি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ি এবং বিরোধী দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধী নেই। সামরিক বাহিনীর জন্য কফিন কেনাবেচায় দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগে বিরোধীদের চরম হট্টগোল চলছিল। সেই কারণেই লোকসভা ও রাজ্যসভা মুলতবি। প্রায় ২০০ এমপি রয়ে গিয়েছেন। উপ প্রধানমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি তাঁর চেম্বারে কিছু ফাইলে সই করছেন। এখান থেকে তিনি যাবেন নর্থ ব্লকে। একটু আগে তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ির কথা হয়েছে। যেহেতু সংসদ মুলতবি হয়ে গেল, তাই বাজপেয়ি আজ আর আসছেন না। তিনি ৭ নং রেস কোর্স রোডের বাড়ি থেকেই কাজ করবেন জানালেন। 
হঠাৎ আদবানি শুনতে পেলেন পরপর কিছু শব্দ। আর চিৎকার। তিনি আসন ছেড়ে দ্রুত বাইরে এসে দেখার চেষ্টা করলেন কী হয়েছে! তাঁকে ওভাবে বাইরে দেখেই লাফ দিয়ে ঘিরে ফেলল সিআরপিএফ, এসপিজি আর এনএসজি কমান্ডো বাহিনী। তাঁকে বলা হল, ‘সাব আপ অন্দর যাইয়ে, আতঙ্কবাদীও নে হামলা কর দিয়া।’ আদবানি স্তম্ভিত। সন্ত্রাসবাদীরা পার্লামেন্টে ঢুকে পড়েছে! তিনি চেম্বারে এসেই ফোন করলেন বাজপেয়িকে। জানালেন। বাজপেয়ি জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের কী করা উচিত? আদবানি বললেন, আপাতত সিকিউরিটিদের সঙ্গে চলছে গান ব্যাটল। আমি জানাচ্ছি আপনাকে। 
কী ঘটেছিল? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্টিকার লাগানো একটি অ্যাম্বাসাডর গাড়ি ঢুকছে। স্টিকার থাকলেও সন্দেহ হল কনস্টেবল কমলেশ কুমারী যাদবের। সেই অসম সাহসী নারী একাই দ্রুত দৌড়ে একনম্বর গেট বন্ধ করলেন প্রাণপণে। আর সঙ্গে সঙ্গে সাদা অ্যাম্বাসাডর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এল গুলি। এ কে ফর্টি সেভেন থেকে। কমলেশ কুমারী সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়লেন। অ্যাম্বাসাডর এবার এগল ১২ নম্বর গেটের দিকে। 
কিন্তু ১২ নম্বর গেটে ততক্ষণে পজিশন নিয়েছে সিকিউরিটি ফোর্স। গুলি ছুড়ছে তারা। দ্রুত পিছনে সরে গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে সাদা অ্যাম্বাসাডর দেখল সামনেই মুখোমুখি একটি গাড়ি। সেই গাড়ি আসলে উপ রাষ্ট্রপতি কৃষ্ণ কান্তের। মুখোমুখি ধাক্কা লাগল। তৎক্ষণাৎ পাঁচজন যুবক নেমে এল অ্যাম্বাসাডর থেকে।  প্রত্যেকের হাতে একে ফর্টি সেভেন। আর বোমার ব্যাগ। এক হাতে গুলি চালাচ্ছে। অন্য হাতে গ্রেনেড। রীতিমতো উচ্চমানের প্রশিক্ষণ ছাড়া এটা সম্ভব নয়। 
উপ রাষ্ট্রপতির সিকিউরিটি ফোর্স ছিল সবথেকে সামনে। তাঁদের অত্যাধুনিক রাইফেল সমানে গুলি চালাচ্ছে। হঠাৎ গুলি লেগে একটি শরীরে বিস্ফোরণ ঘটল। তৎক্ষণাৎ পার্লামেন্ট সিকিউরিটি ফোর্স মাটিতে শুয়ে পড়ল। তার মানে এদের শরীরে রয়েছে সুইসাইড ভেস্ট! আত্মঘাতী বাহিনী। ভেস্টে গুলি লেগে ফেটে গিয়েছে। আর তাই বিস্ফোরণ। ৪০ মিনিটের একটি রোমহর্ষক গুলিযুদ্ধের সাক্ষী হল ভারতের পার্লামেন্ট। পাঁচজন জঙ্গির মৃত্যু হল। শহিদ হলেন সিকিউরিটি ফোর্সের ১২ জন সদস্য। 
এহেন অসংখ্য ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ভারতের পার্লামেন্ট একনিমেষের মধ্যেই অতীতের পৃষ্ঠায় প্রবেশ করল। চালু করা হল নতুন পার্লামেন্ট। তবে পুরনো পার্লামেন্টের কাঠামো, ডিজাইন, ইতিহাস, উজ্জ্বলতা চিরকাল থেকে যাবে অম্লান! কারণ এই ভবনে অনুরণিত হচ্ছে আজও অদৃশ্যভাবে আধুনিক ভারতের পথ চলার প্রতিটি মুহূর্তের প্রতিধ্বনি!
29th  October, 2023
বুমেরাং

প্রতুলবাবুর মুখে আজ আচ্ছা করে ঝামা ঘষে দিয়েছেন অতুলবাবু। অ্যাক্টিংয়ের সাধ আর মজা করার নেশা আজ ছুটে গেছে জম্মের মতো।
বিশদ

03rd  December, 2023
স্পর্শ
রাজেশ কুমার

অন্বেষা ফোনেই পেয়েছিল খবরটা, গতকাল সকালে। মনে হচ্ছিল, ওই মানুষটাই কেন! পৃথিবীতে তো আরও মানুষ ছিল। চোর, গুন্ডা, ধর্ষক, নেশাখোর...। দেখে দেখে ভালো মানুষদেরই কেন এসব হয়, ওপরঅলা কি চোখে দেখতে পায় না!  বিশদ

26th  November, 2023
আবদুর রহিম খানের সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

তাঁর এতদিনের অভিভাবক বৈরাম খানের অতি সক্রিয়তার খবর বাদশা আকবর পাচ্ছেন। ৫৮ বছর বয়সি বৈরাম সপ্তাহে তিনদিন দরবারের আমিরদের নিয়ে বসছেন বৈঠকে। অস্ত্রাগার, হাতিশাল, ঘোড়াশাল, রাজস্ব বিভাগ— প্রতিটি বিষয়েই তাঁর মতামত ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। বিশদ

19th  November, 2023
দুনিয়াদারি
সৌরভ মিত্র

কাল রাত থেকেই দেবোত্তমের মনটা বিশেষ ভালো নেই। ছেলেকে বকাবকি করলেই দু-তিনদিন এমন হয়। কারণগুলো আপাতভাবে ন্যায্য হলেও কোথাও যেন একটা অপরাধবোধ কাজ করে। বছর-আটেক বয়স। সেই অর্থে চালাক-চতুর নয়। আপনভোলা। বিশদ

19th  November, 2023
ভৌতিক কেল্লা ভানগড়
সমুদ্র বসু

ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে রাজস্থানের আলোয়ার জেলার ভানগড়ে তৈরি হয় একটি কেল্লা। যেটি তৈরি করেছিলেন অম্বরের তখনকার রাজা ভগবন্ত দাস। পরবর্তীকালে তাঁর ছোট ছেলে  মাধো সিং কেল্লাটির দখল নেন। মতান্তরে মাধো সিং-ই এই দুর্গ তৈরি করিয়েছিলেন। বিশদ

19th  November, 2023
মিষ্টির ভুবন
অর্পিতা সরকার (চন্দ)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘সন্দেশ বাংলাদেশে বাজিমাত করেছে। যা ছিল শুধু খবর, বাংলাদেশ তাকে সাকার বানিয়ে করে দিল খাবার।’ বিশদ

12th  November, 2023
পঞ্চমুণ্ডির আসন
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

তুষারবাবু ভ্যানরিকশতে বসে শ্মশানের দিকে যাত্রা করার আগে গোবিন্দ সাহার পরিচিত স্থানীয় যে মানুষটির বাড়িতে সকালে এসে উঠেছিলেন সেই বিধু মল্লিক বললেন, ‘আপনার সঙ্গী হতে পারলাম না বলে দুঃখিত। একথা সত্যি সাধুবাবা পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে কারওর জন্যত কিছু চাইলে সে প্রার্থনা মঞ্জুর হয়। বিশদ

12th  November, 2023
বাজির আলোয় সেকালের কলকাতা

মারাঠা যুদ্ধে ইংরেজদের জয়লাভের উপর পাকা সিলমোহর পড়ল উনিশ শতকের একদম গোড়ায়। এমন ঘটনার উদযাপনে একটু বিশেষ ধরনের আমোদের ব্যবস্থা করতে আয়োজন হল এক এলাহি আতসবাজির প্রদর্শনী।
বিশদ

05th  November, 2023
কিংবদন্তি বেতারনাট্য প্রযোজক শ্রীধর

১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসের একটি দিন। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে একটি নাটকের রেকর্ডিংয়ের জন্য অভিনেতারা সমবেত হয়েছেন।
বিশদ

05th  November, 2023
পুরনো সিন্দুক

ফ্ল্যাটের বাসিন্দা হিসাবে আজকের সকালটা বিজনের প্রথম সকাল। দুশো চল্লিশ স্কোয়ার ফিটের ছোট্ট এক পরিসরের মধ্যে ক্রমাগত ঘুরপাক খেতে খেতে এর মধ্যেই যেন হাঁপিয়ে উঠেছে বিজন।
বিশদ

05th  November, 2023
সংসারচরিত
সোমজা দাস

দীপ্তর সঙ্গে থাকা যে আর সম্ভব নয়, সেটা ভালোভাবে বুঝে গেছে সুমেধা। সাত বছরের প্রেমে কত স্মৃতি, একসঙ্গে কত শপথ, স্বপ্নের মুহূর্ত বুনেছে তারা। কিন্তু বিয়ের এক বছরেই এমন মোহভঙ্গ হবে সেটা সুমেধার ভাবনারও অতীত ছিল।           বিশদ

29th  October, 2023
সেকালের দুর্গাপুজোর আমোদ

বৃষ্টি, গুমোট গরম আর জল-কাদা মাখা রাস্তা ঠিক পুরাকালের রাজপুরুষদের দিগ্বিজয়ে বেরনোর মতো পরিবেশ তৈরি না করলেও, ক্যালেন্ডার বলছে ‘এসেছে শরৎ’।  তবে ছাপোষা গৃহস্থ প্রকৃতির উদার আহ্বানের থেকে পুজোর আগমন বার্তা বেশি টের পান কলিং বেলের টুং টাং ডাকে।
বিশদ

15th  October, 2023
উঠোন
সৌরভ হোসেন

আসমত গেরস্তর ভুঁইয়ের পরেই হজরুদ্দির বাড়ি। ভুঁইটা যেদিকটায় ঢালু হয়ে নেমে গিয়েছে সেদিকটায় বড়ঘাট্টা বিল। হজরুদ্দির বাপ নুরুদ্দি বলতেন, ওখানে আগে নদী ছিল। সে নদীর সঙ্গে পদ্মার যোগ ছিল। সে নদী মজে বিল হল। এখন নাবাল জমি। বিশদ

08th  October, 2023
হাতিবাগানের  থিয়েটার
সন্দীপন বিশ্বাস

দিনকয়েক আগে উত্তর কলকাতার রাজা রাজকৃষ্ণ স্ট্রিট দিয়ে হাঁটতে গিয়ে থমকে গেলাম। অনেকেই রাজকৃষ্ণ স্ট্রিট নামটা শুনে বুঝতে পারবেন না। কিন্তু যদি বলি একসময় এখানেই ছিল বিশ্বরূপা, রঙ্গনা, বিজন থিয়েটার সারকারিনা থিয়েটার হল, তাহলে হয়তো সবাই বুঝতে পারবেন। বিশদ

01st  October, 2023
একনজরে
রাজ্যে বাড়ছে মাদক কারবারের রমরমা। উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে আসছে নিষিদ্ধ মাদক। এই রাজ্য হয়ে তা চলে যাচ্ছে দেশের অন্যান্য অংশ এবং বাংলাদেশে। ...

আমেরিকায় ফের শ্যুটআউট। এবার ডালাসের একটি বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হল। ...

জবজের চিত্রগঞ্জ কালীবাড়িতে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আনাগোনা দিনে দিনে বাড়ছে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসছেন। ...

আচমকা চিতাবাঘের দেখা! দক্ষিণ দিল্লির নেব সরাইয়ে এই ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্য পশুটির খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব মাটি দিবস
১৩৬০: ফ্রান্সের মুদ্রা ফ্রাঁ চালু হয়
১৮৫৪: রিভলবিং থিয়েটার চেয়ারের পেটেন্ট করেন অ্যারোন অ্যালেন
১৮৭৯: স্বয়ংক্রিয় টেলিফোন সুইচিং সিস্টেম প্রথম পেটেন্ট হয়
১৯০১: মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজক, নির্দেশক ও কাহিনীকার ওয়াল্ট ডিজনির জন্ম
১৯১১: প্রবাদপ্রতিম গীতিকার ও কবি প্রণব রায়ের জন্ম
১৯১৩: বাঙালি চিত্রশিল্পী গোপাল ঘোষের জন্ম
১৯২৪: গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার জন্ম
১৯৩২: অভিনেত্রী নাদিরার জন্ম
১৯৩৫: কলকাতায় মেট্রো সিনেমা হল প্রতিষ্ঠা হয়
১৯৩৯: অভিনেত্রী বাসবী নন্দীর জন্ম
১৯৪০: সঙ্গীত শিল্পী গুলাম আলির জন্ম
১৯৪৩: জাপানী বোমারু বিমান কলকাতায় বোমা বর্ষণ করে
১৯৫০: বিপ্লবী, দার্শনিক ও আধ্যাত্মসাধক ঋষি অরবিন্দের প্রয়াণ
১৯৫১: শিল্পী ও লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু
১৯৬৯: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব-পাকিস্তানের নামকরণ করেন ‘‘বাংলাদেশ ”
১৯৮৫: ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ানের জন্ম
১৯৯৯: যানজট এড়াতে ব্যাংককে আকাশ ট্রেন সার্ভিস চালু
১৯৯৯: মিস ওয়ার্ল্ড হলেন যুক্তামুখী
২০১৩: দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৪৫ টাকা ৮৪.১৯ টাকা
পাউন্ড ১০৩.৯২ টাকা ১০৭.৩৯ টাকা
ইউরো ৮৯.১৩ টাকা ৯২.৩০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৬৩,৮০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬৪,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬০,৯৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৬,৭০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৬,৮০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩। অষ্টমী ৪৬/১৯ রাত্রি ১২/৩৮। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র ৫৩/৪৯ রাত্রি ৩/৩৮। সূর্যোদয় ৬/৬/১৪, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৪২। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৮ মধ্যে পুনঃ ৭/৩২ গতে ১১/৫ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/২১ মধ্যে পুনঃ ৯/১৪ গতে ১১/৫৪ মধ্যে পুনঃ ১/৪১ গতে ৩/২৭ মধ্যে পুনঃ ৫/১৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৭/২৭ গতে ৮/৪৭ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ গতে ৮/৭ মধ্যে। 
১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩। অষ্টমী রাত্রি ১১/২। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র রাত্রি ২/৫৯। সূর্যোদয় ৬/৮, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩ মধ্যে ও ৭/৪৫ গতে ১১/৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩৫ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ৯/২৩ গতে ১২/৪ মধ্যে ও ১/৫২ গতে ৩/৩৯ মধ্যে ও ৫/২৭ গতে ৬/৮ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৮ গতে ৮/৪৮ মধ্যে ও ১২/৪৮ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ গতে ৮/৮ মধ্যে। 
২০ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
বচসার জেরে গুলি চালানোর অভিযোগে উত্তরপ্রদেশে গ্রেপ্তার অভিনেতা ভূপিন্দর সিং, মৃত ১, জখম ৩

08:26:58 PM

তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেবন্ত রেড্ডিই, জানাল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব

07:00:00 PM

ভাইফোঁটায় সলমন খানকে আমন্ত্রণ মমতার

06:56:35 PM

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে জুন মালিয়া, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়

06:45:00 PM

কেউ আমাদের ভাগ করতে পারবে না: মমতা

06:44:48 PM

বাংলা এখন ফিল্ম ডেস্টিনেশন হতে পারে: মমতা

06:43:53 PM