Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

সংসারচরিত
সোমজা দাস

দীপ্তর সঙ্গে থাকা যে আর সম্ভব নয়, সেটা ভালোভাবে বুঝে গেছে সুমেধা। সাত বছরের প্রেমে কত স্মৃতি, একসঙ্গে কত শপথ, স্বপ্নের মুহূর্ত বুনেছে তারা। কিন্তু বিয়ের এক বছরেই এমন মোহভঙ্গ হবে সেটা সুমেধার ভাবনারও অতীত ছিল।          
সেই তো বুঝতে পারল, কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেল। তবু ‘বেটার লেট দ্যান নেভার’-এর আপ্তবাক্য স্মরণ করে বাক্স-পেটরা গুছিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে। শুরু-শুরুতে বাবা-মা খুশিই হয়েছিল মেয়েকে পেয়ে। কিন্তু এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই পরিস্থিতি বদলাল। বদলাল যে, সেটা বোঝা গেল যখন একটু আগেই রাতে খেতে বসে বাবা জিজ্ঞাসা করল, ‘দীপ্ত আসবে তোকে নিতে?’       
সুমেধা রুটি ছিঁড়ছিল। আলগোছে একটা ‘হুহ্‌’ গোছের উত্তর দিয়েছিল যার অর্থ হ্যাঁ-ও হতে পারে, আবার না-ও হতে পারে। তবে খাবারের প্লেটে চোখ রেখেও বাবা-মায়ের নীরব দৃষ্টিবিনিময় তার নজর এড়ায়নি। খাবার নিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে সে উঠে এসেছিল নিজের ঘরে।      
।। দুই ।।
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে দেখা। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। কেউ কাউকে প্রথাগত প্রেম নিবেদন করেনি, বলেনি ভালোবাসি। অথচ দু’জনের মন জেনেছিল, অন্যজন শুধু তারই। ক্যাম্পাস ইন্টারভিউতেই চাকরি পেয়ে গিয়েছিল দু’জনেই। সুমেধা একটি মাল্টিন্যাশনাল আইটি ফার্মে, আর দীপ্ত একটি নামী কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে।     
কলেজ শেষ করেই চাকরি, তিন বছর পরে বিয়ে। বিয়ের পর গোয়াতে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিল দু’জন। সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছিল। কোথাও কোনও কালো মেঘ ছিল না সেদিন।     
অথচ এক বছর কাটতে না কাটতে আর দীপ্তর সঙ্গে থাকতে পারছে না সুমেধা। সবেতেই সমস্যা দীপ্তর। সুমেধার বাড়ি ফিরতে রাত হলে সমস্যা হয় ওর। ছুটির দিনে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গেলে মুখ ভার হয়। এই দীপ্তকে চিনতে পারে না সুমেধা। মনে হয়, বিয়ের আগে তো এমন ছিল না ও!  
দীপ্ত খেতে খুব ভালোবাসে প্রথম থেকেই জানত সুমেধা। তেমনই দীপ্তও জানত যে, সুমেধা রান্নাবান্না তেমন জানে না। শেখার দরকারই পড়েনি। মাসি-মামিরা মাকে বলত, ‘মেয়েকে ঘরের কাজকম্ম কিছু শেখাস না কেন নমিতা?’         
মা বরাবর উত্তর দিয়েছে, ‘যখন শেখার হবে ঠিক শিখে নেবে। চাল কেউ কাঁচা চিবিয়ে খায় না। প্রয়োজন পড়লে নিজেই ফুটিয়ে নিতে শিখবে। এখন মন দিয়ে লেখাপড়াটা করুক।’   
তা করেছে সুমেধা। লেখাপড়া যেমন করেছে, বিয়ের পর শুধু চাল ফোটানো নয়, সেই সঙ্গে ডালে সম্বরা দেওয়া, চচ্চড়ি থেকে কালিয়া, চিলি চিকেন থেকে রেজালা সবই রান্না শিখেছে। সেটা দীপ্তকে ভালোবেসেই শিখেছে। কিন্তু তা বলে যদি দীপ্ত রাত সাড়ে ন’টায় অফিস ফেরতা ইলিশ মাছ কিনে এনে তখনই রান্না করে দেওয়ার আবদার করে, সেটা মানা যায় না। এক রাত ফ্রিজে থাকলে কী এমন ক্ষতি হতো! কিন্তু না, দীপ্তর বক্তব্য, ফ্রিজে রাখা ইলিশ আর মর্গে রাখা ডেডবডি চিবিয়ে খাওয়ার মধ্যে নাকি বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। ভাবা যায়!               
অফিসে মার্কিনি ক্লায়েন্ট এসেছিল সুমেধার। দিনশেষে ক্লান্ত ছিল শরীর ও মন দুইই। আর নিতে পারেনি। চড়াৎ করে রক্ত চড়ে গেছিল মাথায়। দীপ্তর হাতে ধরা পলিথিনের প্যাকেটটা নিয়ে ছুড়ে ফেলেছিল ড্রয়িংরুমের মেঝেতে। রক্তমাখা মাছের টুকরোগুলো ছড়িয়ে পড়েছিল ঘর জুড়ে। সেদিকে না তাকিয়ে শোবার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল সুমেধা। সারারাত ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এমন হৃদয়হীন লোকের সঙ্গে থাকা যায় না।    
।। তিন ।।
ঘুম আসছে না। বেডসাইড টেবিলে রাখা জলের বোতলটা তুলতে গিয়ে দেখল সেটা খালি। উঠে রান্নাঘরে গিয়ে জল ভরে ফিরে আসতেই যাচ্ছিল, হঠাৎ চোখে পড়ল ঠাম্মার ঘরে আলো জ্বলছে। রাত প্রায় বারোটা বাজে। দরজায় আলতো চাপ দিয়ে দেখল ঠাম্মা বিছানায় বসে বই পড়ছে। চেনা মলাট। ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’। 
‘এক বই আর কতবার পড়বে?’   
ঠাম্মার পাশে বসে জিজ্ঞাসা করল সুমেধা। ঠাম্মা ফিক করে হেসে বলল, ‘আরও অনেকবার। এখনও অনেকদিন বাঁচব আমি।’    
ঠাম্মাকে যত দেখে, ততই অবাক হয় সুমেধা। সাতাশি বছরে পৌঁছেও যে একজন মানুষ এমন জীবনীশক্তিতে পূর্ণ থাকতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস হয় না। মাত্র তিরিশ বছর বয়সে পাঁচটি সন্তান নিয়ে বিধবা হয়েছিল ঠাম্মা। বড়জনের বয়স তখন চোদ্দো। সবচেয়ে ছোটজন দেড়। একা লড়াই করে ছেলেমেয়েদের বড় করেছে। এখনও এই বয়সেও চুপচাপ হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। সারাক্ষণই কিছু না কিছু করেই চলেছে।    
‘ঘুম আসছে না?’ জিজ্ঞাসা করল ঠাম্মা।       
মাথা নাড়ল সুমেধা। তারপর বিছানায় পা ভাঁজ করে বাবু হয়ে বসল ঠাম্মার গা ঘেঁষে। 
‘নাত-জামাইয়ের জন্য মন কেমন করছে?’
সুমেধা ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল, ‘প্লিজ ঠাম্মা, এবার তুমি শুরু কোরো না। ওদিকে মা-বাবা আমাকে তাড়াতে পারলে বাঁচে।’
‘আচ্ছা বেশ,’ বলল ঠাম্মা, ‘বলব না। বুঝতে পারছি ঝগড়া করে এসেছিস।’     
সুমেধা গম্ভীর মুখে চুপ করে রইল। ঠাম্মা ওর থুতনি ধরে নেড়ে দিয়ে বলল, ‘এমন দিন আমাদেরও গেছে রে মণি। আমরাও একটু আধটু বুঝি। তোর বাবা-মায়ের কথা ছাড়। তোর যতদিন থাকতে ইচ্ছে করবে থাকবি।’
সুমেধা ঠাম্মার কোলে শুল গুটিসুঁটি মেরে। ঠাম্মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, ‘সংসারটা আসলে একটা কুস্তির আখড়া, বুঝলি? কে হারল, কে জিতল সেটা বড় কথা নয়। রিং-এ টিকে থাকাটাই আসল। যে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে সেই জেতে।’    
‘দাদুর সঙ্গে তোমার ঝগড়া হতো ঠাম্মা?’ জিজ্ঞাসা করল সুমেধা।     
‘সে ছিল আমার থেকে দশ বছরের বড়। মাস্টার মানুষ। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম খুব। ভীষণ বদরাগী ছিল তো! তুইও তারই ধাত পেয়েছিস। সবসময় নাকের ডগায় রাগ। তবে পরের দিকে আমিও টুকটুক করে কথা শোনাতে ছাড়তাম না।’       
‘দাদুর রাগ ছিল?’    
ঠাম্মা চোখ গোল গোল করে বলল, ‘তা আবার ছিল না? একদিন মনে আছে পাড়ার দত্তবাড়ির মেয়ে-বউরা জয় সন্তোষীমা সিনেমা দেখতে যাবে। আমাকে বলল, তুমিও চল। আমি গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, যাই? সে মুখে কিছু বলল না। আমি ভাবলাম, মৌনমসম্মতিলক্ষণম। বেরনোর মুখে দেখি সে তবলা নিয়ে বসেছে। একা ঘরে বসে ঝাঁপতাল বাজাচ্ছে। সিনেমা দেখে ফিরলাম রাত্তির ন’টা নাগাদ। তখন তো এখনকার মতো ঘরে ঘরে ইলেক্ট্রিসিটি আসেনি। একটা হ্যারিকেন পর্যন্ত জ্বালেনি। গেট খুলতে খুলতেই শুনতে পাচ্ছি তবলার শব্দ। ঘরে গিয়ে দেখি ঘুটঘুটে অন্ধকারে ডুবে তোর দাদু দ্রুত লয়ে বাজিয়ে যাচ্ছে তখনও। দরদর করে ঘাম গড়াচ্ছে শরীর থেকে, চোখ লাল, নাকের পাটা ফুলে উঠেছে। আমার দিকে তাকাচ্ছে না, বাজনাও থামছে না।’       
‘তোমার রাগ হয়নি?’ জানতে চাইল সুমেধা।      
ঠাম্মা হাসল। বলল, ‘সত্যি বলব? হয়েছিল। মনে হয়েছিল, আমি সারাদিন সংসার সামলাই, কাজ করি। একটা দিন একটু বাইরে গেলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেল?’    
‘সে কথা বলনি দাদুকে?’  
‘না,’ মাথা নাড়ল ঠাম্মা, ‘ওই যে বললাম, সব কথা বলে ফেললে অস্ত্রগুলো ভোঁতা হয়ে যায়। তা ছাড়া এখন এই সাতাশি বছর বয়সে পৌঁছে বুঝি, ওই অনুভূতিগুলো শুধু মুহূর্ত তৈরি করে। এত দীর্ঘ জীবনে সেই মুহূর্তগুলো এক ফোঁটা বিন্দুর মতো। থাকলে থাকল, ভেসে গেলে গেল। কিচ্ছু যায় আসে না রে!’  
‘তবু। রাগ তো হয়ই।’
‘তা হয়। হয়েওছিল। কিন্তু এখন যখন ভাবি, মনে হয়, সে আসলে আমার স্বাধীনতাকে খর্ব করতে চায়নি। বেঁধে রাখতেও নয়। আসলে দিনের শেষের সময়টুকু আমাকে কাছে পেতে, আমার সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটা বুঝিয়ে বলতে শেখেনি। আসলে কী জানিস, বোঝাপড়াটাই আসল। সেখানে ফাঁক থাকলে সম্পর্কটাও আঁট হয় না। আর পুরুষ মানুষেরা এই ব্যাপারে চিরদিনই কাঁচা। মেয়েদেরই বুঝে নিতে হয় ওদের না বলা-টুকু।’       
সুমেধা চুপ করে রইল অনেকক্ষণ। তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘আমিই বা কেন বুঝতে যাব? সব দায় আমার নাকি?’                  
ঠাম্মা হাসল। বলল, ‘তাহলে একটা ঘটনা বলি শোন। তখন তোর বড়কাকা পেটে। তোর বাবার বয়স চার, বড়পিসি দুই। সকাল থেকেই শরীরটা ঠিক লাগছিল না। আগেও দু’বার মা হয়েছি। লক্ষণ চিনি।’ 
‘তারপর?’   
‘দুপুর তিনটে বাজে। তোর দাদু ইশকুল থেকে ফিরলে তাকে খেতে দিয়ে নিজে খাব। এমন সময় তিনি এলেন। একহাতে শালপাতায় মোড়া খাসির মাংস, অন্য হাতে দুইখানা পাকা তাল। বলে কি না, একদম গাছ পাকা। মাংসটা রেঁধে তাল দুটো আঁচড়ে রাখ। বিকেলে তালের বড়া আর ক্ষীর কোরো।’           
সুমেধা উঠে বসল। বলল, ‘তুমি করলে?’      
ঠাম্মা মাথা নাড়ল। বলল, ‘ভীষণ রাগে সব ছুঁড়ে ফেলেছিলাম। চিৎকার করে কেঁদেছিলাম সেই একদিনই।’
‘তারপর?’      
ঠাম্মার মুখের দিকে তাকিয়ে সুমেধা দেখল, তার মন কোনও সুদূর অতীতের এক দুপুরে পৌঁছে গেছে। উদাস কণ্ঠে বলল ঠাম্মা, ‘সে আমার অমন রূপ দেখেনি কখনও। তাড়াতাড়ি দুটো মুখে গুঁজে বেরিয়ে গেল। পালিয়েই গেল। আমি বসে রইলাম। তারপর উঠে গিয়ে মাংসের টুকরোগুলো উঠোন থেকে তুলে ধুয়ে রাঁধতে বসলাম।’ 
‘ওই অবস্থায়?’ 
‘হ্যাঁ। তারপর শোন না। রাঁধা হল। উনুনের সামনে থেকে উঠতে যাব, তলপেটে ব্যথা টের পেলাম। তাল দুটো ছাড়িয়ে আঁচড়াচ্ছি, টের পাচ্ছি ব্যথা বাড়ছে। ভীষণ ঘামছি। সেই অবস্থাতেই কড়া বসিয়ে তালের বড়াক’টা ভেজে তুললাম। ক্ষীর করার সময় নেই আর। তাড়াতাড়ি ছেলে-মেয়ে দুটোকে নিয়ে পাশের বাড়িতে দিয়ে এলাম। ওরা জিজ্ঞাসা করল, কোথায় যাচ্ছ? বললাম, হাসপাতালে। ওদের বাবা এলে
 বলে দিও।’      
‘তুমি একা একা হাসপাতালে গেলে?’ অবাক গলায় জিজ্ঞাসা করল সুমেধা।      
‘গেলাম তো। যখন পৌঁছলাম, ততক্ষণে আর দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা নেই আমার। মিনিট পনেরোর মধ্যে তোর কাকা জন্মাল।’    
‘আর দাদু?’          
‘সে এল সন্ধে উজিয়ে। আমার চোখে আর চোখ মেলাতে পারে না। আয়া জিজ্ঞাসা করল, বাচ্চা জড়ানোর ন্যাকড়া এনেছেন? তোর দাদু মাথা নাড়ল। সে ওসব বোঝে নাকি যে আনবে! আমি আশাও করিনি। আয়া সরে যেতে ব্যাগ থেকে দেখি একটা টিফিনকৌটো বের করছে। জিজ্ঞাসা করলাম, কী ওটা? এক গাল হেসে কৌটো খুলে এগিয়ে দিল। দেখি আমার বানিয়ে রেখে আসা তালের বড়া। বলল, কী ভালো হয়েছে খেতে। তুমি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে তালক্ষীর বানিও, কেমন?’    
।। চার।।
দীপ্ত এসেছে। এসেই এমন হইহই জুড়ে দিয়েছে যে মা-বাবা আনন্দে আত্মহারা। তাদের মেয়ের চণ্ডাল রাগ। তাই কিছু হলে তারা ধরেই নেয় যে, দোষ মেয়েরই। তবে সুমেধা একটা কথাও বলেনি। দীপ্ত ভাব করতে এলেও নয়। দুপুরে খাওয়ার পর ঠাম্মার ঘরে গেল সে। ঠাম্মা পশ্চিমের ঢলে পড়া রোদ্দুরে পিঠ দিয়ে সকালের খবরের কাগজের পাতা ওল্টাচ্ছিল। সুমেধা তার গলা জড়িয়ে ধরে বলল, ‘আচ্ছা ঠাম্মা, দাদুকে ভালোবাসতে তুমি?’              
ঠাম্মা একটু চুপ করে থেকে বলল, ‘ভালোবাসার সংজ্ঞাই এই এত বয়স পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারলাম না। এই যে আজ এত বছর সে নেই, তার অভ্যেসটা আর নেই বটে, কিন্তু অভাবটা তো আছে। সে চলে যাওয়ার পর জীবনযুদ্ধে ঝাঁপাতে হল, শোক করার সময় ছিল না। এখন আমার অখণ্ড অবসর। তাই স্মৃতিগুলো নেড়েচেড়ে দেখি। মনে হয় একটা আস্ত জীবন যদি কাটাতে পারতাম তার সঙ্গে, তাহলে সেটা কেমন হতো! কিন্তু সেটা তো হয়নি। সে হেরে পালিয়ে গেছে। আমি কিন্তু লড়াই ছাড়িনি। মাটি আঁকড়ে পড়ে থেকেছি। তার ছেলে-মেয়েদের বড় করেছি। সারাটা জীবন ধরে তার অদৃশ্য উপস্থিতির সঙ্গে ঝগড়া করেছি, ভাব করেছি। আমার কাছে এটাই ভালোবাসা।’  
সুমেধা মাথা নিচু করে বসে রইল কিছুক্ষণ। তারপর ঠাম্মার গালে চুমু খেয়ে উঠে দাঁড়াল। বেরিয়ে গেল ঘর ছেড়ে। সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল ঠাম্মা, তারপর খবরের কাগজে মন দিল।  
শোয়ার ঘরের বিছানায় বালিশ পেতে গড়াচ্ছিল দীপ্ত। সুমেধাকে ঘরে ঢুকতে দেখে উঠে বসল।    
‘মেধুরানির রাগ কমেছে?’ বলে উঠে এসে বউকে জাপ্টে ধরল দীপ্ত। চকাস করে একটা চুমু খেল গালে। মেধা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দীপ্তর বুকে মাথা রাখল। দীপ্ত সুমেধার কানের কাছে মুখ এনে গুনগুন করে বলল, ‘শোন না, বাড়ি চল প্লিজ। বিরিয়ানি রান্নার সব জিনিসপত্র কিনে রেডি করে রেখে এসেছি।’   
সুমেধা বিস্মিত চোখ তুলে তাকাল। দীপ্ত তাড়াতাড়ি বলল, ‘আমিই রাঁধব, তোকে কিছু করতে হবে না। তুই শুধু মাংসটা কষিয়ে দিস। দিবি তো?’     
রাগতে গিয়েও হেসে ফেলল সুমেধা। নরম গলায় বলল, ‘পাগল একটা।’
29th  October, 2023
বুমেরাং

প্রতুলবাবুর মুখে আজ আচ্ছা করে ঝামা ঘষে দিয়েছেন অতুলবাবু। অ্যাক্টিংয়ের সাধ আর মজা করার নেশা আজ ছুটে গেছে জম্মের মতো।
বিশদ

03rd  December, 2023
স্পর্শ
রাজেশ কুমার

অন্বেষা ফোনেই পেয়েছিল খবরটা, গতকাল সকালে। মনে হচ্ছিল, ওই মানুষটাই কেন! পৃথিবীতে তো আরও মানুষ ছিল। চোর, গুন্ডা, ধর্ষক, নেশাখোর...। দেখে দেখে ভালো মানুষদেরই কেন এসব হয়, ওপরঅলা কি চোখে দেখতে পায় না!  বিশদ

26th  November, 2023
আবদুর রহিম খানের সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

তাঁর এতদিনের অভিভাবক বৈরাম খানের অতি সক্রিয়তার খবর বাদশা আকবর পাচ্ছেন। ৫৮ বছর বয়সি বৈরাম সপ্তাহে তিনদিন দরবারের আমিরদের নিয়ে বসছেন বৈঠকে। অস্ত্রাগার, হাতিশাল, ঘোড়াশাল, রাজস্ব বিভাগ— প্রতিটি বিষয়েই তাঁর মতামত ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। বিশদ

19th  November, 2023
দুনিয়াদারি
সৌরভ মিত্র

কাল রাত থেকেই দেবোত্তমের মনটা বিশেষ ভালো নেই। ছেলেকে বকাবকি করলেই দু-তিনদিন এমন হয়। কারণগুলো আপাতভাবে ন্যায্য হলেও কোথাও যেন একটা অপরাধবোধ কাজ করে। বছর-আটেক বয়স। সেই অর্থে চালাক-চতুর নয়। আপনভোলা। বিশদ

19th  November, 2023
ভৌতিক কেল্লা ভানগড়
সমুদ্র বসু

ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে রাজস্থানের আলোয়ার জেলার ভানগড়ে তৈরি হয় একটি কেল্লা। যেটি তৈরি করেছিলেন অম্বরের তখনকার রাজা ভগবন্ত দাস। পরবর্তীকালে তাঁর ছোট ছেলে  মাধো সিং কেল্লাটির দখল নেন। মতান্তরে মাধো সিং-ই এই দুর্গ তৈরি করিয়েছিলেন। বিশদ

19th  November, 2023
মিষ্টির ভুবন
অর্পিতা সরকার (চন্দ)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘সন্দেশ বাংলাদেশে বাজিমাত করেছে। যা ছিল শুধু খবর, বাংলাদেশ তাকে সাকার বানিয়ে করে দিল খাবার।’ বিশদ

12th  November, 2023
পঞ্চমুণ্ডির আসন
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

তুষারবাবু ভ্যানরিকশতে বসে শ্মশানের দিকে যাত্রা করার আগে গোবিন্দ সাহার পরিচিত স্থানীয় যে মানুষটির বাড়িতে সকালে এসে উঠেছিলেন সেই বিধু মল্লিক বললেন, ‘আপনার সঙ্গী হতে পারলাম না বলে দুঃখিত। একথা সত্যি সাধুবাবা পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে কারওর জন্যত কিছু চাইলে সে প্রার্থনা মঞ্জুর হয়। বিশদ

12th  November, 2023
বাজির আলোয় সেকালের কলকাতা

মারাঠা যুদ্ধে ইংরেজদের জয়লাভের উপর পাকা সিলমোহর পড়ল উনিশ শতকের একদম গোড়ায়। এমন ঘটনার উদযাপনে একটু বিশেষ ধরনের আমোদের ব্যবস্থা করতে আয়োজন হল এক এলাহি আতসবাজির প্রদর্শনী।
বিশদ

05th  November, 2023
কিংবদন্তি বেতারনাট্য প্রযোজক শ্রীধর

১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসের একটি দিন। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে একটি নাটকের রেকর্ডিংয়ের জন্য অভিনেতারা সমবেত হয়েছেন।
বিশদ

05th  November, 2023
পুরনো সিন্দুক

ফ্ল্যাটের বাসিন্দা হিসাবে আজকের সকালটা বিজনের প্রথম সকাল। দুশো চল্লিশ স্কোয়ার ফিটের ছোট্ট এক পরিসরের মধ্যে ক্রমাগত ঘুরপাক খেতে খেতে এর মধ্যেই যেন হাঁপিয়ে উঠেছে বিজন।
বিশদ

05th  November, 2023
অতীতের পৃষ্ঠায় সংসদ ভবন
সমৃদ্ধ দত্ত

বাঙালির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে সদ্য প্রাক্তন হয়ে যাওয়া ভারতের এতকালের ওই পার্লামেন্ট ভবন। যাকে এখন নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংবিধান সদন’। বিশদ

29th  October, 2023
সেকালের দুর্গাপুজোর আমোদ

বৃষ্টি, গুমোট গরম আর জল-কাদা মাখা রাস্তা ঠিক পুরাকালের রাজপুরুষদের দিগ্বিজয়ে বেরনোর মতো পরিবেশ তৈরি না করলেও, ক্যালেন্ডার বলছে ‘এসেছে শরৎ’।  তবে ছাপোষা গৃহস্থ প্রকৃতির উদার আহ্বানের থেকে পুজোর আগমন বার্তা বেশি টের পান কলিং বেলের টুং টাং ডাকে।
বিশদ

15th  October, 2023
উঠোন
সৌরভ হোসেন

আসমত গেরস্তর ভুঁইয়ের পরেই হজরুদ্দির বাড়ি। ভুঁইটা যেদিকটায় ঢালু হয়ে নেমে গিয়েছে সেদিকটায় বড়ঘাট্টা বিল। হজরুদ্দির বাপ নুরুদ্দি বলতেন, ওখানে আগে নদী ছিল। সে নদীর সঙ্গে পদ্মার যোগ ছিল। সে নদী মজে বিল হল। এখন নাবাল জমি। বিশদ

08th  October, 2023
হাতিবাগানের  থিয়েটার
সন্দীপন বিশ্বাস

দিনকয়েক আগে উত্তর কলকাতার রাজা রাজকৃষ্ণ স্ট্রিট দিয়ে হাঁটতে গিয়ে থমকে গেলাম। অনেকেই রাজকৃষ্ণ স্ট্রিট নামটা শুনে বুঝতে পারবেন না। কিন্তু যদি বলি একসময় এখানেই ছিল বিশ্বরূপা, রঙ্গনা, বিজন থিয়েটার সারকারিনা থিয়েটার হল, তাহলে হয়তো সবাই বুঝতে পারবেন। বিশদ

01st  October, 2023
একনজরে
পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সালার থানার খাড়েরা গ্রামের এক যুবকের। মৃতের নাম বাদশা শেখ (২৪) । গ্রামের অঞ্চলপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। মাসতিনেক আগে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজে সেখানে গিয়েছিলেন। ...

আজ, মঙ্গলবার বালুরঘাট এয়ারপোর্ট পরিদর্শনে আসছে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি দল। আজ সকাল ১০টা নাগাদ ওই প্রতিনিধি দল বালুরঘাট এয়ারপোর্ট পরিদর্শন করবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ...

২০০৪ সাল। ভারতীয় ফুটবলে সাড়া জাগানো নাম মাহিন্দ্রা ইউনাইটেড। ম্যানেজমেন্টের আন্তরিকতা দেখে সই করতে দ্বিধা করিনি। মরশুমের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। কিন্তু বিনা মেঘে বজ্রপাত। একদিন অনুশীলনের আগে হঠাৎ ডাক পড়ল। ...

জবজের চিত্রগঞ্জ কালীবাড়িতে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আনাগোনা দিনে দিনে বাড়ছে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসছেন। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব মাটি দিবস
১৩৬০: ফ্রান্সের মুদ্রা ফ্রাঁ চালু হয়
১৮৫৪: রিভলবিং থিয়েটার চেয়ারের পেটেন্ট করেন অ্যারোন অ্যালেন
১৮৭৯: স্বয়ংক্রিয় টেলিফোন সুইচিং সিস্টেম প্রথম পেটেন্ট হয়
১৯০১: মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজক, নির্দেশক ও কাহিনীকার ওয়াল্ট ডিজনির জন্ম
১৯১১: প্রবাদপ্রতিম গীতিকার ও কবি প্রণব রায়ের জন্ম
১৯১৩: বাঙালি চিত্রশিল্পী গোপাল ঘোষের জন্ম
১৯২৪: গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার জন্ম
১৯৩২: অভিনেত্রী নাদিরার জন্ম
১৯৩৫: কলকাতায় মেট্রো সিনেমা হল প্রতিষ্ঠা হয়
১৯৩৯: অভিনেত্রী বাসবী নন্দীর জন্ম
১৯৪০: সঙ্গীত শিল্পী গুলাম আলির জন্ম
১৯৪৩: জাপানী বোমারু বিমান কলকাতায় বোমা বর্ষণ করে
১৯৫০: বিপ্লবী, দার্শনিক ও আধ্যাত্মসাধক ঋষি অরবিন্দের প্রয়াণ
১৯৫১: শিল্পী ও লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু
১৯৬৯: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব-পাকিস্তানের নামকরণ করেন ‘‘বাংলাদেশ ”
১৯৮৫: ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ানের জন্ম
১৯৯৯: যানজট এড়াতে ব্যাংককে আকাশ ট্রেন সার্ভিস চালু
১৯৯৯: মিস ওয়ার্ল্ড হলেন যুক্তামুখী
২০১৩: দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৪৫ টাকা ৮৪.১৯ টাকা
পাউন্ড ১০৩.৯২ টাকা ১০৭.৩৯ টাকা
ইউরো ৮৯.১৩ টাকা ৯২.৩০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৬৩,৮০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬৪,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬০,৯৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৬,৭০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৬,৮০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩। অষ্টমী ৪৬/১৯ রাত্রি ১২/৩৮। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র ৫৩/৪৯ রাত্রি ৩/৩৮। সূর্যোদয় ৬/৬/১৪, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৪২। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৮ মধ্যে পুনঃ ৭/৩২ গতে ১১/৫ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/২১ মধ্যে পুনঃ ৯/১৪ গতে ১১/৫৪ মধ্যে পুনঃ ১/৪১ গতে ৩/২৭ মধ্যে পুনঃ ৫/১৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৭/২৭ গতে ৮/৪৭ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ গতে ৮/৭ মধ্যে। 
১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩। অষ্টমী রাত্রি ১১/২। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র রাত্রি ২/৫৯। সূর্যোদয় ৬/৮, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩ মধ্যে ও ৭/৪৫ গতে ১১/৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩৫ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ৯/২৩ গতে ১২/৪ মধ্যে ও ১/৫২ গতে ৩/৩৯ মধ্যে ও ৫/২৭ গতে ৬/৮ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৮ গতে ৮/৪৮ মধ্যে ও ১২/৪৮ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ গতে ৮/৮ মধ্যে। 
২০ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
বচসার জেরে গুলি চালানোর অভিযোগে উত্তরপ্রদেশে গ্রেপ্তার অভিনেতা ভূপিন্দর সিং, মৃত ১, জখম ৩

08:26:58 PM

তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেবন্ত রেড্ডিই, জানাল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব

07:00:00 PM

ভাইফোঁটায় সলমন খানকে আমন্ত্রণ মমতার

06:56:35 PM

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে জুন মালিয়া, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়

06:45:00 PM

কেউ আমাদের ভাগ করতে পারবে না: মমতা

06:44:48 PM

বাংলা এখন ফিল্ম ডেস্টিনেশন হতে পারে: মমতা

06:43:53 PM