Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

মাটির গন্ধ
অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

একথা বলে সুমন মিটিমিটি হাসতে লাগল। তখন আমরা মাঠ পেরচ্ছি। দইয়ের ডোবা, মুক্তি ডোবা— আমাদের আশপাশের ডোবাদের নাম। ডোবা মানে যে বিশাল ব্যাপার, তা কিন্তু নয়। একেবারে নাতিদীর্ঘ আয়তন, বর্ষায় টইটম্বুর হয়ে ফুলে থাকে। জল যত কমে, টুলু পাম্প বসিয়ে তুলে নেয় চাষিরা। তখন জল নেমে যায় নীচে, সেখানে তখন বনকলমি আর কচুরিপানার দাম জল ছেয়ে ফেলে। তেমনই একটি জায়গা দেখিয়ে সুমন বলল, ‘ওখানে রহস্য আছে।’
‘কী রহস্য?’
‘ফি-বর্ষায় ওই জায়গাটা গোল হয়ে বসে যায়। এবারেও গিয়েছে। তুই হয়তো বুঝতে পারছিস না, কিন্তু গিয়েছে। আমি মাটি চিনি। মাটির জাত জানি। নতুন ঘাস যতই সে মাটি ঢেকে দিক, আমার চোখ সে এড়াতে পারবে না। আমার কী মনে হয় জানিস, ওখানে কোনও প্রাচীন জন্তু বাস করে।’
‘মাটির নীচে?’
‘হ্যাঁ।’
আমি একটু অবাক হয়ে বলি, ‘সে কোন জন্তু?’
‘কচ্ছপ।’
‘কচ্ছপ!’ আমি আরও অবাক। বলি, ‘মাটির নীচে থেকে সে বেঁচে থাকে কী করে?’
সুমন বলে, ‘হ্যাঁ। এখানেই থাকে সে। এখানের মাটির নীচ দিয়ে মুক্তির ডোবার ভেতর চলাচলের একটি রাস্তা আছে। কচ্ছপটা সেই পথে গিয়ে ডোবার জল-মাটি-নুন খেয়ে আসে। শতাব্দী প্রাচীন কচ্ছপ ওটা। মাটির নীচে ওর বাস। সেখানেই ও ডিম পাড়ে।’
‘বাচ্চা দেখেছিস কখনও?’
‘না।’
‘তবে?’
‘তবু আমার মন হয়, ওটি একটি কচ্ছপ।’
কথা বলতে বলতে আমরা মা মনসার ঢিপি পেরিয়ে যাচ্ছি। বনের ভিতরেই এই ঢিপি। একদা এখানে মা মনসার পুজো হতো। কিন্তু বেদিটা ছিল আমাদের পাশের গ্রাম গণেশপুরের এক লোকের। সে পরে মা মনসাকে তুলে নিয়ে চলে যায়। সেই থেকে জায়গাটা পরিত্যক্ত। ঝোপঝাড় আর জংলাগাছ, সঙ্গে সাপ-শিয়ালের গর্ত আছে পরপর।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা চলে এলাম সুমনের নিজের জমিতে। সেখানে সে তার নিজস্ব ভিটে তৈরি করতে চলেছে। কোমর অবধি দেল গেঁথে ফেলে রেখেছে সুমন। দুটি বর্ষা খেয়ে সেই দেলের উপর সবুজ শ্যাওলা ধরেছে। সঙ্গে অনুচ্চ ফার্ন গাছ।
আলপথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা মাটির গন্ধ পাচ্ছিলাম। সোঁদা গন্ধের কথা আমরা সকলে জানি। কিন্তু যারা মাটির কাছাকাছি থাকে, মাটির গন্ধ একমাত্র তারাই পায়। ধান রোয়ার সময় মাটির যে গন্ধ থাকে, ধান পাকলে সে গন্ধ যায় পাল্টে। আবার সে ধান কাটার সময়ও মাটির গন্ধ অন্য। রোদের গন্ধ একেবারে মুছে গেলে সন্ধের গন্ধ উঠে আসে মাটির তল থেকে।
সুমন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘ওকে ছেড়েই দেব ভাবছি। একদম কাগজে-কলমে ছেড়ে দেব। যাকে বলে, ডিভোর্স। এতদিন তো ওর সঙ্গে লড়াই করলুম। কিন্তু এখন ক’দিন ওর কথা খুব মনে পড়ছে। মনে হল, যে থাকতে চায় না, তাকে জোর করে ধরে রেখে লাভ কী? ও ছেড়ে দেওয়াই ভালো। তাতে ও বাঁচে, আমিও বাঁচি। শুধুমুদু গোঁ ধরে বসে থেকে লাভ নেই। তোর উকিল কাকাও বলছিল, আর টানা-হেঁচড়া করিস না সুমন, ওকে তুই ছেড়ে দে। ৪৯৮-এ তে যদি কেস দেয়, তুই পালিয়েও বাঁচতে পারবি না।’
সুমনের মুখের দিকে তাকালাম। ওর এই কথায় যে আমি বেশ অবাক হয়েছি, বুঝতে পারছি। মাসখানেক আগেও ও আমাকে বলেছিল, ‘ছাড়াছাড়ির কোনও প্রশ্নই নেই, আমি লড়ে যাব। আবাগীর বেটিকে দেখিয়ে দেব আমার ক্ষমতা, আমার জেদ। ওর জন্য কম টাকা খরচ করেছি? ওর এমএ পড়ার খরচ আমি দিয়েছি। কত গয়না গড়িয়ে দিয়েছি বিয়ের আগেই। ওর বাপকেও টাকা দিয়েছি, দোকান কেনার জন্য। নইলে কাজ করত তো পরের দোকানে। আমি ছাড়ব! বিয়ের আগে আমার যে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে ওর জন্য, তা ফেরত দিক—তখন ভাবব।’
তখন আমি বলেছিলাম, ‘ওকে বিয়েটা করাই তোর ভুল ছিল। নিজে প্রেম করে বিয়ে করেছিস, আমাদের কিছু বলার ছিল না। ও এমএ পাশ আর তুই ক্লাস সেভেন— ম্যাচ খায়?’ তখন সুমন বলে, ‘সেটা প্রেম করার সময় মাথায় রাখা উচিত ছিল ওর— আমি তো লুকাইনি। সেদিন আমার টাকা দেখে আমার সঙ্গে জুড়েছিল। আর আজ আমি নিঃস্ব দেখে আমায় ছেড়ে দিতে চায়। এমন ব্যবহার এখন করছে যেন লাখপতির বাপের একলতি মেয়ে। ওদিকে বাপ তো টিপছাপ পাশ, রেল বাজারের দোকানে সাইকেল সারায়।’ তারপর একটু থেমে বলেছিল, ‘জমি বেচার টাকায় ঘটা করে বিয়ে করেছি, ওকে আমি ছাড়ব না। অন্য কাউকে বিয়ে করতেও দেব না— আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’
জমি বেচার টাকায় সুমন লোক খাইয়েছে— বিয়ের দিনেই শুনেছিলাম। এখনও শুনলাম। জমি বেচে লোকে মেয়ের বিয়ে দেয়, ছেলের বিয়েতেও জমি বেচতে হয়—শুনিনি কোনওদিন।
সুমন যখন দিল্লিতে থাকত, তখন বেশ টাকাকড়ি করেছিল। ওরা তিন ভাই, দু’বোন। সুমন সবচেয়ে ছোট। সেভেনে ফেল করে জুয়েলারি কাজে ও দিল্লি চলে গেল। আমাদের এদিকের গ্রামের পর গ্রাম কেবল ওই একটি কাজের ভরসায় বড়লোক হয়ে গেল। প্রায় সকলেরই পাকা বাড়ি, কালার টিভি, ফ্রিজ, বাইক। এখন চল হয়েছে বাড়িতে মেসিন বসিয়ে জল তুলে ছাদের ট্যাঙ্কে ভরে রাখা। রান্নাঘর, বাথরুমে ট্যাপকল, বেসিন। একেবারে শহুরে ব্যবস্থা।
সুমনও এইসব করতে পারত। দিল্লিতে নাকি ওর নিজস্ব দোকান ছিল, একটা ফ্ল্যাটও কিনেছিল। কিন্তু ও যখন পাকাপাকিভাবে ফিরে এল, তখন ও নিঃস্ব! শুনেছিলাম, ওর এক দাদাও দিল্লিতে থাকত। কিন্তু সেখানে জুয়ার ঠেকে যাওয়ার অভ্যাস ছিল তাঁর। সেখানে একবার তার প্রাণ সংশয় হয়। পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তবে নাকি সে ছাড়া পায়। আর এই টাকার সবটাই দিয়েছিল সুমন। এই ঘটনার দু’বছর পর সুমন ফিরে আসে। বিয়ে করে। চাষির ছেলে, চাষের কাজে জুড়ে যায় আবার।
তবে, ওদের নিজেদের জমি তেমন নেই। ভাই, দাদা, জ্যাঠা, কাকা—ইত্যাদিতে ভাগ বাঁটোয়ারা হতে হতে যা হাতে আসে তা সবার জন্য এক ছটাক করে বরাদ্দ হল। সেখানে কেউ বাড়ি তুলেছে, কেউ খামার করেছে, কেউ আম-জাম-কাঁঠালের বাগান করেছে।
ওর জমিটা সুমন ঘিরে দিয়েছে। বাঁশ আর বাঁখারি সহযোগে। এতটুকুন জমিতে সে নানাপ্রকার সব্জি ফলিয়ে রেখেছে। মুলো, বেগুন, লেবু, ঢ্যাঁড়স—কী নেই? মাটিতে পড়ে থাকা কাতানটা নিয়ে খ্যাঁচ খ্যাঁচ করে আখগাছে কোপ মারল। আখের কিনার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে বর্ষার জল। সেখানে বর্ষার মাছ। তারা ভয় পেয়ে চকিতে ধানগাছের ভেতর ঢুকে গেল।
আখ ছুলতে ছুলতে সে বলে, ‘ধানগাছের যে কী সুন্দর গন্ধ—আঃ!’
‘আর ধানফুল?’
‘সেও অতি চমৎকার!’
গ্রামে যাত্রা হবে। গ্রামের ছেলেরাই তা করবে। তার জন্য সুমনের বাড়িতে ছেলের দল চাঁদা চাইতে এল। তিনশো টাকা ধার্য হয়েছে তার জন্য। দলের লিডার বলল, ‘জানি তোকে এখানেই পাব, তাই এই পথেই তোদের পাড়ায় ঢুকলুম।’ সুমন আঁতকে উঠে বলল, ‘তিনশো! কী করে হয়? আমি দেব কোত্থেকে? আমার হাল তো জানো।’ লিম্বু বলে, ‘পুরো টাকা একসঙ্গে না দিলেও হবে। এ মাসে হাফ, বাকিটা ও মাসে দিবি। ঐতিহাসিক যাত্রাপালা—ড্রেসভাড়া করতেই অনেকগুলি টাকা খরচা হয়ে যাবে। তাছাড়া ফিমেলের রেট বেড়েছে। তিনজন ফিমেল আসছে। না করিস না। তোরা না দিলে দেবে কারা বল তো?’
‘আমার বর্তমান অবস্থা তুমি জানো লিম্বুদা। আমি চাষির ব্যাটা, মাঝে দশ বারো বচ্ছর জুয়েলারি কাজে দিল্লি গেছিলাম বটে, কিন্তু নানান কারণে আজ আমি নিঃস্ব। নিজের জমি নেই, পরের জমিতে মুনিষ খেটে খাই। বাঘাটির জগু সিংহরায়দের জমি দেখাশোনা করি। সেই ভোর পাঁচটায় খাবার বেঁধে বেরিয়ে যাই, ফিরি সন্ধেতে। আঝ ফিরলুম তাড়াতাড়ি কেন না আমার বন্ধু দেখা করতে এসেছে অনেকদিন বাদে। ও আমার সঙ্গে দেখা করতে সেই সিংহরায়দের জমি অবধি চলে গেছিল— এমনি টান, তার জন্য এট্টু আগে চলে না এলে হয়? তার উপর দেখছ, এই বাড়িখানা আমি আধখানা করে ফেলে রেখেছি, লিংটন অবধি যেতে পারিনি। দু’টি মাত্র ঘর বানাব, মাথায় টালি দেব—তাও কোঁকাচ্ছি! অথচ একদিন কত লোককে আমি খাইয়েছি। যাক, পুরনো কথা কিছু তুলছি না, তিনশো নয়, আমি একশো টাকা দেব।’
লিম্বু বলে, ‘জানি রে। ডিভোর্সটা আটকে আছে তোর। শুনি সে নাকি গরলগাছার কোনও এক হাইস্কুলে প্যারাটিচার পেয়েছে?’
মুখ গোঁজ করে সুমন বলে, ‘ওসব জানি না, খবর রাখি না।’
একটা শ্বাস ফেলে লিম্বু বলে, ‘যাক, ছাড় ওসব। একশো নয়, দুশো টাকা দিস ভাই। নইলে পালা নামাতে পারব না। গ্রামের মানুষ চাইল প্রতিবারে সামাজিক পালা হয়, এবারে ঐতিহাসিক হোক— তাই করা। যাই হোক, সোনাইদিঘি পালা করছি—পরেরবার আবার সামাজিক করব—ওতে খরচা কম।’
বলে পাঁচজনের দলটি আখ চিবতে চিবতে চলে যায়। চারদিক আবার নিস্তব্ধ হতে শুরু করে। এদিক-ওদিক থেকে পাখিরা আলগোছে ডাকে। সুমন বলে, ‘পাঁচ বছর প্রেম করেছি, বিয়ের পর এক বছর একসঙ্গে থাকা। ও ভেবেছিল বিয়ের পর আমরা দিল্লি চলে যাব, সেখানে গিয়ে থাকব। কিন্তু এটা বুঝতে পারেনি, ওখানে আর আমার ফিরে যাওয়ার কিছু ছিল না।’
সন্ধের পর মাঠের ধারে এসে সুমন প্রায়দিন বসে থাকে। যখন পুরো পূর্ণিমা থাকে, ও মাঠের ভেতর চলে যায়। সাপ বা অন্যান্য জীবজন্তুর ও ভয় পায় না— সকলেই ওকে চেনে জানে— ভয় কীসের? সেখানে দিনের আলোর মতো করে রাত জেগে থাকে। সে গ্রামের কোনও ক্লাবে যায় না, কোনও আড্ডায়ও থাকে না। মনুষ্য-বিবর্জিত হয়ে ও থাকে বলে ওকে আর তেমন কেউ ডাকে না। যাত্রাপালায় চাঁদা দিলেও ও যাত্রা দেখবে না—একথা হলফ করে বলা যায়। আমাদের সঙ্গেও আর যোগাযোগ রাখে না। আমিই ওর কাছে এলাম প্রায় এক বছর পর।
সুমন বলল, ‘হ্যাঁরে, মানুষের জীবনে কি কিছুই থাকে না? স্থায়ী বলে কিছু নেই? ছয় বছরের সম্পর্ক এইভাবে শেষ হয়ে যাবে— আমি কল্পনাতেও আনিনি। বলেছিলাম, মাটির বাড়িতে থাকতে হবে না তোমায়, আমি যেটা ভাগে পেয়েছি, সেখানে দু’কামরা ঘর তুলছি একটা, একটা বছর আর কষ্ট কর। শুনলই না! চলে গেল। ভেবে এখনও তেমন কিছু বুঝতে পারি না, বিয়ে জিনিসটা আসলে ঠিক কীরকম!’
এইভাবে একদিকে ও যেমন একলা হয়ে যাচ্ছে, নিজেকে একলা করে নিচ্ছে, অন্যদিকে ওর জন্য খুলে যাচ্ছে এক অন্যরকম জগতের সুবিশাল, অনন্ত এক দিগন্ত। সেখানে দেওয়ার কিছু নেই, আছে শুধু নেওয়ার। তা, সুমন কার্পণ্য করে না সে সব অমূল্যধন অঞ্জলি ভরে নিতে।
ঘাস, জলকাদা আর ভেজা বালিমাটির উঠোনে আমরা আধলা ইট পেতে বসে আছি। সুমন বলে, ‘কী করে ভুলব বল দিকি!’
আমি বলি, ‘অভ্যেস হয়ে যাবে।’
‘ও যেদিন নতুন করে আবার বিয়ে করবে, আমায় খবর দিস—কেমন?’
কী বলব? বলার কিছু নেই। ওর বউকে আমি দেখেছি দু’বার। বিয়ের দিন আর বিয়ের পরে একবার—যখন আমরা বন্ধুরা মিলে দলবল নিয়ে এসেছিলাম। সেদিন ওর স্ত্রীর আচরণ আমাদের কারও ভালো লাগেনি। সেদিন তাকে খুব অহংকারী ও উদ্ধত লেগেছিল। আমরা সকলেই এখন চাকরি-বাকরি করি, পড়াশোনা শিখেছি। কিন্তু আলটিমেট সুমন আমাদের বন্ধু, তা সে যত কমই লেখাপড়া করুক না কেন। সেদিন আমাদের মনে হয়েছিল, একজন এমএ পাশ মেয়ে প্রায় অশিক্ষিত একটি পরিবারের বউ হয়ে এসে তাদের মাথা যেন কিনে নিয়েছে।
সুমন পাতকুয়ো থেকে জল তুলে নিয়েছে। সারাদিনের পরিশ্রম ধুয়ে ফেলছে সেই ঠান্ডা জলে। ছোট বালতির সেই জল মাথায় ঢালছে আর মুখ দিয়ে একটা শব্দ করছে। খানিক পরেই সন্ধে নামবে বলে পাখিরা ফিরে যাচ্ছে। ঘাসের ভিতর, জলের ভিতর ও অন্তরীক্ষ থেকে নানারকম শব্দ ভেসে আসছে। বর্ষার ব্যাঙ ও উচ্চিংড়েরা ইতিমধ্যেই হল্লা মাচিয়ে আমাদের ঘিরে ফেলেছে। দইয়ের ডোবার ধার দিয়ে ফেরার সময় যে রুগ্ন বউটিকে দেখেছিলাম, সে এখন গোরুর দড়ি ধরে আলপথ দিয়ে ফিরছে। যে মাছেরা উঁকি দিচ্ছিল আখগাছের গোড়ায়, তারা কি ফিরে এসেছে আবার? ওই যে, শুকিয়ে যাওয়া একটি আমপাতা খসে পড়ল সেই জলে। আর এইভাবে একটি সন্ধে এসে উপস্থিত হল সুমনের অর্ধ-সংসারে।
মাঠঘাট, জলজঙ্গল ঘিরে এই যে সুমনের এক একাকী অদ্ভুত জগৎ, তার ভেতর থেকে আমি আমাদের চেনাজানার বাইরের আর এক সুমনকে চিনে নিতে থাকি। বুঝতে পারি, বউ চলে যাওয়ার পর সুমন এই বন-মাটি-জলজঙ্গল, গাছপালার সঙ্গে বড় একাত্ম হয়ে পড়েছে। এই এলাকার মাঠের ধারে ও মাঠের ভেতর যত ঝোপঝাড়, লতাপাতা, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, বিল-ডোবা-পুকুর ও বন্যপ্রাণ আছে—সকলকে সে হাতের তালুর মতো চেনে। সেই সুমনকে আমরা কেউ চিনি না। যার গা থেকে উঠে আসে অন্যতর এক মাটির গন্ধ। 
অঙ্কন: সুব্রত মাজী
17th  January, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

দারোগাবাড়ির ঠেকে সহজকে দেখে হঠাৎই ক্যাপ্টেন বেমক্কা বলে বসলেন— ‘তুই ভুল করেছিস পরি! এ ছেলে সহজ নয়, এ ছেলে কেন তোর এখানে? বড্ড ভুল করছিস!’ পরমেশ্বর অবাক হয়ে জানতে চাইল, ‘কেন, কী ভুল করলাম ক্যাপ্টেন?’ তারপর... 
বিশদ

07th  March, 2021
পিশাচ সাধু 
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের সঙ্গে দারোগা বাড়ির ভূতুড়ে ঠেকে এসেছিল সহজ। হুল্লোড়ের মাঝে সেখানে হঠাৎই হাজির হলেন ক্যাপ্টেন। যিনি নিজেকে পিশাচ সাধু বলেন। তিনি সহজকে দেখে বললেন, তুই এখানে কেন? তারপর... 
বিশদ

28th  February, 2021
দেশি ছেলেপুলে 
চন্দন চক্রবর্তী

ব্যানার্জিবাবু প্রচণ্ড উত্তেজিত! ‘তা বলে আমার ফ্ল্যাটের সামনে?’ আবাসনের পার্কে তখন প্রাতঃভ্রমণকারীরা বসে। কেউ রামদেব, কেউ বা ফড়িং-এর মতো ফড়ফড় করে হাত-পা নাড়ানাড়ি করছেন। ব্যানার্জিবাবু রীতিমতো সুদর্শন। ফর্সা রং, চোখে বিদেশি চশমার ফ্রেমে আঁটা দেশি চশমার লেন্স।  
বিশদ

28th  February, 2021
ভাষা ও ভালোবাসা 
ছন্দা বিশ্বাস

অহর্নিশকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুরে খাওয়ার পর দোতলার ঘরে শুয়েছিল অহর্নিশ। শুয়ে শুয়ে একটা কমিক্সের বইয়ের পাতা ওল্টাচ্ছিল। অবন্তিকা দেখে এসেছে। ভেবেছে গল্প পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়বে। ছেলের মাথার হাত বুলিয়ে বলে এসেছে, ‘তাড়াতাড়ি একটু ঘুমিয়ে নাও, চারটের সময়ে কিন্তু আমাদের বেরতে হবে।  
বিশদ

21st  February, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

পিশাচ আবার সাধু হয় নাকি! সহজ এই কথাটাই ভাবছিল। সহজ মিত্র— নামটা কি খারাপ? আনকমন নাম। কিন্তু এই আনকমন নামটাকে কিছু ফালতু পাবলিক ঘেঁটে দিয়েছে। তারা তার নাম রেখেছে সহজ পাঠ। সেই সহজ পাঠকে দেখেই যেন মানুষটা থমকে দাঁড়ালেন। 
বিশদ

21st  February, 2021
আজও তারা জ্বলে

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তারই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ রাজলক্ষ্মী দেবী –শেষ কিস্তি। বিশদ

14th  February, 2021
এক অবহেলিতের যৎকিঞ্চিৎ

জীবনের প্রধান ও মুখ্য ঘটনাগুলিই কেবল মনে থাকার কথা। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় স্মৃতির অতলে অনেক তুচ্ছ ক্ষুদ্র ঘটনাও কেমন করে বেশ বড় হয়ে জাঁকিয়ে বসে রয়েছে। সাহিত্যিকদের ‘ভবঘুরে’ জীবনের তেমনই নানা ঘটনা উঠে এল কলমের আঁচড়ে। আজ লিখছেন দীপ মুখোপাধ্যায়। বিশদ

14th  February, 2021
আজও তারা জ্বলে

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তারই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ রাজলক্ষ্মী দেবী— দ্বিতীয় কিস্তি। বিশদ

07th  February, 2021
চলার পথে
তরুণ চক্রবর্তী

জীবনের প্রধান ও মুখ্য ঘটনাগুলিই কেবল মনে থাকার কথা। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় স্মৃতির অতলে অনেক তুচ্ছ ক্ষুদ্র ঘটনাও কেমন করে বেশ বড় হয়ে জাঁকিয়ে বসে রয়েছে। সাহিত্যিকদের ‘ভবঘুরে’ জীবনের তেমনই নানা ঘটনা উঠে এল কলমের আঁচড়ে।  বিশদ

07th  February, 2021
নেটওয়ার্ক
ঈশা দেব পাল

দিদি মেয়ের সঙ্গে বন্ধুর মতোই মেশে। ওরা কথা বলছে দেখে আমি বাইরে উঠোনে এসে বসি। আড়চোখে দেখি মা ঘরে গিয়ে টিভি চালিয়ে সিরিয়াল দেখছে। কানে শোনে না, তবু দেখে। গল্প সব বোঝেও কিন্তু। বিশদ

31st  January, 2021
আজও তারা জ্বলে

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তারই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ রাজলক্ষ্মী দেবী-প্রথম কিস্তি। বিশদ

31st  January, 2021
চলার পথে
বলতে পারলে হতো

জীবনের প্রধান ও মুখ্য ঘটনাগুলিই কেবল মনে থাকার কথা। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় স্মৃতির অতলে অনেক তুচ্ছ ক্ষুদ্র ঘটনাও কেমন করে বেশ বড় হয়ে জাঁকিয়ে বসে রয়েছে। সাহিত্যিকদের ‘ভবঘুরে’ জীবনের তেমনই নানা ঘটনা উঠে এল কলমের আঁচড়ে। আজ লিখছেন অরিন্দম বসু। বিশদ

31st  January, 2021
স্বদেশ বিদেশ

জীবনের প্রধান ও মুখ্য ঘটনাগুলিই কেবল মনে থাকার কথা। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় স্মৃতির অতলে অনেক তুচ্ছ ক্ষুদ্র ঘটনাও কেমন করে বেশ বড় হয়ে জাঁকিয়ে বসে রয়েছে। সাহিত্যিকদের ‘ভবঘুরে’ জীবনের তেমনই নানা ঘটনা উঠে এল কলমের আঁচড়ে। আজ লিখছেন সমীর রক্ষিত। বিশদ

24th  January, 2021
আজও তারা জ্বলে

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তারই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ছবি বিশ্বাস- শেষ কিস্তি। বিশদ

24th  January, 2021
একনজরে
মালদহের গাজোলের রানিগঞ্জে এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। জখম ব্যক্তির নাম বিফল মণ্ডল। ...

কয়লা পাচার কাণ্ডে এবার নতুন মোড় নিতে চলেছে। এই কাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআইয়ের নজরে পড়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ন’টি বিশাল প্লট। বহু কোটি মূল্যের ...

ব্রিটিশ রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন যুবরাজ হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেল। তাঁদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তোলপাড় চলছে। যদিও রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে ভাই ...

শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের দাবি মানতে বাধ্য হল মোদি সরকার। করোনার ভ্যাকসিন প্রাপ্তদের শংসাপত্রে আপাতত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি থাকছে না। ভোটের আদর্শ  নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে কমিশনের নির্দেশ মতোই সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ছবি। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

গ্লুকোমা দিবস
১৭৮৯ : আমেরিকায় পোস্ট অফিস স্থাপিত হয়
১৮৫৪: লেখক মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের জন্ম
১৮৯৪ : যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বোতলজাত কোকাকোলা বিক্রি শুরু হয়
১৯০৪ : ইংল্যান্ডে ইলেকট্রিক ট্রেন চালু হয়
১৯১১: বাঙালি সাহিত্যিক অতুলচন্দ্র গুপ্তের জন্ম
১৯১৮ : ২১৫ বছর পর ফের রাশিয়ার রাজধানী হল মস্কো
১০২৪: সঙ্গীতশিল্পী উৎপলা সেনের জন্ম
১৯৩০ : মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে বৃটেনের বিরুদ্ধে সত্যাগ্রহ বা অসহযোগ আন্দোলন শুরু
১৯৮৪: সঙ্গীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষালের জন্ম
১৯৮৮: সাহিত্যিক সমরেশ বসুর (কালকূট) মৃত্যু
১৯৮৯ : স্যার টিম বার্নার্স লি CERN-এর ল্যাবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) বিশ্বের তথ্য আদানপ্রদানের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমের অবতারণা করেন।
২০১৩: শিল্পী গণেশ পাইনের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭১.৩০ টাকা ৭৪.৫৪ টাকা
পাউন্ড ৯৮.৭৪ টাকা ১০৩.৫৫ টাকা
ইউরো ৮৪.৬০ টাকা ৮৮.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৫,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৩,৪০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৪,০৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৮,০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৮,১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৮ ফাল্গুন ১৪২৭, শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১। চতুর্দ্দশী ২২/৫৭ দিবা ৩/৩। শতভিষা নক্ষত্র ৪২/২৭ রাত্রি ১০/৫১। সূর্যোদয় ৫/৫২/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৪০/৪৩। অমৃতযোগ দিবা ৭/২৫ মধ্যে পুনঃ ৮/১৪ গতে ১০/৩৫ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৭ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/৭ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/১৮ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ৩/২৪ গতে ৪/১৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩৩ গতে ১১/২১ মধ্যে পুনঃ ৪/১৩ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৫০ গতে ১১/৪৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৩ গতে ১০/১৫ মধ্যে। 
২৭ ফাল্গুন ১৪২৭, শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১। চতুর্দ্দশী দিবা ২/৪৩। শতভিষা নক্ষত্র রাত্রি ১০/৪২। সূর্যোদয় ৫/৫৪, সূর্যাস্ত ৫/৪১। অমৃতযোগ দিবা ৭/১৩ মধ্যে ও ৮/১ গতে ১০/২৮ মধ্যে ও ১২/৫৪ গতে ২/৩২ মধ্যে ও ৪/৯ গতে ৫/৪১ মধ্যে। এবং রাত্রি ৭/২১ গতে ৮/৫৬ মধ্যে ও ৩/১৩ গতে ৪/১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩০ গতে ১১/১৭ মধ্যে ও ৪/১ গতে ৫/৫৩ মধ্যে। বারবেলা ৮/৫১ গতে ১১/৪৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৪ গতে ১০/১৬ মধ্যে। 
২৭ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
প্রথম টি২০: ভারতকে ৮ উইকেটে হারাল ইংল্যান্ড 

10:17:20 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ড ৮৯/১ (১১ ওভার) 

09:52:13 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ড ৫০/০ (৬ ওভার) 

09:28:55 PM

প্রথম টি২০: ইংল্যান্ডকে ১২৫ রানের টার্গেট দিল ভারত

08:49:53 PM

প্রয়াত  রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম সহঅধ্যক্ষ স্বামী বাগীশানন্দ
প্রয়াত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম সহঅধ্যক্ষ স্বামী বাগীশানন্দ। আজ, ...বিশদ

08:40:00 PM

প্রথম টি২০: ভারত ৮৩/৪ (১৫ ওভার)

08:19:34 PM