শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
‘পূজার ভারী ধূম!.... বাবু দেড় ফিট উচ্চ গদির উপর তসর কাপড় পরে বার দিয়ে বসেচেন, দক্ষিণে দেওয়ান টাকা ও সিকী আধুলীর তোড়া নিয়ে খাতা খুলে বসেচেন, বামে হবীশ্বর ন্যায়লঙ্কার সভাপণ্ডিত অনবরত নস্য নিচ্ছেন।.... বাবু মধ্যে মধ্যে করেও অ্যাক আধটা আগমণী গাইবার ফরমাস কচ্চেন। কেও খোস গল্প ও অন্য বড় মান্ষের নিন্দাবাদ করে বাবুর মনোরঞ্জনের উপক্রমণিকা কচ্চেন.... ’
দুর্গাপুজোর আড্ডা নিয়ে অনেক মজার গল্প কথা রয়েছে। রসরাজ অমৃতলাল বসু আর দাদাঠাকুর উপস্থিত হয়েছেন নির্মল চন্দ্রর বাড়িতে। অতিথি, অভ্যাগতর ভিড়ে জমজমাট আড্ডাস্থল। এরই মধ্যে অমৃতলাল দাদাঠাকুরকে বললেন, ‘ওহে ছোকরা, তোমার তো চারিদিকে কত নামডাক, শুনেছি তুমি মুখে মুখে ছড়া কাটতে পারো, তা এখন মা দুর্গাকে নিয়ে ছড়া কাটো দেখি। দাদাঠাকুর ছড়া বানালেন ‘দুটি মনের কথা বলি জগদম্বে/ বল দেখি মা দীনের দুঃখ কোন কালে বা কমবে।’ সমবেত হাসি, করতালিতে জমজমাট সে আড্ডাক্ষেত্র।
দুর্গোৎসবই বাঙালির শ্রেষ্ঠ পার্বণ। তাই সেই সময় সমস্ত অভিজাত পরিবারে বোধনের দিন থেকে বিজয়া পর্যন্ত চলত জাঁকজমক সহ বৈচিত্র্যময় নানা অনুষ্ঠান। নহবত বসত। সানাইয়ের মিঠে সুরে মিলে যেত রাজকীয় জৌলুস। পুজোর তিন দিন রাতে ঠাকুরদালানে হতো যাত্রা-থিয়েটার। দালান সংলগ্ন বারান্দায় চিকের আড়ালে বসে বাড়ির বউ-মেয়েরা যাত্রা-থিয়েটার দেখতেন। কোনও কোনও পরিবারে গানের আসরও বসত। আগমনী গানের সঙ্গে মিশে যেত। আর এইসব আসর অনুষ্ঠানে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে ঠিক হতো কীভাবে পুজোর আয়োজনে এক পরিবার অন্য পরিবারকে টক্কর দেওয়ার পরিকল্পনা।
সময়ের হাত ধরে বদলানো শতাব্দীতে পাল্টে গিয়েছে পুজোর আড্ডা। এসেছে থিমের পুজো। সেটারও বিরাট আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। আর নতুন প্রজন্ম রাত জেগে ঠাকুর দেখে প্যান্ডেলে ঢুঁ মেরে, অবিরাম নিজস্ব তালে গানে-গল্পে আড্ডায়, গেম শোয়ে অংশগ্রহণ করে। সেই আড্ডার পরিবেশই অন্যরকম। এইভাবেই নতুন প্রজন্ম উপভোগ করে অন্তহীন আনন্দ। তবে প্রযুক্তির সাড়া জাগানো সময়ে পুজোয় হোয়্যাটস অ্যাপেও জমে জবরদস্ত আড্ডা। গোটা বিশ্বকে মুঠোয় পুরে টেক্সাস থেকে টালিগঞ্জ, হংকং থেকে হাতিবাগান দিব্য চলে জগৎ জোড়া বিশ্বজননীর দর্শন আর নিখাদ আড্ডা। সেও এক ভিন্ন স্বাদ। এক অন্য আনন্দ।