নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় বৃষ্টির জল জমেছিল। এলাকার কাউন্সিলার যা নিষ্কাশনের কোনও উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ জানিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় বেহালার সরশুনায় ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের নস্করপাড়ার ১ নম্বর বাই লেনের বাসিন্দারা মিছিল বের করেছিলেন। সেই মিছিলে হামলার অভিযোগ উঠল এলাকার বেশ কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকার সিপিএম কাউন্সিলার নীহার ভক্তের উস্কানি রয়েছে বলে আক্রান্তরা অভিযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, ওই ঘটনায় তিনজন শিশু, দু’জন মহিলা ও চারজন যুবক জখম হয়েছেন। যদিও কাউন্সিলার নীহার ভক্ত বলেছেন, কোনও শিশুর উপর হামলা করে না সিপিএম। এলাকার একটি নির্দিষ্ট অংশে জল জমেছিল। যা নিয়ে নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু সেই বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকার কিছু মানুষ দল বেঁধে আমায় গালিগালাজ করতে শুরু করে। তারা আমাকে মারধর করারও হুমকি দিত। রবিবার তারা গালিগালাজ করতে করতেই মিছিল করছিল। স্থানীয় কিছু যুবক এর প্রতিবাদ করায় দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ ও হাতাহাতি হয়। তখন ওই লোকজন মহিলাদের এগিয়ে দেয়। সরশুনা থানার পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় বাহিনী পাঠানো হয়। পুলিস চারজনকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার তাদের জামিন হয়েছে। আক্রান্তদের অভিযোগ, এই চারজন নীহার ভক্তের অনুগত। যদিও কাউন্সিলারের কথায়, যারা এই অভিযোগ করছে, তাদের পিছনে কারা রয়েছে এবং কীভাবে তারা এলাকাকে অশান্ত করছে, তা আমি জানি। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট জায়গায় জানাব।
নস্করপাড়ার ১ নম্বর বাই লেনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের এলাকা দেড় মাসের উপর একহাঁটু জলের তলায়। দীর্ঘদিন জল জমে থাকায় মশার দাপট বেড়েছে। জনজীবন সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত। পানীয় জলের পাইপলাইনও ডুবে রয়েছে। তাঁরা বলেন, কাউন্সিলার জলাজমির ভিতর দিয়ে একটি রাস্তা বের করেছেন। ওই জমি দিয়ে এখানকার জল নিষ্কাশিত হয়ে বড় নিকাশিনালায় চলে যেত। কিন্তু এখন কোনও কালভার্ট না থাকায় জল নামে না। যা নিয়ে বাসিন্দারা প্রতিবাদ করলেও কাউন্সিলার তোয়াক্কা করেননি বলে অভিযোগ আক্রান্তদের।
তাই অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে আন্দোলন শুরু করেন বাসিন্দারা। এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে এলাকায় ঢুকে কিছু যুবক হুমকি দিয়ে যায়, নীহার ভক্তের বিরুদ্ধে কোনও আন্দোলন চলবে না। যদিও নীহারবাবু বলেন, সর্বৈব মিথ্যা। ওই অংশে জল নিষ্কাশনের সমস্যা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু তা প্রতিকারের চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে বাসিন্দারা মেয়রের কাছে যান। বরো চেয়ারম্যানের কাছে যান। কিন্তু আমার নামে যেভাবে অশ্লীলভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে, তা অন্য উদ্দেশ্য না থাকলে কেউ করে না বলেই তাঁর দাবি।
আক্রান্তদের অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ এলাকার বাসিন্দারা নাগরিক কমিটি গঠন করে দলমত নির্বিশেষে মিছিল বের করে। শিশু, মহিলা ও বয়স্করা ছিলেন সামনের দিকে। ওই পদযাত্রা তারা মা’র মন্দির অতিক্রম করতেই এলাকার কিছু যুবক সেই মিছিলে আচমকা হামলা করে। শিশু থেকে মহিলা, প্রায় প্রত্যেককেই বেধড়ক মারধর করা হয়। মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হয়। এরপরই আক্রান্তরা সরশুনা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। তারপরই পুলিস পদক্ষেপ করে।