শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
মালদহের রতুয়া-১ ব্লকের ফুলহার এবং মহানন্দার জল বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বহু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। ভাঙনও শুরু হয়েছে। রতুয়ার মহানন্দাটোলা এবং বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে সাত হাজারেরও বেশি পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাটে জলজমে প্রচুর এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টি সংসদের মধ্যে ১৬টি সংসদেই বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন । বিলাইমারির বহু রাস্তার উপর দিয়ে জল বয়ে যাচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই নয়া বিলাইমারি এলাকায় গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে। রতুয়া ব্লকের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের সংসদ সদস্য বিজেপির খগেন মুর্মু মহানন্দাটোলা এবং বিলাইমারির প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনেন।
রতুয়ার পশ্চিম প্রান্তে গঙ্গার জল বিলাইমারি গ্রামে ঢুকে ফুলহারের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। যে কারণে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পুজোর মুখে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এলাকায় বিষাদ ছড়িয়েছে। রতুয়ার সূর্যাপুর, বিলাইমারি, মহানন্দাটোলা, খাকসাবোনা বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নয়া বিলাইমারি পশ্চিম অংশে গঙ্গা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত দু’দিনে এলাকার বেশ কয়েক বিঘা চাষের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এদিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে খগেন মুর্মু এলাকায় গেলে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ত্রাণ নিয়ে দুর্গতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
খগেন মুর্মু বলেন, জল বেড়ে যাওয়ায় এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি এলাকা ঘুরে মানুষের সমস্যা, অভাব-অভিযোগ শুনেছি। বিলাইমারির একাংশে ভাঙন আগে থেকেই ছিল। সেটি প্রতিরোধ করা প্রয়োজন। বিষয়টি আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাব। চাঁচলের মহকুমা শাসক সব্যসাচী রায় বলেন, রতুয়া ছাড়া কোথাও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। রতুয়ায় দুর্গতদের ত্রিপল চিঁড়া, গুড় বিলি করা হয়েছে।
মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের কিরণ মাঝি বলেন, বন্যা ও ভাঙন দুই-ই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আমরা গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছি। সব মিলিয়ে আমার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের উদ্যোগে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রাখার উদ্যোগ নিয়েছি। বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান লুৎফর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির কারণে এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষ বাড়ি থেকে বেরতে পারছে না। শিশু ও মহিলারা বিপদে পড়েছে। এলাকার বহু চাষের জমি প্লাবিত।
মানিকচকে গঙ্গার জল ঢুকে মানিকচক, হীরানন্দপুর, গোপালপুর, দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছেন। গত দুদিন ধরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় এলাকায় ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে। মানিকচক ব্লকের বিডিও সুরজিৎ পণ্ডিত বলেন, গঙ্গার জলে মানিকচক, গোপালপুর দক্ষিণ চণ্ডীপুর হিরানন্দপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছনো গিয়েছে। আমরা চিঁড়া, গুড়, ত্রিপল বিলি করছি।
জেলা সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গার জল চূড়ান্ত বিপদসীমা পার করে ২৫.৩৪ মিটারে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফুলহারের জল বেড়ে ২৭.১২ মিটার দিয়ে বইছে। মহানন্দার জলও বাড়ছে। বিপদসীমা থেকে অল্প নীচেই রয়েছে মহানন্দা।