শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
এগরা শহরের ‘দীঘা মোড় সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’র পুজো এবার ১৫বছরে পড়ল। ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বজ্যোতি মাইতি বলেন, এবার থিমের নাম ‘প্রতিমা নয়, প্রতি মায়ের মধ্যেই আছেন দুর্গা’। বিষয়টা হল, আমরা মা দুর্গাকে যে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখি, একজন সাধারণ মেয়েকেও সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা দরকার। কারণ প্রত্যেক মেয়ের মধ্যেই নানা সামাজিক গুণ নিহিত রয়েছে। তাই দুর্গার মধ্যে দিয়ে একটি মেয়ের প্রতিরূপ ফুটিয়ে তোলা হবে। মণ্ডপ,প্রতিমা ও নানা সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই আমরা থিমটিকে ফুটিয়ে তুলছি। বাঁশ, কাপড়ের উপর স্পঞ্জ ও নানা হস্তশিল্পের কাজ থাকছে। সঙ্গে মানানসই প্রতিমা।
দীঘা মোড়ের কাছেই ত্রিকোণ পার্কে ‘১নম্বর ওয়ার্ড সমন্বয় উৎসব কমিটি’র পুজোয় সম্প্রীতির আহ্বান। এখানে হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষজন মিলে দুর্গোৎসবের আয়োজন করেন। দুই সম্প্রদায়ের মানুষজন মিলে শতাধিক সদস্য রয়েছেন। চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে সবকিছুই তাঁরা মিলেমিশে করেন। কমিটির সম্পাদক রয়েছেন অশোক জানা। সভাপতি শেখ সুরজ আলি। সুরজ সাহেব বলেন, এবার মৌচাকের আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। বাঁশ, কাপড়ের উপর থার্মোকল সহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে নির্মিত হচ্ছে মণ্ডপ। শহরের হটনাগর শিবমন্দিরের বিপরীতে ‘এগরা ফ্রেন্ডস ইউনাইটেড ক্লাবের’ পুজো পঞ্চম বর্ষে পা দিল। নেপালের প্রাচীন বৌদ্ধমূর্তির আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। বাঁশ, কাপড়ের সঙ্গে কয়েক লক্ষ সামুদ্রিক ঝিনুক দিয়ে ৬০ফুটের মণ্ডপ গড়ে তোলা হচ্ছে। ক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত সাউ বলেন, উষ্ণায়ন ঠেকাতে গাছ লাগানো, জল সংরক্ষণের মতো বিষয়গুলি প্লাস্টার অব প্যারিসের মাধ্যমে মণ্ডপের অভ্যন্তরে ফুটিয়ে তোলা হবে। থাকছে মানানসই সাবেকি প্রতিমা।
এগরা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ‘এগরা কালচারাল সোসাইটি’র পুজো এবার অষ্টম বর্ষে পা দিল। সম্পাদক কৌশিক মণ্ডল বলেন, থিমের নাম ‘আলো’। হ্যারিকেনের আদলে ২৮ফুটের মণ্ডপ হবে। একটি কাঠের নৌকার উপর সেই হ্যারিকেনটি থাকবে। উজ্জ্বল আলোর বাতির হ্যারিকেনটি লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি হচ্ছে। পুরো মণ্ডপ জুড়ে বল, নেট, মাছ রাখার বাক্স সহ মাছ ধরার যাবতীয় উপকরণ থাকবে। মণ্ডপে মৎস্যজীবীদের জীবনযাত্রার চালচিত্র তুলে ধরা হবে। প্রতিমা সাবেকি।
শহরের কসবা-এগরা এলাকার ‘নবরূপ’ ক্লাবের পুজো নবম বর্ষে পা দিল। ক্লাব সম্পাদক মিন্টু দাস বলেন, এবারের থিম ‘সবুজায়ন এবং জল সংরক্ষণ’। মণ্ডপে বাঁশের কাঠামোর উপর তৈরি করা হয়েছে অনেকগুলি মাচা। সেখানেই কোথাও মাচায়, কোথাও আবার মাটিতেই ফলে রয়েছে উচ্ছে, ঝিঙে, পটল, শশা সহ রকমারি আনাজ। ফাইবার কিংবা প্লাস্টিকের তৈরি আনাজ নয়, বরং রীতিমতো মাটি কুপিয়ে চাষিদের পরামর্শ মেনে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন আনাজ। এর আগে এই সমস্ত লতানো সবজির বীজ ফেলা হয়েছিল। জল, সার, ওষুধের পরিচর্যায় তিলে তিলে অঙ্কুর থেকে বড় হয়েছে গাছ। সেই গাছই দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাবে। গোটা মণ্ডপজুড়ে বিদ্যুতের আলোর পরিবর্তে বাহারি আলোর হ্যারিকেন থাকছে। বিভিন্ন গাছের চারা এবং রকমারি পাতাবাহার দিয়ে গোটা মণ্ডপ সাজানোর কাজ চলছে। থাকছে ছোট ছোট গাছের টব। মণ্ডপের অভ্যন্তরে থাকছে ছোট জলাশয়। সেখানে পুকুর সংরক্ষণের বার্তা তুলে ধরা হবে। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সাবেকি ঘরানার প্রতিমা গড়ে তোলা হচ্ছে। মণ্ডপশিল্পী রয়েছেন এগরার পুরঞ্জন বাগ।
শহরের কসবা-এগরা এলাকায় ‘স্বপ্ননীড়’ ক্লাবের মহিলা পরিচালিত পুজো ১৫তম বর্ষে পা দিল। সদস্যা সংখ্যা ২৫জন। সম্পাদিকা কবিতা প্রধান বলেন, চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়ন, বিসর্জনী যাত্রা, সিঁদুরখেলা, আগাগোড়া সবকিছুই মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ হচ্ছে। প্রতিমা সাবেকি।
এছাড়াও ‘ফ্রেন্ডস রিক্রিয়েশন ক্লাব, আকলাবাদ মিলন দুর্গোৎসব কমিটি, এগরার মিলনী দুর্গোৎসব কমিটি, সমন্বয় ক্লাব, এগরা সম্প্রীতি ক্লাব, এগরা গোল্ডেন পাস্ট সহ প্রতিটি ক্লাবই প্রতিবছর মণ্ডপ ও প্রতিমায় অভিনবত্ব ও বৈচিত্র্য আনে। শুধু তাই নয়, শহরেরই দীঘা মোড়ের মাইতিবাড়ির ‘জয়দুর্গা’ পুজো বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই পুজোয় মহিষাসুর নেই। দীঘা মোড়েই খাটুয়া বাড়ির পুজো, অঁলুয়া এলাকায় মহাপাত্র বাড়ির পুজোও বেশ ধুমধাম করেই হয়।