জম্মু, ২৩ সেপ্টেম্বর (পিটিআই): জম্মু ও কাশ্মীরে বিজেপি ও আরএসএস নেতা খুনে অভিযুক্ত তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। নাসির আহমেদ শেখ, নিশাদ আহমেদ এবং আজাদ হুসেন নামে ওই তিন জঙ্গি হিজবুল মুজাহিদিনের সক্রিয় সদস্য। কিস্তওয়ার জেলার একটি গোপন ডেরায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিস জানিয়েছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ধৃত তিন জয়েশ জঙ্গিকে ম্যারাথন জেরার জন্য জম্মুতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে জেআইসি’র মুখোমুখি হবে এই তিন জঙ্গি। কাশ্মীরকে অশান্ত করতে তাদের কী পরিকল্পনা ছিল, তা জানার চেষ্টা করবেন একাধিক তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।

২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে কিস্তওয়ার জেলার বিজেপি নেতা অনিল পরিহার ও তাঁর ভাই অজিতকে গুলি করে খুন করা হয়। ওই বছরই মার্চ মাসে ডেপুটি কমিশনারের ব্যক্তিগত রক্ষীর রাইফেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ফের এপ্রিল মাসে হাসপাতালে হামলা চালিয়ে খুন করা হয় আরএসএসের সংগঠক চন্দ্রকান্ত শর্মাকে। তাঁর ব্যক্তিগত রক্ষীর রাইফেলও ছিনতাই করে চম্পট দেয় জঙ্গিরা। এই তিনটি ঘটনার সঙ্গেই ধৃতরা জড়িয়ে বলে রাজ্য পুলিসের আইজি (জম্মু জোন) মুকেশ সিং জানিয়েছেন। এ ছাড়াও গত ১৩ সেপ্টেম্বর পিডিপি’র জেলা সভাপতি শেখ নাসির হুসেনের বাড়িতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। কিস্তওয়ার জেলার গৌরিয়ান গ্রামে বাড়ি নাসিরের। হামলার পর তাঁর দেহরক্ষীর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। এই ঘটনার সঙ্গেও ধৃতদের যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিস। ফলে তিন জঙ্গির ধরা পড়ার ঘটনায় কিস্তওয়ার জেলায় জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। আইজিও জানিয়েছেন, কিস্তওয়ার জেলার চন্দ্রভাগা উপত্যকায় ২০১৭-২০১৮ সালে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের ব্যাপক প্রসার ঘটে। এইসব কার্যকলাপের ‘মাস্টার মাইন্ড’ ছিল নাসির আহমেদ শেখ। বিজেপি ও আরএসএস নেতা খুনে মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবেও তার নাম উঠে এসেছে। নাসিরের অন্যতম সহযোগী ছিল নিশাদ ও আজাদ। জানা গিয়েছে, শেখ ও হুসেনের বাড়িতে ঘাঁটি গেড়ে কিস্তওয়ার জেলায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাত জঙ্গিরা। ধৃতদের ডেরা থেকে বেশকিছু পিস্তল, রাইফেল এবং প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে পুলিস।
গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কাশ্মীরে জঙ্গিদের বড়সড় নাশকতার ছক বানচাল করে নিরাপত্তা বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় সুহীল আহমেদ লাটো, বাসির আহমেদ লোন এবং এজাভাইদ আহমেদ দার নামে তিন জঙ্গিকে। ধৃতরা সকলেই জয়েশ-ই-মহম্মদের সক্রিয় সদস্য। একটি ট্রাকে করে প্রচুর বিস্ফোরক, চারটি একে ৫৬ রাইফেল, দু’টি একে ৪৭ রাইফেল নিয়ে পাঞ্জাব থেকে পুলওয়ামায় আসছিল এই জয়েশ জঙ্গিরা। কাঠুয়া জেলার লক্ষ্ণণপুরের কাছে ট্রাকটিকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় তিন জঙ্গিকে। পুলিস জানিয়েছে, ট্রাকটি চালিয়েছিল আহমেদ দার। আত্মঘাতী জঙ্গিদের হাতে বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। এদিন ধৃতদের কড়া নিরাপত্তায় জম্মুর জেআইসিতে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। সেখানে একাধিক তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা ধৃতদের জেরা করবেন।