শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
২০১৬ সালে আপনার ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করেছিল?
(হেসে) ওঃ আপনি কেটের কথা বলছেন! হ্যাঁ ডাচেস অব কেমব্রিজ কেট মিডলটন ভারতে এসে আমার ডিজাইন করা একটি টিউনিক পরেছিলেন। সেটা চাউর হয়ে যেতেই এত মানুষ আমার ওয়েবসাইট দেখতে শুরু করেন যে সেটা ক্র্যাশ করে যায়। আর শুধু কেটই কেন, মিসেস হিলারি ক্লিন্টন, ফার্স্ট লেডি অব কানাডা সোফি গ্রেগরি এঁরাও আমার তৈরি পোশাক পরেছেন। কেট তো আমার ডিজাইন করা হীরে আর মুক্তো দিয়ে বানানো কানের দুলও পরেছে।
নিউ ইয়র্কের সোফিতে আপনার শো রুম আছে। সেখানেও সেলেবরা যাতায়াত করেন। সেই সূত্র ধরেই জানতে ইচ্ছে করছে, আপনার মতো সেলিব্রিটি ডিজাইনাররা কি শুধুই পয়সাওয়ালা মানুষদের কথা ভেবে পোশাক তৈরি করেন?
(মুখের স্মিত হাসি ধরে রেখে) এ দেশে আমিই একমাত্র ডিজাইনার যে সাধারণ মানুষের জন্যেও পোশাক বানায়। কলকাতার এলগিন রোডে আমার শো রুমে গেলেই আপনি সেটা বুঝতে পারবেন। আমার একাধিক লেবেল আছে। তার মধ্যে ‘গ্লোবাল দেশি’ ব্র্যান্ডের পোশাক শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই ডিজাইন করা।
সেগুলোর দাম কেমন? আমার সাধ্যের মধ্যে হবে?
‘গ্লোবাল দেশি’-র দাম শুরু ৮০০ টাকা থেকে। আপনি প্লিজ একবার যাবেন আমার দোকানে।
হিলারি ক্লিন্টন প্রসঙ্গে মনে পড়ল, আচ্ছা রাজনীতিবিদরা কি একটু কম ফ্যাশন সচেতন হন?
মিসেস ক্লিন্টন, কেট এবং সোফি তিনজনই অত্যন্ত ফ্যাশনেবল লেডি।
ভারতীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে সব থেকে ফ্যাশন সচেতন কে বলে আপনার মনে হয়?
আরে বাঃ এটা তো খুব ভালো প্রশ্ন করেছেন! দাঁড়ান দাঁড়ান, একটু ভাবি। (কপালে আঙুল ঠেকিয়ে মাথা নিচু করে ভাবতে থাকলেন, কয়েক সেকেন্ডের নিরবতা) ইন্দিরা গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী যথেষ্ট ফ্যাশন সচেতন মহিলা। ওঁরা নিজেদের পোশাক খুব ভালো ক্যারি করতে পারেন। কিন্তু সঠিক অর্থে ফ্যাশন সচেতন বলতে যা বোঝায় তেমন কেউ এখনও ভারতীয় রাজনীতিতে আসেননি। (সামান্য বিরতি নিয়ে) ওঃ নরেন্দ্র মোদি! ওঁর বন্ধ গলা জ্যাকেট তো ভারতে সুপারহিট! উনি অবশ্যই ফ্যাশনেবল। তবে আমাদের দেশে মানুষ ফিল্ম স্টারদেরই মূলত ফলো করে তো!
ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে শাড়ির কদর কি ইদানীং একটু কমতির দিকে?
না না, কে বলল! আমাদের দেশের মহিলাদের মধ্যে শাড়ির আবেদন কখনওই কমবে না। আগে যেমন ছিল এখনও ততটাই চাহিদা আছে শাড়ির। প্রত্যেক মহিলার ওয়ারড্রোবেই আপনি অন্যান্য পোশাকের সঙ্গে কমবেশি শাড়ির দেখা পাবেন।
বাংলার শাড়ি নিয়ে কাজ করেছেন?
না, তবে আমার ইচ্ছে আছে বাংলার ফ্যাব্রিক নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করার। আসলে এখনও অনেক কিছুই করার বাকি আছে আমার।
একজন সফল ডিজাইনারের পাশাপাশি আপনি একজন সফল ব্যবসায়ীও। কীভাবে শুরু করেছিলেন?
আমি আর আমার বোন মিলে বাড়ির বারান্দায় দুটো সেলাই মেশিন কিনে শুরু করেছিলাম। এটা তিন দশক আগের কথা। তারপর অনেক লড়াই, অনেক বাধা অতিক্রম করে আজ এই জায়গায়।
টাকার জোগাড় হয়েছিল কীভাবে? বাড়ি থেকে সাহায্য পেয়েছিলেন?
নিজের হাতখরচের টাকা জমিয়ে সব করেছি। কারও থেকে সাহায্য নিইনি। তারপর ব্যবসার লাভের টাকা ফের ব্যবসায় ঢেলেছি। দেখুন কোনও কিছুই সহজে হয় না। জীবন আপনাকে প্রতিটি পদে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করাবে, দাঁড় করাবেই। সেই চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। এটাই নিয়ম। আমিও তাই করেছি। সেই অর্থে ধরতে গেলে আমি একশো শতাংশ ‘সেলফ মেড’।
ধন্যবাদ
আশা করি আপনার ভালো লেগেছে! আপনি কিন্তু একদিন অবশ্যই আসবেন আমার শো রুমে।
পাতার ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে