শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে অষ্টদল পদ্মের প্রতিটি দল বা পাঁপড়িতে আটজন করে যোগিনীর অর্থাৎ আটটি দলে মোট চতুঃষষ্ঠী যোগিনীর পুজো ও প্রণাম করে মন্ত্রদ্বারা কোটিযোগিনীর পুজো করে মণ্ডলের নবঘটে নবদুর্গার আহ্বান করে পুজো ও প্রণাম করা হয়।
তারপর হয় দিক্পালের পুজো। মণ্ডলমধ্যে দশদিকে দশরংয়ের ধ্বজ বা পতাকা রোপণ করে দিক্পালের পুজো করা হয়ে থাকে। পূর্বদ্বারে শুক্লধ্বজ পতাকা রোপণ, অগ্নিকোণে রক্তধ্বজ পতাকা, দক্ষিণে কৃষ্ণধ্বজ পতাকা, নৈঋতে রক্তধ্বজ পতাকা, পশ্চিমে নীলধ্বজ পতাকা, বায়ুকোণে পীতধ্বজ পতাকা, উত্তরে কৃষ্ণধ্বজ পতাকা, ঈশানে শ্বেতধ্বজ পতাকা, মধ্যে রক্তধ্বজ পতাকা, পূর্ব ও ঈশান কোণে বিচিত্রধ্বজ পতাকা রোপণ করে মন্ত্র দ্বারা পুজো ও প্রণাম করতে হয়।
দুর্গাপুজোর প্রত্যেক দিনই মা দুর্গাকে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করে মায়ের আশীর্বাদ প্রার্থনা করা হয়। তবে অষ্টমীতে অঞ্জলির জনপ্রিয়তা আমাদের সমাজে বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
মা দুর্গার প্রিয় ফুল অতসী আর অপরাজিতা। তাই এই দুটি ফুল ও শিউলি ও অন্যান্য ফুল চন্দনের ছিঁটে দিয়ে সেই ফুল ও ত্রিপত্র বেলপাতা হাতে নিয়ে শুদ্ধাচারে তিনবার অঞ্জলির মন্ত্র বলে মাকে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করে প্রণাম মন্ত্র উচ্চারণ করে মায়ের আশীর্বাদ কামনা করা হয়।
এরপর দেবীর অস্ত্রসমূহের পুজো করা হয়। দুর্গাপুজোর অন্য দিনগুলোর মতো মহাষ্টমীতেও চণ্ডীপাঠ করা হয়।
অনেক পুজোতে মহাষ্টমীতে হোম করা হয়। গৃহস্বামীর বেদ অনুসারে হোম করা হয়। বেদ জানা না থাকলে যজুঃর্বেদ অনুসারে হোম অনুষ্ঠিত হয়।
অনেক স্থানে অষ্টমীতে কুমারী পুজো করা হয়। যাদের পুজোয় বলিদান প্রচলিত আছে সেখানে বলিদান করা হয়। মায়ের ভোগও বৈচিত্র্যপূর্ণ। কেউ কেউ মা সহ তার সন্তানদের সবাইকে নিরামিষ ভোগ দেন। কেউ বা মাকে মাছ, মাংস সহ আমিষ ভোগ দান করেন। মা ও তার সন্তানেরা আমিষ ভোগ খেলেও শিব ও নারায়ণকে সব সময়ই নিরামিষ ভোগ দিতে হয়। এছাড়া ফল, মিষ্টি, খই-মুড়কি, নাড়ু-তক্তি প্রভৃতি দিয়ে নৈবেদ্য প্রদান করা হয়।
পাঁচফল খই, মুড়কি, নাড়ু-তক্তি দিয়ে রচনা দেওয়া হয়। ভোগ প্রদানের পর আরতি করে অষ্টমী পুজো সমাপ্ত হয়।
অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে হয় মা দুর্গার সন্ধিপুজো।
(সন্ধিপুজো সম্বন্ধে পরের পাতায় লেখা আছে)
যদি সন্ধিপুজোর সময় সকালে বা রাতে হয় তাহলে সন্ধেবেলা মা দুর্গাকে বৈকালি ভোগ দিয়ে যথানিয়মে ঢাক-ঢোল-কাঁসর-ঘণ্টা-শঙ্খ ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে মায়ের আরতি হয়।
সন্ধিপুজো
অষ্টমী-নবমীর সন্ধিক্ষণে পুরোহিত সামান্যার্ঘ্যাদি স্থাপন পূর্বক মা দুর্গাকে চামুণ্ডারূপে চিন্তা করে ধ্যান করে ষোড়শোপচারে মায়ের পুজো করেন। এই সময় মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে মা দুর্গাকে একশো আটটি পদ্ম নিবেদন করা হয়। জ্বালানো হয় একশো আটটি মঙ্গলদীপ। তৈজসাধারাদি উৎসর্গ করে চতুঃষষ্ঠী-যোগিনী এবং মা চামুণ্ডার পুজো করা হয়। মা চামুণ্ডাকে শয্যা দেওয়া হয়। রক্তবস্ত্র মাকে দেওয়া হয়। ভোগ প্রদান করা হয়। বলিদান করা হয় (যাদের বলিপ্রথা আছে) দীপমালা উৎসর্গ করে যথানিয়মে সন্ধিপুজো করা হয়। মা চামুণ্ডার ধ্যানমন্ত্র হল— ‘ওঁ কালী করালবদনা বিনিষ্ক্রান্তাসিপাশিনী। বিচিত্র খট্টাঙ্গধরা নরমালাবিভূষণা। দীপিচর্মপরীধানা শুষ্কমাংসাতিভৈরবা। অতিবিস্তারবদনা জিহ্বাললনা ভীষণা। নিমগ্নারক্তনয়না নাদাপুরিতদিঙ্মুখা।’