উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
একে তো শত ব্যস্ততায় হাতে সময় কম। তার ওপর এই করোনা পরিস্থিতিতে পার্লার, স্যালঁ ভাবলেই কপালে ভাঁজ পড়ছে অধিকাংশের। এদিকে ত্বক সে কথা শুনবে কেন? নিত্য যত্ন বা রুটিন খেয়ালের বেলায় তার ভাগে কিছু কম পড়লেই সে জানান দেবে নানা ভাবে। শীতের আবহাওয়ায় এমনিতেও ত্বকের চাহিদা বদলায়। বাড়তি ভালোবাসা দিয়ে তাকে সাহায্য করতে হয়, যাতে সে আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে। এত দিন যেসব যত্নে ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখা যাচ্ছিল, সেসবেও কিছুটা বদল আনতে হয় শীতে। রূপবিশেষজ্ঞরা তাই বারবার সাবধান করেন, শীতকালে ত্বকের যত্নে যেন কোনও ঘাটতি না থাকে। তাঁদের মতে, পার্লারে যাওয়া সম্ভব না হলে এই মরশুমে ঘরোয়া উপায়েই যত্নে রাখুন মুখ-হাত-পা।
‘একেবারে হাতের কাছে থাকা কিছু উপাদানকে একটু বুদ্ধি করে ব্যবহার করলেই এই শীতেও ত্বক পেতে পারে বাড়তি জেল্লা। কোমল করা তো বটেই, সঙ্গে বলিরেখা দূর করা, বাড়তি ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনা— সব সম্ভব কিছু ঘরোয়া ফেসপ্যাক ব্যবহার করলেই,’ জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ শর্মিলা সিং ফ্লোরা। গৃহস্থের রান্নাঘরে সহজেই মেলে এমন কিছু উপাদানে তৈরি এই ফেসপ্যাকগুলি। শীতে পাওয়া যায় এমন ফল, সব্জি যোগ করলে এই সব ফেসপ্যাক আরও কার্যকর হয়ে উঠতে পারে বলে মত তাঁর।
কোন কোন প্যাকে আস্থা রাখতে পরামর্শ দিচ্ছেন শর্মিলা? রইল হদিশ।
কমলালেবু: কমলালেবুর খোসায় প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে এই ভিটামিন খুব কার্যকর। শর্মিলা সিং ফ্লোরার পরামর্শ, কমলালেবুর খোসা রোদে শুকিয়ে তাকে মিহি করে গুঁড়ো করে নিন। এবার এর মধ্যে এক চামচ ওটমিল, এক চামচ দই ও কয়েক ফোঁটা মধু মেশান। এই মিশ্রণ ১০-১৫ মিনিট মাখিয়ে রাখুন ত্বকে। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। স্বাভাবিক ও তৈলাক্ত ত্বক হলে এই প্যাকে বিশেষ উপকার পাবেন। ত্বক খুব শুষ্ক প্রকৃতির হলে এই প্যাকে ওটসের পরিমাণ কমিয়ে মধুর ভাগ একটু বাড়িয়ে দেবেন। সপ্তাহে তিনবার এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বক খুব তেলা হলে কমলালেবুর খোসা গুঁড়ো এক চামচ নিয়ে তার সঙ্গে মুসুর ডালবাটা মিশিয়ে রেখে দিন মিনিট পনেরো। টানতে শুরু করলে ঠান্ডা জলে ভালো করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিন-চার দিন ব্যবহারে ভালো ফল মিলবে বলেই মত রূপবিশেষজ্ঞদের।
টক দই: কলা ও মধু দিয়ে বানানো ফেসপ্যাক যে কোনও ত্বকের জন্য খুব উপকারী। শুধু চামড়াকে নরম করাই নয়, তার জেল্লা ফিরিয়ে দিতে ও ট্যান মুছে ফেলতেও এই প্যাক খুব কাজে আসে। শীতের সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য এই চেনা প্যাকের সঙ্গে মেশান কিছুটা টক দই। এই মিশ্রণ ত্বকে মেখে রাখুন মিনিট পনেরো। তার পর তা ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে অবশ্য সপ্তাহে তিন দিনই যথেষ্ট।
পাতিলেবু ও মধু: শুধু ওজন কমাতেই এরা যৌথভাবে কাজ করে তা নয়, পাতিলেবু-মধুর যুগলবন্দিতে ত্বকেরও নানা উপকার হয়। লেবুর রস ত্বকের কালো দাগ, ব্রণর দাগ, মেচেতা দূর করতে সাহায্য করে। মধু আবার প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। শুধু তাই নয়, মধু ত্বকে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে। ফলে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমে। ১ চা চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দু’বার ব্যবহার করুন। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
হলুদ: শীতের স্নান সবচেয়ে কম সময়ের হয়। তাই ভালো করে ত্বক পরিষ্কারের কাজে ফাঁক থেকে যেতেই পারে। সেজন্যই শীতে হলুদের প্যাক খুব দরকারি। এর অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ হওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে। তাই হলুদ দেওয়া ফেসপ্যাক সপ্তাহে অন্তত দু’দিন রুটিনে রাখুন। ১/৪ চামচ হলুদের সঙ্গে দু’চামচ কাঁচা দুধ ও এক চামচ মধু মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাক লাগানোর আগে মুখ-হাত-পা ক্লেনজার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর আলতো হাতে এই প্যাক লাগিয়ে দশ মিনিট পর ধুয়ে নিন। মধুর ময়শ্চারাইজার, দুধে থাকা প্রচুর খনিজ ও ভিটামিন ত্বকের মৃতকোষ ঝরিয়ে ত্বককে কোমল করে তুলবে। দুধের পরিবর্তে দুধের সরও ব্যবহার করতে পারেন।
তাহলে এই শীতে ত্বককে আর অবহেলা কেন! এবার বরং ঘরোয়া ম্যাজিকেই আস্থা রাখুন। হাতের কাছে পাওয়া উপাদানরা তো রইলই!