কারও কাছ থেকে কোনও দামি উপহার লাভ হতে পারে। অকারণ বিবাদ বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্য ... বিশদ
দান তীর্থাদির প্রয়োজন তো নারায়ণে একাগ্রচিত্ত হবার জন্য, যিনি ধ্যানের শক্তিলাভ করেছেন তাঁর তো সব অভিপ্রায় সিদ্ধ হ’য়ে গেছে।
যে নৃশংসা দুরাত্মানঃ পাপাচাররতাস্তথা।
তেঽপি যান্তি পরং স্থানং নারায়ণপরায়ণঃ।।
যারা পরদ্রোহী, দুরাত্মা ও পাপাচাররত তারাও নারায়ণে অত্যাসক্ত হ’লে পরম স্থানে গমন করে। পরদ্রোহী দুষ্টস্বভাব পাপাচাররত এদেরও কি নারায়ণ-পরায়ণ হওয়ার শক্তি থাকে?
তা থাক্বে না কেন? যে কুকার্য্যে রত হয় সে লোকনিন্দা, ভয়, অপমান, এমনকি সমস্ত জগৎকেই গ্রাহ্য করে না, তার চিত্তবল যথেষ্ট, সেই চিত্ত যদি কোনরূপে ভগবানে নিবিষ্ট হয়, তা’হলে অতি সত্বরই শ্রীভগবানে আসক্ত হ’য়ে পড়ে। কারণ তার একাগ্র হবার শক্তি আছে। মোটকথা কোনরূপে একাগ্র হলেই মানুষ কৃতার্থ হয়। নামকীর্ত্তন একাগ্র হবার পরম উপায়। যোগাদি উপায়ে অন্যান্য নিয়মাদি পালন না কর্লে পূর্ণমনোরথ হ’তে পারে না, অধিকন্তু রোগও উপস্থিত হ’য়ে বিঘ্ন উপসৃষ্টি করে। আর এই নামকীর্ত্তনে কোন নিয়ম নাই, কেবল মুখে নাম কর্লে নির্বিঘ্নে সুগমে মূল কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া যায়।
যোগে রোগ হয়?
যোগের প্রধান হল ব্রহ্মচর্য্য, ব্রহ্মচর্য্য রক্ষিত না হ’লে মস্তক বিকৃত হ’য়ে যেতে পারে। সাত্ত্বিক আহার না কর্লে যোগ প্রকাশ হ’য়ে পড়ে। প্রাণায়ামাদি নিয়মিতভাবে গুরুদেবের উপদেশে ব্রহ্মচর্য্য অবলম্বন না ক’রে কর্লে যোগ রোগই এনে দেয়।
যারা নাম করে তাদের কি সাত্ত্বিক আহার, ব্রহ্মচর্য্যের প্রয়োজন হয় না?
যারা নাম অবলম্বন করেন তাঁরা ভগবানের প্রসাদ ভিন্ন আহার করেন না, কাজে কাজেই সাত্ত্বিক আহার আপনা আপনি হ’য়ে যায়। আর অনুক্ষণ নাম কর্তে কর্তে স্ত্রীসঙ্গ কর্বার ইচ্ছাই থাকে না। কাজে কাজেই সাত্ত্বিক আহার বহ্মচর্য্য স্বতঃই হয়।
সাত্ত্বিক আহার করে না ব্রহ্মচর্য্যহীন এমন লোককেও তো নামকীর্ত্তন কর্তে দেখা যায়?
তাদের চিত্ত সাত্ত্বিক আহার ও ব্রহ্মচর্য্যের জন্য লোলুপ থাকে। পূর্ব্বজন্মের দুষ্কৃতির ক্ষয় হলেই দৃঢ়ভাবে সাত্ত্বিক আহার ব্রহ্মচর্য্য গ্রহণ ক’রে থাকে। নামকারী যদি ব্রহ্মচর্য্যহীন না হয় তা’হলে তার উন্মাদ প্রভৃতি রোগ হ’য়ে থাকে। নামকীর্ত্তনই এযুগে সহজ সরল সুগম নির্বিঘ্ন আলোকমালা বিভূষিত প্রহরীরক্ষিত রাজপথ—নামকীর্ত্তনে সব আপনা আপনি হ’তে থাকে।
শ্রীগুরুপ্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘শ্রীওঙ্কারনাথ-রচনাবলী’ (৩য়) থেকে