পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
ধর্ম বলতে আমরা বুঝি জড়ের অতীত কোন বস্তু। দেহের অন্তে আমাদের অস্তিত্ব থাকে কোনো এক প্রকারে। সেই অস্তিত্বকে আমরা যদি বিশ্বাস না করি তাহলে আমাদের ধর্মের প্রয়োজন হয় না। কেন না, দেহের লয়ের সঙ্গে সঙ্গে যদি সব বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে আমাদের সততা-অসততা, ন্যায়-অন্যায় বোধ সব ভিন্ন অর্থে ব্যবহার হবে। যে অর্থে আমরা শব্দগুলিকে প্রয়োগ করি তা করা যাবে না। পাপপুণ্যবোধ তো দূরের কথা, সৎ-অসৎ বুদ্ধিও বিভ্রান্ত হয়ে যাবে যদি এই দেহটিকেই আমরা সর্বস্ব বলে মনে করি। জগতে এরকম লোক বিরল নন, যাঁরা এই দেহকে সর্বস্ব বলে মনে করেন। এঁরা যে শুধু সাধারণ বা অবিবেচক, তা নন, এঁদের ভিতরে দার্শনিকও আছেন। এঁদের দর্শনকে জড়বাদী দর্শন বলা হয়। আমরা ধর্মকে দুটি অর্থেই দেখতে পাই।
আমাদের যে একটি লোকোত্তর সত্তা আছে, তার উল্লেখ সকল ধর্মমতে পাওয়া যায়। মৃত্যুর পরই আমাদের সব অস্তিত্ব শেষ হয়ে যায় না। প্রাচীনকালে এদেশে জড়বাদী দার্শনিক ছিলেন চার্বাক। চার্বাক সম্প্রদায়ের মতে শরীরটা যখন পুড়ে ছাই হয়ে যাবে আর ফিরে আসবে না, তখন শরীর সম্বন্ধে অত চিন্তা করার দরকার কি? শরীরকে আরামে রাখো, তার পুষ্টির জন্য যা প্রয়োজন কর। এই দর্শনেরই ব্যাপক রূপ দেবার জন্য বলা হয়েছে, শুধু তোমার নিজের শরীরকে যত্ন করলেই হবে না, তোমার আশে-পাশে যারা আছে তাদের সঙ্গে সমতলে চলতে হবে। অপরের দিকে দৃষ্টি না দিলে পরস্পরের বিরোধ বাড়বে, পরিণামে অশান্তি আসবে। ফলে তোমার শরীরটাও ভালভাবে রক্ষা করতে পারবে না। জড়বাদীর ভেতরে এই দার্শনিক বিচার আসে এবং এই দৃষ্টিতে দেখে তাঁরা সদসৎ বিচার করেন। সৎ বলতে স্থায়ী অর্থে নয়, জড়বাদীর মতে সৎ অর্থাৎ তোমার ব্যক্তিগত জীবনে অথবা সমষ্টিগত জীবনের পক্ষে ভোগ সংগ্রহের বা ভোগ রক্ষণের পক্ষে যেগুলি উপযোগী সেইগুলি ভাল, এর বিপরীত যা, তা অসৎ অর্থাৎ মন্দ— এই ভালমন্দের দৃষ্টি সেখানে। এর একটা ধারা আছে, এভাবে বিচার করলেও সমাজের ব্যবস্থা হতে পারে।