পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
‘কেনেষিতং পততি প্রেষিতং মনঃ
কেন প্রাণঃ প্রথমঃ প্রৈতি যুক্তঃ।
কেনেষিতাং বাচমিমাং বদন্তি
চক্ষুঃ শ্রোত্রং ক উ দেবো যুনক্তি ’
কে সেই দেবতা, যার ত্রষণায় বা ইচ্ছার প্রেরণায় মন ধেয়ে চলে? কার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ফলে প্রাণের প্রথম অভিসার? কার ইচ্ছার ইঙ্গিতে এই বাগ্বিলাস, কথার ফুলঝুরি ঝরে পড়ে নিঃশব্দ নীলিমায়? চোখ-কানকেই বা কে ঠিকমতো খাটিয়ে রেখেছেন এই দেহযন্ত্রে রূপগ্রহণ ও শব্দগ্রহণের জন্য? খুঁজলে দেখতে পাবে তিনিই চোখের চোখ, কানের কান, প্রাণের প্রাণ, মনের মন। তাঁকে এইভাবে সব থেকে মুক্ত করে, আলাদা করে সবের পিছনে সক্রিয়কে ধরতে বা জানতে পারলেই এই দুনিয়ার উপরে তুমিও উঠে যাবে, হয়ে যাবে অমৃতস্বরূপ।
শ্রোত্রস্য শ্রোত্রং মনসো মনো যৎ
বাচো হ বাচং স উ প্রাণস্য প্রাণঃ।
চক্ষুষশ্চক্ষুরতিমুচ্য ধীরাঃ
প্রেত্যাস্মাল্লোকাদমৃতা ভবন্তি
উপনিষদের এই উদ্ঘোষণে কিন্তু আমাদের এই ইন্দ্রিয়ের রাজ্যকে, প্রত্যক্ষ জগৎকে বাতিল করে দেওয়া হয়নি, উড়িয়ে দেওয়া হয়নি মিথ্যা বলে। জগৎ সত্য, কিন্তু সে নিজের অধিকারে সত্য নয়। তার সত্যতা আপেক্ষিক, নির্ভরশীল তার পিছনে যে পরম সত্য রয়েছেন তার উপর। উপনিষদে তাই তাঁর রহস্য-নাম ‘সত্যস্য সত্যম্’। ইন্দ্রিয়ের দেখা মিথ্যা নয়, কিন্তু উপনিষদ বলছেন, ভুলে যেও না ইন্দ্রিয়ের দেখবার শক্তি নেই নিজের। তার এ জ্ঞান বা চেতনার আলো ধার করা, যা পরের উপর নির্ভরশীল, চেতনা যার নিজস্ব নয়, তার নিজস্ব কোনো সত্তা নেই বলেই তাকে বলি মিথ্যা, ‘তদ্ব্যতিরেকেণ সত্তাকত্বাভাবাৎ’। বেদান্তের এই মিথ্যাত্বকে আমরা মিথ্যাভাবে বুঝে সমস্ত বেদান্তকেই মিথ্যা প্রতিপাদন করে বসে আছি! অথচ এই মিথ্যাত্বকে ঠিকমতো বুঝতে পারলে আমরা যথার্থ সত্যে জেগে উঠতে পারি এবং তারই জন্য বেদান্তে এই মিথ্যাত্বের অবতারণা।