পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
অনেকেই ধর্মকে জীবনের একটি নিভৃত মহলে স্থান দিতে চান। প্রাত্যহিক জীবনে নয়, মনে করেন বৃদ্ধকালের শেষ বেলার অবলম্বন—আর মঠ, মন্দির ও নির্জন গুহাগিরিতে তার বিচরণ ক্ষেত্র। যারা ধর্ম সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞ, তাদেরই এসব ভ্রান্ত ধারণা। যা জীবনকে সুন্দর করে, যা মানুষের আনন্দ-বেদনাকে, নৈরাশ্য ও নিরালম্ব হতাশাকে রমণীয় করে—সামান্যকে দেয় অসামান্যের মহিমা, গৌরব—তাই ধর্ম। ধর্মকে আশ্রয় করলে, হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখবর্জিত এক মানুষ-পাথর হতে হবে, তা নয়। বুদ্ধ, চৈতন্য, শ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবিজয়কৃষ্ণ—সমাজ-সংসার-বিচ্ছিন্ন গুহাবাসী সাধু নন। এঁরা নিখিল বান্ধব। এঁদের পত্নীপ্রেম, প্রিয়জনপ্রীতি, বন্ধু জনবাৎসল্য অনন্য। শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রের জন্য কতো কেঁদেছেন, শ্রীশ্রীবিজয়কৃষ্ণ স্বামী দেবপ্রসাদকে হারিয়ে বলেছিলেন—বন্ধুহীন জীবন অবহ।
এ সংসারে সত্য, ভালোবাসা—এ সবের মূল্য বড় অল্প। মাত্র তিরিশটি টাকার জন্য জুডাস তার প্রভু যীশুকে মৃত্যুর হাতে সঁপে দিয়েছিল। আমি সামান্য মানুষ, অসত্যের খড়্গে বারবার বলি হবো, তাতে আর আশ্চর্য হবার কি আছে। শাপগ্রস্ত রাজা নহুস যখন যুধিষ্ঠিরকে প্রশ্ন করেন—পরমেশ্বর কে? উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেন, সত্যই পরমেশ্বর।
কিন্তু ধর্মার্থীরাও অসত্যকে অবলম্বনে দ্বিধা করেন না। যে অসত্য অবলম্বন করে চলেছে, তার সমর্থকের অভাব হয় না। অধর্মকে সহায়তা করে আমরা ধর্মকে লাভ করতে চাই।
একমাত্র বিদ্যা ভক্তি। অন্তরে ভক্তির উদয় হলে সমস্ত অবিদ্যার নাশ হয়। কাম ক্রোধ লোভ মোহ মাৎসর্য—সমস্ত অবিদ্যা। ভয়, ভাবনা, মৃত্যুচিন্তা— অবিদ্যার কুটিল ছায়া।
মৃত্যুচিন্তা ঈশ্বরের দয়া—মৃত্যুচিন্তার অন্ধকারের ওপর দিকে একটি নিগুঢ় সত্য আছে—যাতে মানুষ ক্ষণসুখের ছলনায় বিভ্রান্ত না হয়ে সত্যের রূপকে চেনে, চিরকালের সুখের পথে চলে। ঈশ্বরচিন্তার আলো তখন সকল দুশ্চিন্তার অন্ধকারকে মুছে। মৃত্যুচিন্তা এলেই পরকালের চিন্তা আসে, কে কালের প্রভু তার চিন্তা আসে। এই মৃত্যুচিন্তার অগ্নিতে তোমার জন্মজন্মান্তরের কর্মরাশি দগ্ধ হবে। এতোদিন ছিলে একজন অক্লান্ত কর্মী—এখন কর্মের সঙ্গে যোগ হবে ভাব ও রসের।