যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
ধর্ম অর্থাৎ যিনি সকল জীবকে ধারণ বা পোষণ করে আছেন তিনিই ধর্ম। কে সকল জীবকে ধারণ বা পোষণ করে আছেন? যদি বলি অন্ন সকল জীবকে ধারণ বা পোষণ করে আছেন, তাও ঠিক নয়। কারণ সকল জীবের অন্ন একপ্রকার নয়। কোন জীব তৃণভোজী, কোন জীব মাংসাশী ইত্যাদি। অতএব পৃথক হেতু অন্ন ধর্ম হতে পারে না। যদি বলি জল সকল জীবকে ধারণ করে আছে, তাও ঠিক নয়। কারণ মৃতদেহেও জল থাকে, অথবা আরও খানিকটা জল মৃতদেহে প্রবেশ করালে যদি উহা জীবিত হত তা হলে জল জীবকে ধারণ করত। তা যখন হয় না তখন জল ধর্ম হতে পারে না। আবার যদি বলি বায়ু সকল জীবকে ধারণ করে আছে, তাও ঠিক নয়। কারণ মৃতদেহেও বায়ু থাকে। যদি বায়ু না থাকত তা হলে বাইরের বায়ুর চাপে উহা পিষ্ট হত। অথবা আরও খানিকটা বাইরের বায়ু মৃতদেহে প্রবেশ করালে যদি উহা জীবিত হত, তাহলে বায়ু ধর্ম হত। তা যখন হয় না তখন বায়ু ধর্ম হতে পারে না। অতএব এমন এক মহান্ বস্তু আছে যা নাকি সকল প্রাণিগণে, চেতন অচেতন ভূত মাত্রেই অবস্থান করে সর্বজীবের ও সর্বভূতের ধারণ বা পোষণ করছেন তিনিই ধর্ম। তিনি সকল ঘটে অর্থাৎ সকল দেহে প্রাণরূপে বিরাজ করছেন এবং তাই তিনিই সকলের একমাত্র উপাস্য দেবতা। ‘প্রাণেন ধার্য্যতে লোকঃ সর্ব্বং প্রাণময়ং জগৎ।’ এই প্রাণ সবকিছু ধারণ করে আছেন এবং সবকিছুই প্রাণময়। অতএব প্রাণই ধর্ম। তিনি হিন্দু নহেন, মুসলমান নহেন, খৃষ্টান নহেন, বৌদ্ধ নহেন, তিনি নর বা নারীও নহেন, তিনি দেহও নহেন। তিনি যখন যাতে থাকেন তখন তিনি তাই, কিন্তু যাতে আছেন তিনি তা নন। হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান, বৌদ্ধ, এগুলি ধর্ম নয়; এগুলি এক একটি সম্প্রদায়। কিন্তু প্রাণরূপী ধর্ম তর্ক এবং সকল সম্প্রদায়ের অতীত। তিনি সকল সম্প্রদায়ে আছেন কিন্তু কোন সম্প্রদায় তাঁতে নেই। যেমন সকল দেহে প্রাণ রয়েছেন কিন্তু সেই প্রাণের প্রতি জীবের লক্ষ্য নেই। অতএব প্রাণে লক্ষ্য না থাকায় জীবের প্রাণে থাকা হল না। সেইরূপ তিনি সকল সম্প্রদায়ভুক্ত হলেও সকল সম্প্রদায় তাঁতে ভুক্ত নয়। সম্প্রদায় বহু হওয়ায় উহা ধর্ম হতে পারে না।